রোববার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সম্মানে আয়োজিত নৈশভোজেও নিজস্ব শিষ্টাচার, সংস্কৃতি আর খাবারে সেই বাঙালিয়ানার প্রমাণ রাখলেন তিনি।
দিল্লির রাইসিনা হিলে চার হাজার একর জমির ওপর মুঘল বাগানে নির্মিত ‘রাষ্ট্রপতি ভবন’ আয়তনের দিক দিয়ে বিশ্বে রাষ্ট্রপ্রধানদের বাসভবনগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম। সেখানেই নৈশভোজে কবিগুরুর সংগীতের মূর্চ্ছনার সঙ্গে সর্ষে দেওয়া মাছ আর নলেন গুঁড়ের সন্দেশে মুগ্ধ হলেন হোয়াইট হাউজের অধিপতি।
পুরো আয়োজনেই দুই নেতার অন্তরঙ্গতা ছিল হৃদ্যতাপূর্ণ আর উষ্ণতায় ঘেরা।
মনমোহন সিং সরকারের জ্যেষ্ঠ মন্ত্রী হিসাবে ২০১০ সালে যুক্তরাষ্ট্র সফরে গিয়ে উষ্ণ অভ্যর্থনা পাওয়ার কথা ওবামার সামনেই স্মরণ করেন প্রণব।
সেই অভিজ্ঞতাকে ‘অসাধারণ’ অভিহিত করে ভারতের প্রথম বাঙালি রাষ্ট্রপতি বলেন, “এবার নিজে অভ্যর্থনাকারী হতে পেরে আমি দ্বিগুণ আনন্দিত।”
বেজে ওঠে বিশ্বকবির সেই বিখ্যাত গানের সুর- ‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চলো রে’।
রাষ্ট্রপতি ভবনের পাচকরা খাবারের টেবিলে রোগান জোশ আর চিকেন মালাই টিক্কার মতো বিখ্যাত কাশ্মিরি ও মোগলাই পদ রাখলেও বাঙালি খাবারের প্রতি ভালোবাসার কথাই বারবার প্রণবের মুখে উচ্চারিত হয়েছে।
খাওয়ার টেবিলে অন্তত দুইবার সর্ষে দিয়ে রান্না করা মাছ চেখে দেখতে ওবামাকে উৎসাহ দেন প্রণব। ভারতের রাষ্ট্রপতির অনুরোধে বিখ্যাত ‘নলেন গুঁড়ের সন্দেশের’ স্বাদও নিতে হয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে।
দুপুরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দেওয়া মধ্যাহ্নভোজে ছিল গুজরাটি খাবার; রাতে রাষ্ট্রপতি ভবনে বাঙালি খাবারে শেষ। ওবামার মুখে তাই বাঙালি খাবারের স্বাদ অনেকদিন লেগে থাকাই স্বাভাবিক।
প্রধান অতিথি হিসেবে ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে রোববার স্ত্রী মিশেলকে নিয়ে ভারতে পৌঁছান বারাক ওবামা। ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো প্রেসিডেন্টের প্রধান অতিথি হওয়া এবারই প্রথম।