রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রবার্ট ম্যাককুলশ বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার সকালে আদালতের এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন।
৯ অগাস্ট সেন্ট লুইসের ফার্গুসনে শ্বেতাঙ্গ পুলিশ কর্মকর্তা ড্যারেন উইলসনের গুলিতে নিরস্ত্র কৃষ্ণাঙ্গ তরুণ মাইকেল ব্রাউন (১৮) নিহত হন। এই হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সেন্ট লুইসে ব্যাপক প্রতিবাদ বিক্ষোভ শুরু হয়।
কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা ওই প্রতিবাদ বিক্ষোভ মাঝে মাঝে সহিংস রূপ নিয়েছিল। কৃষ্ণাঙ্গ অধ্যুষিত কিন্তু প্রশাসনিকভাবে শ্বেতাঙ্গ নিয়ন্ত্রিত শহরটিতে বর্ণবাদী দাঙ্গা শুরু হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছিল।
এই রায়কে কেন্দ্র করে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়তে পারে আশঙ্কায় চলতি মাসের শুরুতে পুরো মিজৌরিজুড়ে এক মাসের জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। পুরো অঙ্গরাজ্যে পুলিশের পাশাপাশি ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করা হয়েছে।
এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় উইলসনের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আনা হবে কিনা তা নিয়ে কয়েক মাস ধরে শুনানি হয়। শুনানি শেষে দেয়া রায়ে গ্র্যান্ড জুরি উইলসনের বিরুদ্ধে কোনো ফৌজদারি অভিযোগ গঠন করার কোনো সম্ভাব্য কারণ খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন।
মিজৌরির ক্লেটনে আদালতের সিদ্ধান্ত জানিয়ে ম্যাককুলশ বলেন, “বিচারকরা পুলিশ কর্মকর্তা উইলসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনার মতো কোনো কারণ খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে নিশ্চিত হয়েছেন।”
গ্র্যান্ড জুরির এই রায়ে ‘গভীর হতাশা’ প্রকাশ করেছেন নিহত ব্রাউনের পরিবারের সদস্যরা।
পরিবারের আইনজীবীর মাধ্যমে দেয়া এক বিবৃতিতে তারা বলেছেন, “যখন অনেকেই আমাদের যন্ত্রণার অংশীদার হয়েছেন, আমরা বলতে চাই আমাদের হতাশা এমনভাবে প্রকাশিত হওয়া উচিত যেন তা একটি শুভ পরিবর্তনের সূচনা করে।”
রায় ঘোষণার আগে থেকেই ফার্গুসন পুলিশ বিভাগের দপ্তরের সামনে কয়েকশ মানুষ এসে অপেক্ষা করতে থাকেন। রায়ের সংবাদ আসার সঙ্গে সঙ্গেই এদের অনেকে উত্তেজিত হয়ে উঠেন, কেউ চিৎকার করে কাঁদতে থাকেন।
দাঙ্গা পুলিশের ব্যারিকেডের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা উত্তেজিত এক নারী মাইক্রোফোনে বলতে থাকেন, “খুনি, তোমরা খুনি ছাড়া কিছু নও। তোমরা নির্দয় খুনি।”
রায় ঘোষণার আগে ফার্গুসন ও এর আশপাশজুড়ে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। রাজ্যের গভর্নর জে নিক্সন যে কোনো ধরনের দাঙ্গা পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য জাতীয় রক্ষীদের নির্দেশ দিয়েছেন।
রায়ে যে সিদ্ধান্ত দেয়া হোক, তা সহজভাবে নিয়ে শান্ত থাকার জন্য ফার্গুসনের মানুষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।