বুধবার রাতে ফার্গুসনে মোতায়েন জাতীয় রক্ষীসেনা ও স্থানীয় পুলিশ আরেকটি সহিংস রাত মোকাবিলার প্রস্তুতি নিয়ে অপেক্ষা করছিল।
গত সোমবার রায় ঘোষণার পর থেকে তিনদিনে ফার্গুসন ও যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য শহর থেকে ৪০০’শরও বেশি প্রতিবাদকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
৯ অগাস্ট ফার্গুসনের রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় ১৮ বছর বয়স কৃষ্ণাঙ্গ তরুণ মাইকেলে ব্রাউনকে গুলি করে হত্যা করেন শ্বেতাঙ্গ পুলিশ কর্মকর্তা ড্যারেন উইলসন। এতে কৃষ্ণাঙ্গ অধ্যুষিত ফার্গুসনে ব্যাপক প্রতিবাদ বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভ কখনো কখনো সহিংস রূপ নেয়।
ফার্গুসনসহ আশপাশের এলাকায় উত্তাল বিক্ষোভ ও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় অতিরিক্ত জাতীয় রক্ষী মোতায়েন করতে বাধ্য হয় রাজ্য কর্তৃপক্ষ।
কিন্তু প্রতিবাদ শুধু ফার্গুসনেই সীমাবদ্ধ থাকেনি, নিউইয়র্ক থেকে লসঅ্যাঞ্জেলস, বোস্টন, ডালাস, আটলান্টার মতো সব বড় বড় শহরে ছড়িয়ে পড়েছে। সব জায়গায়ই আদালতের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো হচ্ছে।
রায় ঘোষণার পরবর্তী দুই রাত ফার্গুসনে ব্যাপক দাঙ্গা, লুটপাট, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। পরে নিরাপত্তা বাহিনীর উপস্থিতি আরো বাড়ানোর পর মঙ্গলবার রাতে দাঙ্গা পরিস্থিতি কিছুটা সামাল দেয়া গেছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
মিজৌরির গভর্নর জে নিক্সন ফার্গুসনে ও এর আশপাশে ২,২০০ জাতীয় রক্ষীসেনা মোতায়েন করেছেন।
মঙ্গলবার রাতে ফার্গুসন থেকে ৪৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। সোমাবার রায় ঘোষণার পর ৬১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার রাতে বোস্টনে কয়েক হাজার মানুষ ফার্গুসনের ঘটনায় আদালতের সিদ্ধান্তে প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। এখান থেকে ৪৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ডালাসে যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর-দক্ষিণ ৩৫ নম্বার জাতীয় সড়ক বন্ধ করে প্রতিবাদ বিক্ষোভ করার সময় সাতজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
নিউইয়র্কে আদালতের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে লিঙ্কন টানেল ও ট্রাইবোরা সেতু বন্ধ করে দেয়ার চেষ্টা করে প্রতিবাদকারীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ পেপার স্প্রে ব্যবহার করে ও ১০ বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করে।
যুক্তরাষ্ট্রের আইনি ব্যবস্থা ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো তাদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করে বলে দেশটির কৃষ্ণাঙ্গ নাগরিকদের মধ্যে ধারণা প্রচলিত আছে।
এই বিষয়টি দেশটির প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক মনোযোগও আকর্ষণ করেছে।
সোমবার রায় ঘোষণার পর ওবামা স্বীকার করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের পুলিশ ও সংখ্যালঘুদের মধ্যে গভীর অনাস্থা বিরাজমান।
ওদিকে ফার্গুসনের ঘটনাকে উদাহরণ হিসেবে উপস্থাপন করে রাশিয়া ওয়াশিংটনকে “ভণ্ড” অভিহিত করেছে এবং রাশিয়ার মানবাধিকার নিয়ে দেশটির বক্তৃতা দেয়ার অধিকার নেই বলে দাবী করেছে।