বিশ্বচিত্র: ফিরে দেখা ২০১৪

বিশ্ব রাজনীতি, অর্থনীতি, খেলাধূলা থেকে শুরু করে শিল্প, সাহিত্য, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, বিনোদন জগতের অনেক প্রাপ্তি ও হারানোর বছর ছিলো ২০১৪। তবে সবকিছু ছাপিয়ে এ বছরটি ছিল মূলত রাজনৈতিক ঘটনাবহুল।

নিউজ ডেস্ক>>বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Dec 2014, 10:59 AM
Updated : 27 Dec 2014, 11:04 AM
ইউক্রেইন সমস্যা

বছরের শুরুর দিকেই ইউক্রেইনের রাজনৈতিক সমস্যা দেখা দেয়। বছরব্যাপী ইউক্রেইন সমস্যা নিয়ে উত্তপ্ত ছিল বিশ্বের রাজনৈতিক অঙ্গন। পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং বিপরীতে রাশিয়ার মধ্যে দেখা দেয় প্রবল বিরোধ। ২২ ফেব্রুয়ারি ব্যাপক গণবিক্ষোভ ও প্রায় শতাধিক মানুষ নিহত হওয়ার পর ইউক্রেইনের পার্লামেন্ট প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানুকোভিচকে অপসারণের পক্ষে ভোট দেয়। অলেকসান্দার তুর্চিনোভ নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন। ২৬ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেইনের রুশপন্থী অস্থিরতার সূচনা। ক্রিমিয়াকে রুশ ফেডারেশনের অন্তর্ভুক্ত করার রুশ তৎপরতা শুরু। এরই মধ্যে ইউক্রেইনের দোনেৎস্ক ও লুহানস্কে রুশপন্থী বিদ্রোহ শুরু হয়। এর ধারাবহিকতায় ১৬ মার্চ ক্রিমিয়ায় গণভোট, রায় অনুযায়ী ইউক্রেইনের এই এলাকাটির রুশ ফেডারেশনে যোগ দেয়। ২১ মার্চ রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের স্বাক্ষরের মাধ্যমে ক্রিমিয়াকে আনুষ্ঠানিকভাবে রুশ ফেডারেশনের অংশ ঘোষণা করা হয়। ২৪ মার্চ ক্রিমিয়াকে নিজের অংশ ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় রাশিয়াকে জি৮ থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার।

ভারতের নির্বাচন

ভারতের লোকসভা নির্বাচন ছিল এ বছরের অন্যতম আলোচিত ঘটনা। ৭ এপ্রিল থেকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় নির্বাচনী যজ্ঞ শুরু হয় দেশটিতে। ৯ পর্বে সমাপ্ত এ নির্বাচনে ভারতীয় পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভার ৫৪৩ আসনে প্রতিনিধি নির্বাচনে ভোট দেয় ৮১ কোটি ৪৫ লাখ ভোটার। নয় লাখ ৩০ হাজার কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ করা হয়। ৫০০টির বেশি রাজনৈতিক দলের প্রায় ১৫ হাজার প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নেন। ইভিএম-এ পদ্ধতিতে গ্রহণ করা ভোটে নয় লাখ ত্রিশ হাজার ভোটিং মেশিন ব্যবহার করা হয়। ১২ মে শেষ পর্বের ভোট গ্রহণের মাধ্যমে নির্বাচন শেষ হয়। ১৬ মে ২৮টি প্রদেশের সবগুলো আসনের ফল একযোগে প্রকাশ করা হয়। জাতীয় গণতান্ত্রিক জোটের (এনডিএ) অন্তর্গত ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ২৮২টি আসনে জয়ী হয়ে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। এনডিএ জোট ৩৩৯টি আসনে জয়ী হয়। অন্যদিকে কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইউপিএ জোট মাত্র ৬০টি আসনে জয়ী হয়। আর অন্যান্য দলগুলো ১৫২ আসনে জয়ী হয়। ইতিহাস সৃষ্টি করে বিজেপি’র প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী গুজরাটের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভারতের চতুর্দশ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়ে সরকার গঠন করেন।

বোকো হারামের জঙ্গিপনা

বছরের প্রথমভাগে নাইজেরিয়ার ইসলামপন্থি জঙ্গি গোষ্ঠী বোক হারাম দেশটির উত্তরাঞ্চল থেকে ২৭৬ জন হাইস্কুল ছাত্রীকে অপহরণ করে। দিনটি ছিল ১৪ এপ্রিল। এরপর বছরজুড়েই বিভিন্ন হামলা এবং এই অপহরণের ঘটনার বিভিন্ন সংবাদ পেতে থাকে বিশ্ববাসী। সংগঠনটির জঙ্গি তৎপরতার আরও একটি নজির স্থাপিত হয় ৫ মে। এইদিন নাইজেরিয়ার গাম্বোরু নগলা এলাকায় বোকো হারাম জঙ্গিদের হামলায় একরাতে প্রায় ৩০০ জন নিহত হন। একই মাসের ২০ তারিখে নাইজেরিয়ার জোশ’এ সন্ত্রাসীদের পরিকল্পিত বোমা বিস্ফোরণে ১১৮ জন নিহত হন।

থাইল্যান্ডে আবার সামরিক শাসন

সাম্প্রতিক সময়ে রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্যদিয়ে থাইল্যান্ডে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হলেও তা দীর্ঘমেয়াদ পায়নি। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই সরকারবিরোধী আন্দোলন শুরু হয়। আর এরই ধারাবাহিকতায় গণতান্ত্রিক সরকার তত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে। কিন্তু তাও টেকেনি। অবশেষে ২২ মে নিওয়াতথামরং বোনসংপাইসানের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে উৎখাত করে রাজকীয় সেনাবাহিনীর থাইল্যান্ডের ক্ষমতা দখল করে।

ইসলামিক স্টেটের উত্থান

বছরের মাঝামাঝি সময়ে আত্মপ্রকাশ করে সুন্নি ইসলামি জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট ইন ইরাক এন্ড লেভান্ত। পরবর্তী সময়ে এটি ইসলামিক স্টেট সংক্ষেপে আইএস নাম ধারণ করে। ৫ জুন আইএস ইরাকের উত্তরাঞ্চল থেকে রাজধানীয় বাগদাদ অভিমুখী অভিযান শুরু করে। তাদের উদ্দেশ্যে বাগদাদ দখল করে ইরাকের শিয়া প্রধানমন্ত্রী নুরি আল মালিকি’র শাসনে অবসান ঘটানো। পরবর্তী সময়ে সংগঠনটি ইরাক ও সিরিয়ার বিশাল অংশ দখল করে ইসলামি খিলাফত বা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেয়। ৮ অগাস্ট এই জঙ্গি গোষ্ঠীটির অগ্রযাত্রা রুখতে ইরাকে গোষ্ঠীটির বিভিন্ন অবস্থান লক্ষ করে যুক্তরাষ্ট্র বিমান হামলা শুরু করে। ২২ সেপ্টেম্বর সিরিয়ায় এই গোষ্ঠীটির অবস্থান লক্ষ করে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে সহযোগী আরব রাষ্ট্রগুলো বিমান হামলা শুরু করে। গণহত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতন প্রভৃতি মানবতার বিরুদ্ধে জঘণ্য অপরাধের অভিযোগে গোষ্ঠীটি ইতোমধ্যে ব্যাপক কুখ্যাতি কুড়িয়েছে।

ইসরায়েলের দখলদারিত্ব

বছরের মাঝামাঝি সময়ে আবারও আলোচনার শীর্ষে চলে আসে ইসরায়েল কর্তৃক ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ড দখলের ঘটনা। জুনে তিন ইসরায়েলি কিশোরকে অপহরণ ও হত্যা এবং জুলাইয়ে এক ফিলিস্তিনি কিশোরের হত্যার জের ধরে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ড নিয়ন্ত্রণকারী হামাসের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। ৮ জুলাই থেকে ২৬ অগাস্ট পর্যন্ত ইসলায়েলি সেনাবাহিনী ফিলিস্তিন নিয়ন্ত্রিত গাজা ভূখণ্ড দখল করে রাখে। ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ও এক সপ্তাহ পর স্থল হামলার মধ্য দিয়ে গাজায় ইসরায়েলি ত্রিমাত্রিক সামরিক অভিযান চালায়। ইসলায়েল-হামাসের মধ্যে সাত সপ্তাহের লড়াইয়ে ২,১০০ ফিলিস্তিনি (যাদের অধিকাংশই বেসামরিক) ও ৭১ ইসরায়েলি (৬৭ জন সেনা সদস্য) নিহত হন।

মালয়েশীয় বিমান ভূপাতিত

ইউক্রেইন সমস্যার মধ্যে সংকট আরো ঘণীভূত হয়ে ওঠে ১৭ জুলাই। এদিন: ইউক্রেইনের বিদ্রোহীনিয়ন্ত্রিত এলাকায় ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে মালয়েশীয় এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট ১৭ (বোয়িং ৭৭৭) বিধ্বস্ত হলে ১৫ ক্রু সদস্যসহ বিমানটির ২৯৮ আরোহীর সবাই মৃত্যুবরণ করেন। এ ঘটনায় বিশ্বজুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে।

কম্বোডিয়ায় যুদ্ধাপরাধীর দণ্ড

৭ অগাস্ট: কম্বোডিয়ার খেমারুজ নেতা নুঅন চেয়া ও খিউ সাম্পান মানবতাবিরোধী অপরাধে খেমারুজ ট্রাইব্যুনালে কর্তৃক দোষী সব্যস্ত, যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন।

বুরকিনা ফাসোর প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ

প্রেসিডেন্টের মেয়াদের সময়সীমা বিলুপ্ত করার উদ্যোগ নিতে গিয়ে ব্যাপক গণবিক্ষোভ মুখে বুরকিনা ফাসোর প্রেসিডেন্ট ব্লেইজ কোম্প্যারো পদত্যাগ করেন। দিনটি ছিল ৩১ অক্টোবর।

যুক্তরাষ্ট্রে মধ্যবর্তী নির্বাচনে রিপাবলিকানদের জয়

যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যবর্তী নির্বাচনে কংগ্রেসের দুই কক্ষেই জয় পায় বিরোধীদল রিপাবলিকান পার্টি। ৪ নভেম্বর দেশটির মধ্যবর্তী এই নির্বাচনে সিনেটের ১০০টি আসনের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশে, নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের ৪৩৫টি আসনের সবগুলোতে এবং ৫০টি রাজ্য গভর্নরের মধ্যে ৩৬টিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। অর্থনৈতিক অগ্রগতির পরও ওবামার জনপ্রিয়তা ৪০ শতাংশে নেমে যাওয়ায় মধ্যবর্তী নির্বাচনে রিপাবলিকানদের জয় আগাম দেখছিলেন অনেক বিশ্লেষক। এ নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে সিনেটের নিয়ন্ত্রণ ডেমক্রেট পার্টির কাছ থেকে রিপাবলিকানদের কাছে চলে আসে। প্রতিনিধি পরিষদসহ সিনেটেও রিপাবলিকানদের জয়ের ফলে ওবামার মেয়াদের শেষ দুই বছরের জন্য প্রেসিডেন্টের সব সিদ্ধান্তে বাধ সাধার ক্ষমতা পেয়ে যায় বিরোধীরা। এতে কংগ্রেসে প্রস্তাব পাস করানোর ক্ষেত্রে ওবামাকে নিজ দলের দুর্বল অবস্থানের মোকাবিলা করতে হচ্ছে।

ইরাকের সংঘাত ও সহিংসতা

২০১৪ সালের শুরু থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশটিতে প্রায় ১২,০০০ জন নিহত ও ২২,০০০ জন আহত হয়েছেন। নভেম্বরে ইরাকজুড়ে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ ও সহিংসতার বলি হয়েছেন ১,২৩২ জন মানুষ। এ সময় আহত হয়েছেন আরো ২,৪৩৪ জন। দেশটির আল আনবার প্রদেশে সবচেয়ে বেশি নিহতের ঘটনা ঘটেছে। এই যথাক্রমে আছে বাগদাদ, সালাদিন প্রদেশ এবং দিয়ালা। আগে থেকেই ইরাকের ১০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত ছিলেন, নতুন করে ইসলামিক স্টেট’র (আইএস) অগ্রাসন ও উপজাতীয় গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সংঘাতে ২০১৪’তে নতুন করে আরো ১৯ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। এদের মধ্যে এক লাখ ৯০ হাজার মানুষ নিরাপত্তার অভাবে নিজ দেশ ছেড়ে অন্য দেশে চলে গেছেন।

সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ

প্রায় চার বছরের কাছাকাছি সময়েও থামেনি সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ। ২০১১ সালে শুরু হওয়া সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ ২০১৪ সালে নতুন মাত্রা পেয়েছে। প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করে আসা বিদ্রোহীদের উগ্রজঙ্গি রূপ এ বছর প্রকাশ্য রূপ পেয়েছে। এদের মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত ছিল ইসলামিক স্টেট (আইএস)। সিরিয়ার বিশাল এলাকা দখল করে নেয়া এ জঙ্গিগোষ্ঠীটির নির্মমতা ও বর্বর আচরণ কল্পনাকেও হার মানিয়েছে। নির্বিচার হত্যা, ধর্ষণ, ধর্ষণের পক্ষে ফতোয়া ও পশ্চিমা সাংবাদিক ও ত্রাণ কর্মীদের শিরশ্ছেদ ও তার ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করে ব্যাপক বিভিষিকা ছড়ায় আইএস। এক পর্যায়ে প্রতিবেশী ইরাকে আইএস’র বিরুদ্ধে চালানো মার্কিন বিমান হামলা সিরিয়াতেও সম্প্রসারণ করা হয়। সিরিয়ায় আইএসবিরোধী বিমান হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সৌদি আরব, জর্দানসহ চারটি আরব দেশ যোগ দেয়। সিরিয়ার তুর্কি সীমান্তের কুর্দি শহর কোবানিতে আইএস’র অভিযান নিয়ে বিশ্বব্যাপী ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয়। কোবানির কুর্দিরা মরণপণ সংগ্রামে আইএস জঙ্গিদের প্রতিরোধ করে রাখে। পরে বিশ্ব জনমতের চাপে ইরাকের কুর্দি পেশমেরগা বাহিনীকে তুরস্ক তার ভূখণ্ড ব্যবহার করে কোবানিতে প্রবেশ করতে দিলে পরিস্থিতি পাল্টে যায়। আইএস আবরোধ মুক্ত হয় কোবানি। আইএস ছাড়াও সিরিয়ার অপর উগ্রপন্থি জঙ্গিগোষ্ঠী নুসরা ফ্রন্টও এ বছর বেশ কয়েকটি আলোচিত ঘটনার জন্ম দেয়। এর মধ্যে গোলান হাইটস থেকে জাতিসংঘ বাহিনীর সেনাদের অপহরণ ছিল অন্যতম।

গৃহযুদ্ধে এ বছর সিরিয়ার আরো সাত লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে শরণার্থীতে পরিণত হয়। এদের নিয়ে দেশটির মোট বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা ৭২ লাখ এ দাঁড়িয়েছে। সিরিয়ার এসব শরণার্থীদের মধ্যে ৩৩ লাখ বিদেশে আশ্রয় নিয়ে আছেন। এ বছর দেশটির সরকার বা সরকারি বাহিনীগুলো থেকে বিদ্রোহী জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোর কার্যকলাপই গণমাধ্যমে বেশি আলোচিত হয়েছে। প্রায় চার বছরের গৃহযুদ্ধে দেশটিতে নিহতের সংখ্যা এ বছর দুই লাখ অতিক্রম করে যায়, আর যুদ্ধাহত মানুষের মোট সংখ্যা ১০ লাখ ছাড়িয়ে যায়।

দিলমা রৌসেফেই আস্থা ব্রাজিলের

কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনে জয়ী হয়ে দ্বিতীয়বারের মতো ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন দিলমা রৌসেফ। ৫ অক্টোবর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রথম দফায় কোনো প্রার্থী একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় ২৭ অক্টোবর দ্বিতীয় দফার ভোট গ্রহণ করা হয়। দ্বিতীয় দফায় ৫১ শতাংশ ভোট পেয়ে ফের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন ওয়ার্কাস পার্টির (পিটি) প্রার্থী রৌসেফ। প্রতিদ্বন্দ্বী মধ্যডানপন্থি প্রার্থী অ্যাসিও নেভেস পেয়েছিলেন ৪৮ শতাংশ ভোট। উত্তরসূরি সাবেক প্রেসিডেন্ট লুলা দ্য সিলভার সহযোগিতার ওপর ভর করে ২০১০ সালে প্রথমবারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেও এবারের নির্বাচনে নিজ যোগ্যতার স্বীকৃতি পান রৌসেফ।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এরদোয়ানের জয়

১০ অগাস্ট ইতিহাসের প্রথম প্রত্যক্ষ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী রেসেপ তায়িপ এরদোয়ান। ২৮ অগাস্ট তুরস্কের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন তিনি। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে তুরস্কের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা এরদোয়ান নির্বাচনে ৫২ শতাংশ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। রক্ষণশীল এরদোয়ানের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিরোধীদলীয় প্রার্থী উদারপন্থী একমেলেদ্দিন ইহসানোগ্লু। নির্বাচনে ইহসানোগ্লু পেয়েছেন ৩৯ শতাংশ ভোট। অপর উল্লেখযোগ্য প্রার্থী ছিলেন কুর্দি সেলাহাটিন দেমির্তাস।

ইন্দোনেশিয়ার নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জোকো উয়িদোদো

জুলাইয়ের অনুষ্ঠিত ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী জোকো উয়িদোদো ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্টের দায়িত্বভার গ্রহণ করছেন। জোকোউয়ি নামে পরিচিত ৫৩ বছর বয়সী এই জনপ্রিয় নেতা ২০ অক্টোবর দেশটির প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন। রাজধানী জাকার্তায় পার্লামেন্ট ভবনে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি ও অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী টনি অ্যাবোট উপস্থিত ছিলেন। জাকার্তার সাবেক গভর্নর উয়িদোদো হলেন ইন্দোনেশিয়ার প্রথম প্রেসিডেন্ট, যিনি দেশটির সামরিক বাহিনী বা রাজনৈতিক অভিজাতদের কেউ নন।

মিশরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী সিসি

প্রত্যাশিত জয় পেয়ে মিশরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন সাবেক সেনাপ্রধান আব্দেল ফাত্তা আল সিসি। প্রথম গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর এটিই ছিল দেশটির প্রথম প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। ২৬- ২৭ মে অনুষ্ঠিত ওই নির্বাচনে তিনি ৯৬ দশমিক ৩ শতাংশ ভোট পেয়ে নিরঙ্কুশ জয় পান। নির্বাচনে তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী বামপন্থী প্রার্থী হামদিন সাবাহি মাত্র ৩ শতাংশ ভোট পান। সমর্থকরা সিসি’কে এমন একজন নায়ক হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন যিনি মিশরের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা এনে দিতে পারবেন। কিন্তু নির্বাচনে জনগণ তেমন সাড়া না দেয়ায় নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট হিসেবে সিসি’র গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েই গেছে।

হংকংয়ে গণতন্ত্রপন্থিদের আন্দোলন

চীনের বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল হংকংয়ে ২০১৭ সালে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচন অবাধ করার দাবি কর্তৃপক্ষ নাকচ করে দিলে সেপ্টেম্বর মাসের শুরুতে গণতন্ত্রপন্থি আন্দোলনের পট প্রস্তুত হয়। সাবেক ব্রিটিশ উপনিবেশ হংকং’কে ১৯৯৭ সালে চীনের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তখন থেকে “এক দেশ, দুই পদ্ধতি” ফর্মুলায় চীনের অধীনে প্র্রায় স্বায়্ত্ত্বশাসন ভোগ করে আসছে হংকং। কিন্তু অগাস্টে বেইজিং অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমে অঞ্চলটির পরবর্তী নেতা নির্বাচনের দাবি খারিজ করে দেয়। শুধু বেইজিংয়ের প্রতি অনুগত প্রার্থীদের মধ্যেই নির্বাচন সীমাবদ্ধ রাখতে চায় চীন। এতে গণতন্ত্রপন্থী ছাত্রদের গোষ্ঠী ‘স্কলারিজম’ ও বেনি টাইয়ের নেতৃত্বাধীন নাগরিক আন্দোলন ‘অকুপাই সেন্ট্রাল’ বেইজিংয়ের পরিকল্পনার প্রতিবাদে আন্দোলন শুরু করে। এরই এক পর্যায়ে গণতন্ত্রপন্থি ছাত্রদের সঙ্গে হংকংয়ের দাঙ্গা পুলিশের সহিংস সংঘাত ও গণগ্রেপ্তারের পর গণতান্ত্রিক আন্দোলনের হাজার হাজার সমর্থক হংকংয়ের রাস্তার নেমে আসে। এশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ এই বাণিজ্য নগরীর কেন্দ্রস্থলে সরকারি সদরদপ্তরগুলোর সামনে হাজার হাজার বিক্ষোভকারীর অবস্থান নেন। গণতন্ত্রপন্থী ছাত্ররা হংকংয়ের কেন্দ্রীয় এলাকায় পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে সরকারি দপ্তরগুলো তছনছ করে। ব্যাপক হাঙ্গামা মোকাবিলায় আন্দোলনাকারী ছাত্রদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ পেপার স্প্রে ব্যবহার করে। আন্দোলনের এক পর্যায়ে অন্ততপক্ষে ৬০ জন ছাত্র আন্দোলনকারীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করলে আন্দোলন আরো ছড়িয়ে পড়ে। আন্দোলনের সমর্থনে হাজার হাজার হংকংবাসী ও গণতন্ত্রপন্থী ‘অকুপাই সেন্ট্রাল’ আন্দোলনের কর্মীরা রাস্তায় নেমে এসে অবস্থান নেন। এই প্রতিবাদকারীরা চশমা, মুখোশ ও রেইনকোট পরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের প্রস্তুতি নিয়ে রাস্তায় নামে। পুলিশের ব্যবহৃত পেপার স্প্রে ঠেকাতে চশমা ও পলিথিনে চোখ ঢেকে হাতে ছাতি নিয়ে বিশেষ প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে নামে আন্দোলনকারীরা। পেপার স্প্রে ঠেকাতে ছাতির নান্দনিক ব্যবহারে আন্দোলনটি “আমব্রেলা মুভমেন্ট” নামেও গণমাধ্যমে পরিচিত হয়ে পায়। নগরীর প্রশাসনিক এলাকার সরকারি দপ্তরগুলোর আশপাশের রাস্তা ও চত্বরগুলো প্রতিবাদকারীদের দখলে চলে যায়। সম্ভাব্য পুলিশি অভিযানের মোকাবিলায় তারা রাস্তায় রাস্তায় ধাতুর ব্যারিকেড বসায়। সেপ্টেম্বরের ২৫ তারিখ থেকে পরবর্তী প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে দখল করে রেখে অবস্থান ধর্মঘট চালিয়ে যান আন্দোলনকারীরা। এ সময় লাখেরও বেশি মানুষ নগরীর রাজপথগুলোতে অবস্থান নেয়। এতে নগরীতে অচলাবস্থা তৈরি হয়। অর্থনৈতিক কার্যক্রম প্রায় আচল হয়ে পড়ে। প্রায় মাসব্যাপী প্রবল আন্দোলনের পর গণআন্দোলনের জোয়ারে আস্তে আস্তে ভাটার টান শুরু হয়। অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে আন্দোলকারীদের অবরোধ ভেঙে তাদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দিতে শুরু করে পুলিশ। নভেম্বরের শেষ দিকে মংকং এলাকা থেকে গণতন্ত্রপন্থিদের সরিয়ে দিয়ে তাদের শিবির পরিষ্কার করে ফেলে পুলিশ। পরে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি নাগাদা নগরী থেকে গণতন্ত্রপন্থিদের সব অবস্থান তুলে দিয়ে শহরের নাগরিক জীবন পুরোপুরি স্বাভাবিক করে ফেলে পুলিশ। এক সময় আন্দোলন প্রবল রূপ নিলেও কখনও নিজেদের অবস্থান থেকে সরে এসে আন্দোলনকারীদের দাবি মেনে নেয়নি বেইজিং।

মালালা ও কৈলাসের শান্তিতে নোবেল জয়

শিশু ও তরুণদের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে অবদানের স্বীকৃতি হিসাবে এবছর শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন পাচ্ছেন তালেবান হামলায় বেঁচে যাওয়া পাকিস্তানি কিশোরী মালালা ইউসুফজাই এবং ভারতের শিশু অধিকারকর্মী কৈলাস সত্যার্থী। ১৭ বছর বয়সী মালালা ইতিহাসের সর্বকনিষ্ঠ নোবেলজয়ী, যিনি মেয়েদের শিক্ষা বন্ধ করে দেয়ার প্রতিবাদ করে তালেবান হামলার মুখে পড়েন এবং গুলিবিদ্ধ হয়েও বেঁচে ফিরে এসে নারী শিক্ষার জন্যই কাজ করে চলেছেন। আর ৬০ বছর বয়সী কৈলাস গত দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে ভারতে শিশু শ্রমের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে আসছেন, গড়ে তুলেছেন ‘বাচপান বাঁচাও’ আন্দোলন।

পাকিস্তানে ১৩২ শিশু হত্যা

পাকিস্তানের কিশোরী মালালা ইউসুফজাই তালেবান হামলা থেকে বেঁচে গিয়ে অর্জন করেন শান্তির নোবেল। সেই তালেবান গোষ্ঠীই চলতি বছরের ১৬ ডিসেম্বর ঘটালো স্মরণকালের সবচে জঘণ্যতম ঘটনা। যে শিশুরা যুদ্ধেও অবধ্য তাদেরই হত্যা করল তালেবান জঙ্গিরা। পেশোয়ারে সামরিক বাহিনী পরিচালিত একটি স্কুলে হামলা চালিয়ে ১৩২ শিশুসহ ১৪১ জনকে হত্যা করে জঙ্গিরা। তালেবান গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে আসছে পাকিস্তানের সেনা বাহিনী। তারই প্রতিশোধ হিসেবে এই হত্যাকাণ্ড চালানো হয় বলে মৌলবাদী জঙ্গিগোষ্ঠীটি দাবি করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশ হত্যা

চলতি বছরের অগাস্টে নিরস্ত্র কিশোর মাইকেল ব্রাউন পুলিশের গুলিতে নিহত হওয়ার ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রে কয়েকমাস ধরে বিক্ষোভ চলে। এরমধ্যে ২০ ডিসেম্বর নিউ ইয়র্কের ব্রুকলিনে আত্মঘাতী অস্ত্রধারীর গুলিতে দুই শ্বেতাঙ্গ পুলিশ কর্মকর্তা মারা যান। ধারণা করা হয় কৃষ্ণাঙ্গ ব্রাউনের হত্যার জেরে শ্বেতাঙ্গ পুলিশের ওপর এই হামলা চালানো হয়েছে।

স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতার স্বপ্নভঙ্গ

সেপ্টেম্বরে যুক্তরাজ্য থেকে স্বাধীন হওয়ার প্রশ্নে আয়োজিত ওই গণভোটে ৫৫ শতাংশ ভোটার নেতিবাচক রায় দেয়। আর স্বাধীনতার পক্ষে রায় দেয় ৪৫ শতাংশ স্কটিশ। ফলে যুক্তরাজ্য থেকে বেরিয়ে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশের সম্ভাবনা ভেস্তে যায় স্কটল্যান্ডের। তবে গণভোটে স্কটল্যান্ড স্বাধীন হয়ে যেতে পারে বলে শঙ্কায় পড়ে গিয়েছিলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। বিচ্ছেদ থামাতে স্কটিশ ভোটারদেরকে নজিরবিহীন উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যুক্তরাজ্যপন্থি নেতারা।ওই অঞ্চলের উন্নয়নে বিশেষ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে বলে অঙ্গীকার করেছেন ডেভিড ক্যামেরন।

প্রাণঘাতী ইবোলা

প্রাণঘাতী ভাইরাস ইবোলা আক্রান্ত ১৭ হাজার ৯৪২ জনের মধ্যে এ পর্যন্ত মারা গেছে ৬ হাজার ৩৩৮ জন। এদের বেশির ভাগই লাইবেরিয়া, সিয়েরা লিওন এবং গিনির বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সম্প্রতি এ রোগে মানুষের মৃত্যুর হার প্রায় ৭০ শতাংশ। এ বছর টাইম ম্যাগাজিনের বর্ষসেরা ব্যক্তিত্ব নির্বাচিত হয়েছে 'ইবোলা’ আক্রান্ত রোগীদেরকে সাহায্যে নিয়োজিত স্বাস্থ্যকর্মীরা। পশ্চিম আফ্রিকায় প্রাণঘাতী ইবোলা ভাইরাসের বিরুদ্ধে অবিরাম লড়ে যাওয়া ডাক্তার, নার্স থেকে শুরু করে এম্বুলেন্স চালক এমনকি মারা যাওয়া রোগীদের সমাহিত করার কাজে নিয়োজিতদেরকেও এবার 'পারসন অব দ্য ইয়ার' নির্বাচিত করেছে টাইম ম্যাগাজিন।

মহানায়িকার মহাপ্রয়াণ

অভিনয় ও সৌন্দর্যে তিনি ছিলেন বাংলা ছবির মহানায়িকা। ভারতীয় বাংলা চলচ্চিত্রের মহানায়ক উত্তম কুমারের সঙ্গে জুটি বেঁধে সিকি শতাব্দী শাসন করেছেন দর্শক হৃদয়। বাংলা চলচ্চিত্রের সেই কিংবদন্তি অভিনেত্রী সুচিত্রা সেন চলে গেলেন বছরের শুরুতেই ১৭ জানুয়ারি। ২৫ দিন কলকাতার বেলভিউ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর পৃথিবীর রঙ্গমঞ্চ ছেড়ে চিরবিদায় নেন মহানায়িকা। জীবনের শেষ ৩৫টি বছর সচিত্রা কাটিয়েছেন অন্তরালে। ‘অগ্নি পরীক্ষা’, ‘হারানো সুর’, ‘সপ্তপদী’, ‘পথে হলো দেরী’, ‘শাপমোচন’ বা ‘শিল্পী’ চলচ্চিত্রে সুচিত্রার যে রূপ দর্শক দেখেছে, তাতে আর পড়বে না বলিরেখা, জরার ছাপ। বাংলা সিনেমার ক্ল্যাসিক জুটি উত্তম-সুচিত্রা ছবির মতোই দর্শক হৃদয়ে থাকবে চির অমলিন। এ বাংলার মেয়ে সুচিত্রার পারিবারিক নাম রমা দাশগুপ্ত।

সূত্র: রয়টার্স, বিবিসি, আইএএনএস, দ্য ডন, উইকিপিডিয়া