বিতর্কিত গুরু রামপাল গ্রেপ্তার, ৬ জনের মৃত্যু

উগ্র অনুসারীদের বাধার মুখে দুই সপ্তাহ ধরে অচলাবস্থা চলার পর ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের বিতর্কিত গুরু রামপালকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Nov 2014, 07:05 AM
Updated : 20 Nov 2014, 08:41 AM

বুধবার রাতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বৃহস্পতিবার সকালে তাকে হরিয়ানার রাজধানী চণ্ডিগড়ের একটি আদালতে হাজির করা হতে পারে বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।

৬৩ বছর বয়সী রামপালের বিরুদ্ধে উত্তেজনা ছড়ানো ও জাতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ প্রচেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে।

অচলাবস্থা ও বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ চলাকালে রামপালের শতলোক আশ্রমের ভিতরে চার নারী ও পরে হাসপাতালে এক শিশুসহ অপর এক নারী মারা গেছেন।

বুধবার রাতে হরিয়ানার হিসারে অবস্থিত শতলোক আশ্রমে প্রবেশ করে রামপালের আস্তানায় অভিযান চালায় পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর তাকে একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশের ১০টি গাড়ির একটি বহর অ্যাম্বুলেন্সটিকে পাহারা দিয়ে নিয়ে যায়।

বিতর্কিত গুরু রামপাল

রামপালের সশস্ত্র অনুসারীরা তাকে গ্রেপ্তারে বাধা দেয়। ব্যর্থ হয়ে তারা পুলিশের দিকে এসিড ছোড়ে হাটহাজারিতে ট্রাকের ধাক্কায় অটোরিকশা চালক নিহত বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গ্রেপ্তার এড়াতে আশ্রমে অন্ততপক্ষে পাঁচ হাজার অনুসারী জড়ো করেন রামপাল। পুলিশি অভিযানে বাধা দিতে তার ভক্ত নারী ও শিশুদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করে তার অনুসারীরা।
তার কূখ্যাত অনুসারীরা, যারা নিজেদের “বাবার কমান্ডো” বলে পরিচয় দেয়, আশ্রমের ভিতরে দুই থেকে তিন হাজার মানুষকে আটকে রেখেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
আটক ওইসব লোকজনের মধ্যে আহত নারী ও শিশু থাকতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছে পুলিশ। তবে আশ্রমের ভিতরে আর কেউ মারা গেছেন কিনা সে বিষয়ে তাদের কাছে নিশ্চিত কোনো তথ্য নেই বলে জানিয়েছেন তারা।
অচলাবস্থা চলাকালে আশ্রমের ভিতরে চার নারী মারা যান। হাসপাতালে নেয়ার পর আরো এক নারী ও ১৮ মাস বয়সী একটি শিশু মারা যায়।
বৃহস্পতিবার সকালে আশ্রমে কয়েক হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আশ্রমের ভিতরে থাকা লোকজন বের হয়ে আসলে তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না বলে নিশ্চয়তা দিয়ে ঘোষণা শুরু করেছে পুলিশ।
যারা কোন রকমে আশ্রম ছেড়ে বের হয়ে আসতে পেরেছেন, তারা জানিয়েছেন, অনেক কষ্টে তারা বের হয়ে আসতে পেরেছেন।
রাতে রামপালকে যে হাসপাতালে রাখা হয়েছিল সেখানে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল। তার অনুসারীরা হাসপাতালের কাছে আশপাশে গিয়ে জড়ো হয়েছিল। তবে পুলিশ তাদের কাছে ভিড়তে দেয়নি।
পরে হাসপাতাল থেকে তাকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানা গেছে।
রামপালের গ্রেপ্তারের সময় সংঘর্ষে অনেকে আহত হয়েছিলেন বলে জানা গেছে। তিনি যেন আশ্রম ছেড়ে পালিয়ে যেতে না পারেন সেজন্য আশ্রমের চারপাশ ঘিরে ভারতীয় কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশ বাহিনী (সিআরপিএফ) মোতায়েন করা হয়েছিল।