দ. কোরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের ওপর হামলা

দক্ষিণ কোরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্ক লিপার্ট ছুরিকাঘাতে আহত হয়েছেন। তিনি আশঙ্কামুক্ত বলে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

>>রয়টার্স
Published : 5 March 2015, 02:47 AM
Updated : 5 March 2015, 02:47 AM

দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলে বৃহস্পতিবার সকালে এক অনুষ্ঠানে তার ওপর হামলা করেন এক ব্যক্তি, যিনি হামলার সময় দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সখ্যে আপত্তি জানিয়ে চিৎকার করেন।

হামলার পর হাসপাতালে নেওয়ার পথে ৪২ বছর বয়সী লিপার্টের মুখের একপাশের জখম থেকে রক্ত ঝরতে দেখা গেছে।

হামলার নিন্দা জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যারি হার্ফ বলেছেন, “আমরা তীব্রভাবে এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানাই।”

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা খবর পেয়ে লিপার্টকে ফোন করে দ্রুত তার সুস্থতা কামনা করেছেন বলে হোয়াইট হাউজের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

হামলাকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। কিম কি-জং নামের ৫৫ বছর বয়সী এই ব্যক্তি একটি ছোট ফল কাটার ছুরি নিয়ে হামলা চালান বলে প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানিয়েছে।

এর আগে ২০১০ সালে সিউলে জাপানি রাষ্ট্রদূতের ওপরও একবার ঢিল ছুড়ে তিনি হামলার চেষ্টা চালিয়েছিলেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।

কোরীয় পোশাক পরিহিত কিম হামলার আগে চিৎকার করে দক্ষিণ ও উত্তর কোরিয়ার পুনরেকত্রীকরণের কথা বলেন। চলতি সপ্তাহে শুরু হওয়া যুক্তরাষ্ট্র-দক্ষিণ কোরিয়ার যৌথ সামরিক মহড়ার দিকে ইঙ্গিত করে ‘যুদ্ধ মহড়া’রও বিরোধিতা করে চিৎকার করেন তিনি।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী গবেষণা সংস্থা আরিরাং ইনস্টিটিউটের মাইকেল ল্যামব্রাউ বলেন, “বাদামি ও তামাটে রঙের কোরিয়ার ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে এসেছিলেন ওই ব্যক্তি। তিনি চেঁচিয়ে কিছু বলে রাষ্ট্রদূতের কাছে গিয়ে তার মুখে কোপ দেন।”

দুই কোরিয়া পুনরেকত্রীকরণ নিয়ে কর্মরত গ্রুপ ‘কোরিয়া কাউন্সিল ফর রিকনসিলিয়েশন অ্যান্ড কোঅপারেশন’ আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিতে সকালে সিউলের সেজং হলে যান রাষ্ট্রদূত লিপার্ট। সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে তার ওপর আক্রমণ চালান কিম, যিনি অনুষ্ঠান আয়োজক গ্রুপের সদস্য বলে পুলিশ জানিয়েছে।

কোরীয় উপত্যকা ও জাপানের তাকেশিমার মধ্যবর্তী দোকদো নামের দ্বীপপুঞ্জের মালিকানা নিয়ে তিনি একাই জাপানবিরোধী বিক্ষোভ করেছেন।

“রাষ্ট্রদূত চেয়ারে বসেই তাকে প্রতিরোধের চেষ্টা করেন। তার মুখের ডানপাশে সাত ইঞ্চিজুড়ে গভীর ক্ষত হয়েছে,” বলেন ল্যামব্রাউ।

তিনি বলেন, ওই ব্যক্তিকে যখন আটকানো হচ্ছিল তখন তিনি চেঁচিয়ে কোরিয়ার স্বাধীনতার কথা বলছিলেন।

“তার কথা শুনে মনে হয়েছে, তিনি আমেরিকাবিরোধী, সাম্রাজ্যবাদবিরোধী।”

গত নভেম্বরে দক্ষিণ কোরিয়ায় রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব নেন লিপার্ট। সম্প্রতি সেখানেই তাদের একটি ছেলে হয়েছে। ছেলের নামের মাঝের অংশটি কোরীয় রেখেছেন তারা।

প্রতিবছরই যুক্তরাষ্ট্র-দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক মহড়ার সময় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া আসে উত্তর কোরিয়া থেকে। এই মহড়াকে যুদ্ধের প্রস্তুতি হিসেবে দেখে কয়েক দশক ধরে মার্কিন সমর্থনপুষ্ট সিউলের সঙ্গে বিরোধে থাকা পিয়ংইয়ং।

</div>  </p>