মেক্সিকোর খুন হওয়া শিক্ষার্থীরা ‘ভুলের শিকার’

চার মাস আগে নিখোঁজ মেক্সিকোর ৪৩ শিক্ষার্থী একটি মাদকচক্রের নির্দেশে খুন হয়েছিলেন। এই শিক্ষার্থীদের ভুল করে প্রতিদ্বন্দ্বী অপরাধী দলের সদস্য বলে মনে করেছিলেন তারা।

>>রয়টার্স
Published : 28 Jan 2015, 09:18 AM
Updated : 28 Jan 2015, 09:18 AM

অবশেষে প্রশিক্ষণার্থী ওই শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে মঙ্গলবার এই তথ্য জানিয়েছে মেক্সিকো সরকার।

২৬ সেপ্টেম্বর রাতে মেক্সিকোর দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলীয় শহর ইগুয়ালা থেকে ওই ৪৩ জন নিখোঁজ হন।

এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় মেক্সিকোজুড়ে ব্যাপক প্রতিবাদ বিক্ষোভ দেখা দেয় এবং ঘটনাটি দেশটির নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক নিন্দারও কারণ হয়।

এতে ক্ষমতাসীন এনরিক পিনা নিয়েতো সরকার বিব্রতকর পরিস্থির মুখে পড়েন এবং তার প্রশাসনও গভীর সঙ্কটের মধ্যে পড়ে যায়।

এখন পর্যন্ত সরকার একটি কথাই বলে যাচ্ছে, সেটি হল ওই রাতে ইগুয়ালায় দুর্নীতিপরায়ণ পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে ওই শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের পর শিক্ষার্থীদের স্থানীয় মাদক অপরাধী চক্র গুয়েররেরোস ইউনিদোস এর হাতে তুলে দেয় পুলিশ।

দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল জেসাস মুরিল্লো বলেছেন, “শিক্ষার্থীরা প্রাণ হারিয়েছেন এতে কোনো সন্দেহ নেই, তাদের লাশ পুড়িয়ে ফেলে রিও সান জুয়ান নদীতে ফেলে দেয়া হয়েছে।”

নদীটি ইগুয়ালার পাশের শহর কোকুলা’র পাশ দিয়ে বয়ে গেছে।

লাশগুলো এমনভাবে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে যে তাদের শনাক্ত করা দুষ্কর হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন মুরিল্লো। ডিএনএ পরীক্ষার পর মাত্র একজন নিখোঁজ শিক্ষার্থীর পরিচয় শনাক্ত করা গেছে।

প্রধান সন্দেহভাজন হিসেবে ইগুয়ালার মেয়র ও তার স্ত্রী’কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সংগঠিত অপরাধীচক্রের সঙ্গে মেক্সিকোর রাজনীতির ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ফাঁস হয়ে পড়া এই মামলাটি ইতোমধ্যে কুখ্যাতি অর্জন করেছে।

মেক্সিকোর অধিকাংশ এলাকাতেই সংগঠিত মাদক অপরাধীচক্রের সঙ্গে রাজনীতির ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ আছে বলে মনে করা হয়।

অ্যাটর্নি জেনারেলের দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, গুয়েররেরোস ইউনিদোস’র গ্রেপ্তার সদস্য ফিলিপে রদ্রিগুয়েজ স্বীকার করেছেন ওই ৪৩ শিক্ষার্থীকে খুন করার জন্য তাদের এক বস আদেশ দিয়েছিলেন।

ওই শিক্ষার্থীরা ইগুয়ালার একটি বামপন্থি শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের শিক্ষার্থী ছিলেন।

অ্যাটর্নি দপ্তরের অপরাধ তদন্ত সংস্থার প্রধান থমাস জেরন বলেছেন, “অপরাধীরা ওই শিক্ষার্থীদের ওই এলাকার প্রতিদ্বন্দ্বী অপরাধী দলের সদস্য হিসেবে শনাক্ত করেছিল।”

সরকারি এই ভাষ্য মেনে না নিয়ে সরকার ভালোভাবে ঘটনাটির তদন্ত না করেই মামলাটি চাপা দিতে চাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ওই নিখোঁজ শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা।