দক্ষিণ ক্যারোলাইনায় কার্যকর হওয়া ওই রায়কে “বড় ধরনের অবিচার” বলে মন্তব্য করেছেন বিচারক কারমেন মুলেন, বৃহস্পতিবার জানিয়েছে বিবিসি।
১৯৪৪ সালে গ্রেপ্তারের মাত্র তিনমাসের মধ্যে জর্জ স্টিনি’কে দোষি সব্যস্ত করে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়, এমনকি কোনো আপিলের সুযোগ দেয়া হয়নি হতভাগ্য এই কিশোরকে।
স্টিনি’র সমর্থদের অভিযোগ, বিচারে যথেষ্ট সাক্ষ্যপ্রমাণ না থাকার পরও সাম্প্রদায়িকতার বলি হতে হয় স্টিনিকে।
১০০ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া সবচেয়ে কম বয়সী ব্যক্তি ছিলেন স্টিনি।
ওই সময়ের সংবাদ ভাষ্যে জানা গেছে, মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সময় পাঁচ ফুট দুই ইঞ্চি উচ্চতার স্টিনি’র ওজন ছিল মাত্র ৪৩ কেজি।
যে ইলেকট্রিক চেয়ারে বসিয়ে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছিল, তাতে দণ্ডিতকে বাধার জন্য থাকা ফিতাগুলোর তুলনায় সে ক্ষুদ্রাকৃতির ছিল। পায়ে লাগানোর ইলেকট্রোডগুলো তার পায়ের আকারের চেয়ে অনেক বড় ছিল।
ইলেকট্রিক চেয়ারের উপযুক্ত মাপের না হওয়ায় স্টিনি’কে একটি ফোন ডিরেক্টরির উপর বসিয়ে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
রায়ে বিচারক মুলেন বলেছেন, বিচারের ওই সময় স্টিনি’র সাংবিধানিক অধিকারও তাকে রক্ষা করতে পারেনি।
পিটিয়ে মেরে ফেলা সাত ও ১১ বছরের দুটি বালিকার লাশ পাওয়ার একদিন পর স্টিনিকে গ্রেপ্তার করা হয়। নিখোঁজ হওয়ার আগে ওই দুই বালিকাকে স্টিনি ও তার বোনের সঙ্গে কথা বলতে দেখা গিয়েছিল বলে অভিযোগ করেছিলেন প্রতিবেশীরা।
তদন্তকারীরা নিখোঁজ বালিকাদের লাশ পাওয়ার পর কিশোর স্টিনি’কে তার বাবা-মা’র সামনে থেকে ধরে নিয়ে যায়। কোনো আইনজীবীর উপস্থিতি ছাড়াই তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল।
স্টিনি’র স্বীকারোক্তিসহ রাষ্ট্রিয় এই মামলাটির বেশিরভাগ স্বাক্ষ্য-প্রমাণ সময়ের ফেরে হারিয়ে গেছে।
তবে এগুলো সচেতনভাবে গায়েব করা হয়েছে এমন নয় বলে দাবী করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা।
জর্জ ফ্রিয়ারসন নামের স্টিনি’র এক সমর্থকের তৎপরতার ফলে ৭০ বছর আগের এই মামলাটি পুনরুজ্জীবিত হয়ে উঠে।
১৯৪০’র দশকে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর বর্ণবাদী কালাকানুনের (জিম ক্রো সিস্টেম নামে পরিচিত) একটি কেন্দ্র ছিল দক্ষিণ ক্যারোলাইনা।