আল্পসে গেছেন ফ্রান্স-জার্মানি-স্পেনের নেতারা

ফ্রান্সের আল্পস পর্বতমালায় জার্মান এয়ারলাইনসের বিমান বিধ্বস্তস্থলে গেছেন ফ্রান্স, জার্মানি ও স্পেনের নেতারা।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 March 2015, 04:49 PM
Updated : 25 March 2015, 04:50 PM

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাদ, জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মেরকেল ও স্পেনের প্রধানমন্ত্রী ম্যারিয়ানো রাজয় ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার অভিযান সম্পর্কে খোঁজ খবর নেন এবং উদ্ধারকর্মীদের ধন্যবাদ জানান।

দুর্ঘটনার পর স্পেনে তিনদিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করা হয়। ওদিকে, নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে বুধবার দিনশেষে আল্পসে একটি অনুষ্ঠান পালনের সিদ্ধান্ত নেন তিন দেশের নেতারা।

নিহতদের স্বজনরাও বুধবার দুর্ঘটনাস্থল পরির্দর্শনের আশায় ছিল। বিমানটি দুর্গম স্থানে বিধ্বস্ত হওয়ায় প্রিয়জনদের মৃতদেহ খুব শিগগিরই পাওয়া আশা নেই তাদের।

হেলিকপ্টার থেকে তোলা ফুটেজে বিমানের ধ্বংসাবশেষ পর্বতের ঢালে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকতে দেখা গেছে। ‘সে এক ভয়াবহ দৃশ্য’ দুর্ঘটনাস্থল পরির্দশনের পর বলেছেন, জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

বিমানটির বিধ্বস্তের কারণ তদন্তের জন্য বুধবার বিধ্বস্ত বিমানের কয়েকটি খণ্ডাংশ সংগ্রহ করেছে ফরাসি তদন্তকারীরা।  তদন্তকারীরা এখনো দ্বিতীয় ব্ল্যাকবক্সটি খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন।

মঙ্গলবার জার্মানির রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থা লুফথানসার মালিকানাধীন সাশ্রয়ী বিমান পরিবহন নেটওয়ার্ক জার্মানউইংসের এয়ারবাস এ৩২০ বিধ্বস্ত হয়। বিমানটি প্রায় ৩৮ হাজার ফুট উঁচু থেকে আট মিনিট ধরে নিচ পড়ে এবং এক পর্যায়ে বিধ্বস্ত হয়।

এক সংবাদ সম্মেলনে কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক টমাস উয়িঙ্কেলমান বলেন, “বিমানটি ফরাসি রাডারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। ফরাসি এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল জানিয়েছে, মঙ্গলবার সকাল ১০টা ৫৩ মিনিটে প্রায় ৬০০০ ফুট উচ্চতা থেকে বিমানটি শেষবারের মতো যোগাযোগ করেছিল। তারপর বিমানটি বিধ্বস্ত হয়।”

এয়ারবাস কোম্পানির এ৩২০ বিমানটি আল্পসের ডিগনে ও বার্সিলোনেত্তি এলাকার মাঝামাঝি বিধ্বস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন ফরাসি কর্মকর্তারা। বিমানের ১৫০ জন আরোহীর আর কেউ বেঁচে নেই বলেও জানান তারা।

সাগর সমতল থেকে ২০০০ মিটার (৬০০০ ফুট) উচ্চতায় বিমানটির ভয়েস রেকর্ডার খুঁজে পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে ফরাসি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়।

ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বের্নার্দ কাজেনেউভে বলেন, ‘ব্ল্যাক বক্সটি’ কিছুটা দুমড়ে-মুচড়ে গেছে। তবে ওটা থেকে তথ্য সংগ্রহ করা যাবে।

উয়িঙ্কেলমান বলেন, বিমানের ১৪৪ জন যাত্রীর মধ্যে ৭২ জন জার্মানির নাগরিক এবং ৩৫ জন স্পেনের নাগরিক ছিলেন। যদিও যাত্রীদের তালিকা বার বার পরিবর্তন করা হচ্ছে।

যাত্রীদের মধ্যে জার্মানির একটি স্কুলের ১৬ জন শিক্ষার্থী ছিল। তারা স্পেন সফর শেষে ফিরছিল।

যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রসচিব ফিলিপ হ্যামন্ড নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, যাত্রীদের মধ্যে যুক্তরাজ্যের তিনজন নাগরিক ছিলেন। বাকি যাত্রীরা অস্ট্রেলিয়া, আর্জেন্টিনা, ইরান, ভেনিজুয়েলা, যুক্তরাষ্ট্র, নেদারল্যান্ডস, কলম্বিয়া, মেক্সিকো, জাপান, ডেনমার্ক ও ইসরায়েলের নাগরিক ছিলেন।

উদ্ধার অভিযানের সঙ্গে জড়িত এক ব্যক্তি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, যে ব্ল্যাক বক্সটি উদ্ধার করা হয়েছে তা বিমানের ককপিট ভয়েস রেকর্ডার। বিমানের অপর ব্ল্যাক বক্স ফ্লাইট ডাটা রেকর্ডারটির পাওয়া গেলে সেটিতে থাকা তথ্য বিমান দুর্ঘটনার কারণ উদঘাটনে সহায়ক হবে।

এদিকে দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে প্রাথমিক পর্যালোচনার পর যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, বিমানটি সন্ত্রাসী হামলার কারণে বিধ্বস্ত হয়নি বলেই তাদের ধারণা।

অপরদিকে লুফথানসা জানিয়েছ, শোচনীয় ঘটনাটি একটি দুর্ঘটনা বিবেচনা ধরেই কাজ করছেন তারা, তবে অন্য সম্ভাবনাও মাথায় রাখছেন।