লি’র মৃত্যুতে বিশ্ব নেতাদের শোক

আধুনিক সিঙ্গাপুরের প্রতিষ্ঠাতা লি কুয়ান ইউয়ের ‍মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিশ্ব নেতারা।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 March 2015, 03:08 PM
Updated : 23 March 2015, 03:08 PM

জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি-মুন এক বিবৃতিতে বলেন, “তিনি এশিয়ার একজন ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব। তার কঠোর নেতৃত্ব ও দক্ষ কূটনীতি বিশ্বব্যাপী সমাদৃত ছিল।”

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা সিঙ্গাপুরের প্রয়াত এই নেতাকে অভিহিত করেছেন ‘ইতিহাসের একজন সত্যিকারের মহাজন’ হিসাবে, যার শাসন ও অর্থনীতি ভাবনার প্রশংসা বিশ্ব নেতৃবৃন্দ করে আসছে বহু বছর ধরে।

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিংপিন বলেন, “একজন দক্ষ রাজনীতিবীদ ও জনপ্রতিনিধি হিসেবে লি কুয়ান ইউ সারা বিশ্বে সম্মানিত। তিনি চীনের পুরনো মিত্রদের একজন।”

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন লি কে বিশ্ব রাজনীতির ‘পথপ্রদর্শকদের’ একজন বলে বর্ণনা  করেছেন।

এক বিবৃতিতে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন বলেন, “আধুনিক বিশ্বের অন্যতম প্রধান রাজনীতিবীদ ও নেতা হিসেবে ইতিহাসে তার স্থান নিশ্চিত হয়ে গেছে।”

“তিনি সবসময়ই যুক্তরাজ্যের বন্ধু ছিলেন। এমনকি দুঃসময়েও তিনি যুক্তরাজ্যের পাশে থেকেছেন। যুক্তরাজ্যের অনেক প্রধানমন্ত্রীই তার দূরদর্শী পরামর্শে লাভবান হয়েছেন, যাদের মধ্যেই আমি নিজে একজন।”

সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লি সম্পর্কে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী লেখেন, “তিনি একজন দূরদর্শী রাজনীতিবীদ এবং নেতাদের মধ্যে সেরা। লি কুয়ান ইউয়ের জীবন সকলের জন্ই অমূল্য শিক্ষা। তার মৃত্যুর খবর খুবই দুঃখজনক।”

এক শোক বার্তায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বলেছেন, লি কুয়ান সিঙ্গাপুরকে যে অবস্থায় এনেছেন, তা বাংলাদেশের জন্যও প্রেরণাদায়ী।

অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী টনি অ্যাবট বলেন, “এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চল লি কুয়ান ইউয়ের কাছ থেকে অনেক কিছু পেয়েছে। আমাদের সময়ে খুবই গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের মধ্যে একজন তিনি।”

‘হিউম্যান রাইটস ওয়াচ’ এর এশিয়া অঞ্চলের উপপরিচালক ফিল রবার্টসন বলেন, “যাবতীয় সংশয়কে পেছনে ফেলে সিঙ্গাপুরের অর্থনৈতিক উন্নয়নে শক্তিশালী ভূমিকা পালন করেছেন লি। যদিও মানবাধিকারের চরম মূল্যের বিনিময়ে এই উন্নয়ন হয়েছে। বর্তমান সিঙ্গাপুরে মত প্রকাশের সীমাবদ্ধতা, নিয়ন্ত্রিত আচরণ ও বহুদলীয় গণতন্ত্রের চর্চাকে বাধাগ্রস্ত করার দায়ও নিতে হবে লি’কে। এখন সিঙ্গাপুরকে এসব সীমাবদ্ধতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।”

২৯ মার্চ রোববার দুপুরে এনইউএস কালচারাল সেন্টারে লি’র রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষকৃত্য করার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী লি শিয়েং লুং। তার আগ পর্যন্ত চলবে এক সপ্তাহব্যাপী শোক পালন।

সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য লি’র মৃতদেহ বুধবার থেকে শনিবার পর্যন্ত দেশটির পার্লামেন্টে রাখা হবে।

সোমবার বিকালে ইস্তানায় লি’র বাসভবন প্রাঙ্গনে একটি শোকবই খোলা হয়েছে। জনগণ ওই শোকবইয়ে নিজেদের অনুভূতি লিপিবদ্ধ করতে শুরু করেছেন। বিদেশে সিঙ্গাপুরের দূতাবাসগুলোতেও শোকবই খোলা হয়েছে।