‘অকুপেশনাল অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল মেডিসিন’ জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, এক দশক ধরে পালাক্রমে (শিফটিং সিস্টেম) কাজ করলে মস্তিষ্কের বয়স ছয় বছর বেশি বেড়ে যেতে পারে।
পালাক্রমের কাজ বন্ধ করলে মস্তিষ্কের এই ক্ষতি কিছুটা পূরণ হয় এবং পুরো স্বাভাবিকতা ফিরে আসতে প্রায় পাঁচ বছর লেগে যায়।
মানসিকভাবে অসুস্থ রোগীদের ক্ষেত্রেও এই গবেষণা গুরুত্বপূর্ণ। মানসিকভাবে অসুস্থ ব্যক্তিদের অনেকেরই রাতে ঘুম হয় না।
আমাদের শরীর প্রাকৃতিকভাবেই দিনে জেগে থাকা ও রাতে ঘুমানোর নিয়মে চলে।
কাজের কারণে প্রাকৃতিক এই নিয়মের লঙ্ঘন হলে স্বাভাবিকভাবেই এর প্রতিক্রিয়া দেখা যাবে। এর প্রভাবে স্থুলতা থেকে শুরু করে স্তন ক্যান্সারের মতো রোগ হতে পারে।
সোয়ানসি বিশ্ববিদ্যালয় এবং তুলুস বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক মনের ওপর এর প্রভাব নিয়ে গবেষণা করেন।
ফ্রান্সের তিন হাজার মানুষ এ গবেষণাকাজে অংশ নেন। তাদের স্মৃতিশক্তি, চিন্তা করার ক্ষমতা ও জ্ঞনের বিস্তৃতি নিয়ে পরীক্ষা চালানো হয়।
সাধারণত বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের মস্তিষ্কের সক্ষমতা কমতে শুরু করে। গবেষকরা দেখেছেন, যারা রাতের পালায় কাজ করে তাদের মস্তিষ্ক স্বাভাবিকের তুলনায় দ্রুত গতিতে সক্ষমতা হারাতে থাকে।
যারা দশ বছরের বেশি সময় পালাক্রমে কাজ করেছে তাদের মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা তাদের চেয়ে ছয় বা সাড়ে ছয় বছর বেশি বয়সীদের মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতার প্রায় সমান থাকে।
পালার কাজ কিভাবে মানুষের বুদ্ধিমত্তায় প্রভাব ফেলে সে ব্যাপারে বিবিসি’কে সোয়ানসি বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. ফিলিপ টকার বলেন, “এটি মস্তিষ্কের কার্যক্রমের সুগভীর ক্ষতি করে।এটি অনেকটা এরকম যে, ব্যক্তি যখন জটিল কোন কাজ করতে থাকে তখন তার ভুল করার সম্ভাবনা বেড়ে যায় এবং ভুলেও যেতে পারে।”
তবে সুখবর হচ্ছে, মানুষ এই পালার কাজ ছেড়ে দিলে তখন মস্তিষ্ক তার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে শুরু করে। এজন্য পাঁচ বছর বা তার বেশি সময় লেগে যেতে পারে।