স্কুলে হত্যাযজ্ঞের পর ফাঁসি কার্যকরে নিষেধাজ্ঞা তুলল পাকিস্তান

পোশোয়ারে স্কুলশিশুদের ওপর জঙ্গি হত্যাযজ্ঞের পর মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ওপর থেকে গত ছয় বছর ধরে চলে আসা নিষেধাজ্ঞা তুলে নিল পাকিস্তান সরকার।  

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Dec 2014, 08:42 AM
Updated : 17 Dec 2014, 08:42 AM

বুধবার পেশোয়ারের গভর্নর হাউসে প্রেসিডেন্ট নওয়াজ শরিফের সভাপতিত্বে একটি সর্বদলীয় বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয় বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবর।

পাকিস্তান সরকারের মুখপাত্র মহিউদ্দিন বাওয়ানি জানান।

তিনি বলেন, “সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী এই সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছেন।” 

মঙ্গলবার নয় জঙ্গি সামরিক পোশাকে খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের রাজধানী পেশোয়ারের আর্মি পাবলিক স্কুলে ঢুকে ওই বর্ব হত্যাকাণ্ড চালায়, যাতে ১৩২ শিক্ষার্থীসহ অন্তত ১৪১ জন নিহত হয়।

নিহত শিক্ষার্থীদের বয়স ১০ থেকে ২০ বছরের মধ্যে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যাদের অনেকেই সেনা কর্মকর্তাদের সন্তান। জঙ্গি হামলায় একই বয়সী আরও অন্তত ১২১ স্কুলশিশু আহত হয়েছে।

পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠন তেহরিক-ই-তালেবান এই হামলার দায় স্বীকার করে বলেছে, সাম্প্রতিক সময়ে সেনা অভিযানে কয়েক হাজার তালেবান সদস্য নিহত হওয়ার প্রতিশোধ নিতেই এ হামলা।

জঙ্গি হামলার খবর পেয়ে মঙ্গলবারই রাজধানী ইসলামাবাদ থেকে পোশোয়ারে ছুটে যান নওয়াজ। জঙ্গি দমনে কঠোর হওয়ার ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, যত শিশুর রক্ত ঝরেছে, তার প্রতিটি ফোঁটার প্রতিশোধ নেওয়া হবে।

জঙ্গি দমনে করণীয় ঠিক করতেই বুধবারের এই সর্বদলীয় বৈঠক ডাকা হয়, যাতে পাকিস্তানের পার্লামেন্টে প্রতিনিধিত্বকারী দলগুলোর নেতারা অংশ নেন।

পাকিস্তানের আইনে সর্বোচ্চ সাজা হিসাবে মৃত্যুদণ্ডের বিধান থাকলেও ২০০৮ সালে প্রধানমন্ত্রী আসিফ আলী জারদারির সময়ে ফাঁসি কার্যকরের ওপর এই নিষেধাজ্ঞা আসে। তার মেয়াদ গতবছর জুলাই মাসে শেষ হয়ে গেলেও বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার আহ্বানে নওয়াজ শরিফের মুসলিম লিগ সরকারও নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখে।

নিষেধাজ্ঞার মেয়াদপূর্তির পর পাকিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলীয় সুক্কুর শহরে নিষিদ্ধ সংগঠন লস্কর-ই-জাংভির দুই সদস্যের ফাঁসি কার্যকরের প্রস্তুতি নেয়া হলেও নওয়াজের নিষেধাজ্ঞা বহালের সিদ্ধান্তে সে সময় তা আটকে যায়। 

সরকার কোন তালেবান সদস্যের ফাঁসি কার্যকর করলে তা ‘যুদ্ধ ঘোষণা’ বিবেচনা করা হবে বলেও সে সময় হুমকি দিয়েছিল দলটি।

গত ছয় বছরে জঙ্গি কর্মকাণ্ডসহ বিভিন্ন অপরাধে অন্তত আট হাজার আসামির মৃত্যুদণ্ডের রায় হলেও নিষেধাজ্ঞার কারণে তাদের ফাঁসি কার্যকর হয়নি বলে স্থানীয় গণমাধ্যমের খবর।