বুধবার হোয়াইট হাউজ থেকে দেয়া ঘোষণায় ওবামা কিউবার ওপর থেকে দীর্ঘদিনের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
১৮ মাসের গোপন আলোচনার পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ওবামা এবং কিউবার প্রেসিডেন্ট রাউল কাস্ত্রো মঙ্গলবার একটি ফোনালাপে বন্দিবিনিময় করাসহ আরো নানা বিষয়ে একমত হন। এর মধ্যে রয়েছে, একে অপরের দেশে দূতাবাস খোলা, বাণিজ্যের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া এবং সম্পর্ক উন্নত করা।
দু’নেতাই টেলিভিশনে দেয়া ভাষণে উল্লেখযোগ্য এ পরিবর্তনগুলো বাস্তবায়নের ঘোষণা দেন।
তবে কিউবার ওপর থেকে ওবামার অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেয়ার পদক্ষেপের আপত্তি জানায় রিপাবলিকানরা। জানুয়ারি থেকে কংগ্রেসের সিনেট এবং প্রতিনিধি পরিষদ দুই কক্ষেরই নিয়ন্ত্রণ নিতে চলা রিপাবলিকানরা কিউবার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের স্বাভাবিক সম্পর্ক স্থাপনের ঘোর বিরোধী।
কিন্তু ওবামা বলছেন, কিউবাকে একঘরে করে রাখার ‘অনমনীয় এবং সেকেলে’ নীতিটি স্পষ্টতই ব্যর্থ হয়েছে। এখন সময় এসেছে নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে কিছু করার।
ওবামা জানান, ওয়াশিংটন হাভানায় একটি দূতাবাস খোলার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র থেকে কিউবায় অর্থ পাঠানোর পরিমাণ উল্লেখযোগ্য মাত্রায় বাড়বে। দু’দেশের মধ্যে মুদ্রা বিনিময় চালু করা হবে এবং মার্কিন ব্যবসায়ীদের জন্য কিউবায় পণ্য রপ্তানির সুযোগ সহজ করা হবে। তাছাড়া, মার্কিনিদের জন্য কিউবায় ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞাও শিথিল করা হবে।
তবে কিউবার ওপর থেকে ৫০ বছরের বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা রাতারাতি উঠিয়ে নেয়া ওবামার জন্য সহজ হবে না। কারণ, এ নিষেধাজ্ঞা উঠাতে হলে কংগ্রেসের অনুমোদন প্রয়োজন। ওবামা এ অনুমোদন লাভের চেষ্টা নেবেন বলে জানালেও একাজে তাকে যথেষ্ট বেগ পেতে হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
অবশ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কংগ্রেসের আপত্তির মুখে নিষেধাজ্ঞা তোলার জন্য ওবামা তার নির্বাহী ক্ষমতাকে কাজে লাগাতে পারেন।
কিউবায় ১৯৫৯ সালের বিপ্লবের মধ্য দিয়ে ফিদেল কাস্ত্রো ক্ষমতায় আসার পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কিউবার শত্রুতা চলে আসছে। কিউবার ওপর ৫০ বছর ধরে বাণিজ্য নষেধাজ্ঞা বহাল রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র।
বুধবার কিউবা ও যুক্তরাষ্ট্রের বন্দিবিনিময় একে অপরের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার পথ সুগম করেছে। ওই চুক্তির আওতায় ফ্লোরিডায় গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে আটক তিন কিউবান নাগরিকের মুক্তির বিনিময়ে কিউবা আটক মার্কিন ত্রাণকর্মী অ্যালেন গ্রসকে মুক্তি দিয়েছে।
৫ বছর জেলে রাখার পর মানবিক কারণে গ্রসকে মুক্তি দিয়েছে কিউবা। তাকে গ্রেপ্তার করা এবং বন্দি রাখাটাই এতদিন দু’দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার পথে বাধা হয়ে ছিল। ওবামা বলেন, গ্রসের মুক্তিই হাভানার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের দ্বার খুলে দিয়েছে।