বুধবার জার্মানউইংসের ফ্লাইট ফোরইউ ৯৫২৫ বিমানটি ফ্রান্সের আল্পস পর্বতমালার ওপর বিধ্বস্ত হয় এবং বিমানের ১৫০ জন আরোহীর সবাই মারা যান।
ধারণা করা হচ্ছে, মানসিকভাবে অসুস্থ লুবিৎজ ইচ্ছাকৃতভাবে বিমানটি ধ্বংস করেন।
জার্মানির বিল্ড পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে লুবিৎজের সাবেক প্রেমিকা গত বছরের একটি কথপোকথন তুলে ধরে বলেন, “সে বলেছিল, একদিন আমি এমন কিছু করব, যার ফলে সব নিয়ম পাল্টে যাবে, সবাই আমার নাম জানবে এবং আমাকে মনে রাখবে।”
লুবিৎজের সাবেক প্রেমিকা একজন বিমানবালা, গত বছর প্রায় পাঁচ মাস তারা একসঙ্গে কাজ করেছেন।
বিমান বিধ্বস্ত হওয়া ও এর পেছনে লুবিৎজের হাত থাকার খবর শুনে তিনি ‘খুবই দুঃখ’ পেয়েছেন বলে জানান ২৬ বছর বয়সী ওই নারী।
বিল্ড ওই নারীর পরিচয় প্রকাশ করেনি। তাকে ‘মারিয়া ডব্লিউ’ ছদ্মনামে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়।
মারিয়া বলেন, “লুফথানসায় একজন ক্যাপ্টেন এবং একজন দীর্ঘ-পথের পাইলট হিসেবে কাজ করার স্বপ্ন ছিল লুবিৎজের। কিন্তু সে বুঝতে পেরেছিল নিজের স্বাস্থ্য সমস্যার কারণে তার এই স্বপ্ন কখনোই বাস্তব হবে না। যদি সে ইচ্ছাকৃতভাবে বিমানটি বিধ্বস্ত করে থাকে, তবে তার পেছনে এটাই কারণ।”
বিমানের ভয়েস রেকর্ডার থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, লুবিৎজ তার ক্যাপ্টেনকে ককপিটের বাইরে আটকে রেখে বিমানটি ধ্বংস করেন।
জার্মানির আইনজীবীরা জানান, ডুসেলডর্ফে লুবিৎজের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে তদন্তকারীরা কিছু ছেঁড়া ডাক্তারি রিপোর্ট পেয়েছেন। এর মধ্যে একটি ছিল বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার দিনের।
মারিয়া বিল্ডকে বলেন, “তার একটা সমস্যা রয়েছে এবং সেটা দিন দিন আমার কাছে স্পষ্ট হয়ে উঠছিল। এই কারণেই আমরা আলাদা হয়ে যাই।
“সে প্রায়ই দুঃস্বপ্ন দেখত এবং জেগে উঠে ‘আমরা নিচে পড়ে যাচ্ছি’ বলে চিৎকার করত।”
ডাক্তারি রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০০৯ সালে লুবিৎজের মারাত্মক মানসিক সমস্যা ধরা পড়ে এবং এ কারণে কয়েকবার তার প্রশিক্ষণ ক্লাস বাধাগ্রস্ত হয়েছে।
ফনিস্কের লুফথানসা ফ্লাইট স্কুল লুবিৎজকে বিমান চালনার জন্য অনুপযুক্ত ঘোষণা করেছিল বলেও জানিয়েছে বিল্ড।
তবে এটিও ঠিক যে, বিমান চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় শারীরিক ও মানসিক পরীক্ষায় উৎরে গিয়েছিলেন লুবিৎজ। এসব পরীক্ষায় সফল হওয়ার পরই তাকে বিমান চালনার উপযুক্ত ঘোষণা করা হয়।