বিমান হামলা বন্ধের আহ্বান ইয়েমেনের

ইয়েমেনের হাউথি বিদ্রোহীদের ওপর সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন জোটের বিমান হামলা যত দ্রুত সম্ভব বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিয়াদ ইয়াসিন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 March 2015, 02:31 PM
Updated : 27 March 2015, 02:31 PM

বিবিসি’কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ইয়াসিন বলেন, বিদ্রোহীদের দমন করতে ‘সংক্ষিপ্ত’ এবং ‘কার্যকর’ অভিযানের প্রয়োজন ছিল।

কিন্তু“ইয়েমেনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট জড়িয়ে পড়াতে কেউই খুশী নয়।”

“আমার মনে হয় যদি আগামী কয়েক দিন বা কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তারা  অভিযান সমাপ্ত করতে পারে তবে তাদের সেটাই করা উচিত। তাদের কাছে আমরা প্রকৃত অর্থে একটি সংক্ষিপ্ত এবং কার্যকর অভিযানের অনুরোধ করেছিলাম।”

বুধবার রাত থেকে এ অভিযান শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবারও রাতভর অভিযান চলেছে। যুক্তরাষ্ট্র এ অভিযানকে সমর্থন দিয়েছে। শুক্রবারও হাউথিদের বেশ কয়েকটি অবস্থানের ওপর হামলা চালানো হয়েছে।

এই অভিযানকে ‘অন্যায্য আগ্রাসন’ বলে বর্ণনা করে পিছু না হটার প্রতিজ্ঞার কথা জানিয়েছেন হাউথি নেতা আব্দুল মালিক আল-হাউথি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়াসিনের অভিযোগ, ইরান হাউথিদের মদদ দিচ্ছে।

ইরান এ অভিযানের নিন্দা জানিয়ে বলেছে, “এর মাধ্যমে ইয়েমেনকে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে এবং দেশটির অখণ্ডতা বিনষ্ট করার চেষ্টা চলছে।”

ওদিকে, নিজেদের অভিযানের ব্যাখ্যায় সৌদি আরব কর্তৃপক্ষ জানায়, “ইয়েমেনের বৈধ সরকারের পতন রোধে যা করতে হয় তার সবই করা হবে।”

জানুয়ারিতে হাউথি বিদ্রোহীরা ইয়েমেনের রাজধানী সানা দখল করে এবং বেশ কিছুদিন প্রেসিডেন্ট আব্দ-রাব্বু মনসুর হাদিকে গৃহবন্দি করে রাখে।

গতমাসে সানা থেকে পালিয়ে দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর এডেনে আশ্রয় নেন হাদি।

বুধবার  হাউথি বিদ্রোহী ও তাদের মিত্রবাহিনীরা এডেনের নিকটবর্তী একটি বিমান ঘাঁটির দখল নেয় এবং এডেনের উদ্দেশ্যে অগ্রসর হয়। ধারণা করা হচ্ছে,  ওই দিনই একটি নৌকায় করে এডেন ত্যাগ করেন হাদি।

এ সপ্তাহের শেষে আরব লিগের নেতাদের মিশরে এক সম্মেলনে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, হাদিও ওই সম্মেলনে অংশ নেবেন।

যদি বিমান হামলার মাধ্যমে হাউথিদের আগ্রাসন বন্ধ করে তাদের আলোচানায় বসতে বাধ্য করা না যায় তবে তাদের বিরুদ্ধে স্থল অভিযান শুরু করা হবে কি না সে ব্যাপারে ওই সম্মেলনে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন ইয়াসিন।

সৌদি ভিত্তিক আল-অ্যারাবিয়া টিভি জানায়, বিমান হামলায় সৌদি আরব ছাড়াও সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, কুয়েত, কাতার, জর্ডান, মরক্কো, সুদান অংশ নিচ্ছে। এদের মধ্যে মিশর, জর্ডান ও সুদান স্থল অভিযানে অংশ নিতেও প্রস্তুত রয়েছে।

পাকিস্তানও সেনা পাঠাতে প্রস্তুত বলে টেলিভিশনের খবরে বলা হয়েছিল। কিন্তু শুক্রবার পাকিস্তান সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা এখনো এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়নি।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, বিমান হামলায় এখন পর্যন্ত ৩৯ জন বেসামরিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছে, যাদের মধ্যে অন্তত ছয় জন ১০ বছরের কম বয়সী শিশু।

জনগণ রাজধানী ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে। অধিকাংশ দোকানপাট ও অফিস বন্ধ করে রাখা হয়েছে।  পেট্রোল স্টেশনগুলোতে বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে।