শনিবার দ্য ডন জানিয়েছে, পাকিস্তান সামরিক বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযান বন্ধ না করলে এসব হামলা চালানো হবে বলে সতর্ক করেছে এই জঙ্গি নেতা।
নিষিদ্ধ ঘোষিত তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান’র (টিটিপি) ওয়েবসাইটে পোস্ট করা ইংরেজি সাবটাইটেলসহ এক মিনিট ৪৯ সেকেন্ডের একটি ভিডিওতে এসব কথা জানিয়েছেন উমর।
সেনাবাহিনীর অভিযানে তালেবান যোদ্ধাদের পরিবার ও শিশুদের নিহত হওয়ার প্রতিশোধ হিসেবে পেশোয়ারের আর্মি পাবলিক স্কুল ও কলেজে হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবী করেছেন তিনি।
১৬ ডিসেম্বর চালানো ওই হামলায় ১৩২ জন শিশু শিক্ষার্থিসহ ১৪১ জন নিহত হন। নিহত শিশুদের অধিকাংশই সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তাদের সন্তান।
স্কুলটিতে সাড়ে সাত ঘন্টা ধরে চালানো হামলার সময় আত্মঘাতী হামলাকারী জঙ্গিদের মোবাইলে নির্দেশনা দিয়ে হামলা পরিচালনা করেছিলেন উমর। খলিফা উমার বা উমার নারেয়ি নামেও তিনি পরিচিত।
তার এসব নির্দেশমূলক কথাবার্তা রেকর্ড করেছে পাকিস্তানি নিরাপত্তা সংস্থাগুলো। এই কথাবার্তা থেকেই উমরের নির্দেশনায় হামলাটি পরিচালিত হওয়ার বিষয়টি পরিষ্কার হয়েছে।
পাকিস্তান সীমান্তবর্তী আফগানিস্তানের নানগারহার প্রদেশের নাজিয়ান জেলায় অবস্থান নিয়ে পেশোয়ার হামলাটি পরিচালনা করেছেন উমর।
টিটিপি’র পেশোয়ার ও অস্ত্র তৈরির কারখানা অঞ্চল দেরা আদমখেল এলাকার খলিফা বা কমান্ডার উমর তারিক গিদার গোষ্ঠির প্রধান।
এর আগে শুক্রবার দেয়া এক বিবৃতিতে টিটিপি’র মুখপাত্র মোহাম্মদ খুরসানি (প্রকৃত নাম খালিদ বিলতি) বলেছিলেন, “টিটিপি’র সদস্যদের স্কুলের প্রাথমিক অংশের শিক্ষার্থিদের লক্ষ্যস্থল না করার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল।”
“হামলা চলাকালে ফিদায়িনদের (আত্মঘাতী হামলাকারী) এসব নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল,” বিবৃতিতে বলেছেন তিনি। তার এ বক্তব্যও হামলা চলাকালে হামলাকারীদের সঙ্গে তাদের পরিচালনাকারীর যোগাযোগ ছিল, গোয়েন্দাদের এমন তথ্যকে সমর্থন করে।
স্কুলের অডিটোরিয়ামে স্কুলের জ্যেষ্ঠ শিক্ষার্থিদের প্রাথমিক চিকিৎসার প্রশিক্ষণ চলার খবরও তাদের কাছে ছিল বলে খুরসানির বিবৃতি থেকে নিশ্চিত হওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন বিশ্লেষকরা।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সঙ্গে ছয় পাকিস্তানি তালেবানের দেয়া এক সাক্ষাৎকারেও উমরকে পেশোয়ার হামলার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
তিন সন্তানের পিতা ও দক্ষ ভলিবল খেলোয়াড় উমর “স্লিম” নামেও পরিচিত।
সাক্ষাৎকার দেয়া চারজন বলেছেন, উমর টিটিপি’র নেতা মোল্লা ফাজলুল্লাহর ঘনিষ্ঠ জন, এই ফাজলুল্লাহই মালালা ইউসুফজাইকে খুন করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।