শ্রীলঙ্কায় ভূমিধসে নিহত ১০০

দক্ষিণ-মধ্য শ্রীলঙ্কায় ভূমিধসের কাদা ও ধ্বংসস্তুপের নীচে চাপা পড়া হতভাগ্য কারো আর বেঁচে থাকার আশা নেই বলে জানিয়েছেন দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী মাহিন্দা অমরাউয়িরা।

>>রয়টার্স
Published : 30 Oct 2014, 04:18 AM
Updated : 30 Oct 2014, 01:21 PM

বৃহস্পতিবার সকালের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গেই ভূমিধসের ব্যাপকতা উপলব্ধি করেন উপস্থিত উদ্ধারকারীরা।

রাজধানী কলম্বো থেকে ১৯০ কিমি পূর্বে চা-বাগানের ভিতরে অবস্থিত গ্রাম হালদুম্মুল্লায় বুধবার ভূমিধসের এ ঘটনা ঘটে। কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টিপাতে সৃষ্ট ভূমিধসে পাহাড়ের কোলে অবস্থিত তিন কিমি লম্বা গ্রামটি সম্পূর্ণ চাপা পড়ে, এখানে ১৫০টির মতো বাড়িঘর ছিল।

প্রতিকূল আবহাওয়া ও অন্ধকার নেমে আসায় বুধবার উদ্ধার অভিযান ব্যাহত হওয়ার পর বন্ধ রাখতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে উদ্ধার কাজ আবার শুরু করা হয়েছে।

গ্রামটি পরিদর্শন করে যাওয়া মন্ত্রী অমরাউয়িরা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, “সেখানে কেউ জীবিত আছে বলে আমার মনে হয় না।”

আগের রাতে নিহতের সংখ্যা ৩০০ জনের মতো হতে পারে বলা হলেও অমরাউয়িরা সেই সংখ্যা কমিয়ে ১০০ জনের মতো মানুষ নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন।

নিহতের সংখ্যা কেন কম হবে তার ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, “ধসে পড়া মাটিতে ১০০ জনের মতো চাপা পড়েছেন। দুর্ঘটনার সময় কিছু শিশু ও কিছু চা শ্রমিক তাদের বাড়িতে ছিল না।”

তবে শ্রীলঙ্কার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্রের শেষ হিসাবে নিহতের সংখ্যা ৩০০ জনই দেখানো হয়েছে।

ভূমিধসের সময় গ্রামটির অধিকাংশ শিশু স্কুলে ছিল। স্কুল থেকে ফিরে তারা তাদের মাটির ও সিমেন্টের তৈরি ঘরগুলো খুঁজে পায়নি, স্তুপকৃত মাটি ও কাদার দিকে বিহ্বলভাবে তাকিয়ে ছিল তারা।

আবারো ভূমিধস হতে পারে এমন সতর্কতা জারির পর শিশুসহ প্রায় ৩০০ মানুষ কাছের স্কুল ঘরে রাত্রিযাপন করেন।

মন্ত্রী অমরাউয়িরা জানিয়েছে, ভূমিধসের আশঙ্কা থাকায় ২০০৫ ও ২০১২ সালে দুইবার গ্রামবাসীদের এলাকাটি ছেড়ে অন্য জায়গায় চলে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছিল, কিন্তু অনেকেই সেই পরামর্শ উপেক্ষা করে এখানে থেকে যায়।

মধ্য সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া ব্যাপক বৃষ্টিপাতে অনেকগুলো ভূমিধসের ঘটনায় বিভিন্ন সড়ক ক্ষতিগ্রস্থ হলেও বুধবারের আগে কোনো প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি।

তল্লাশি ও উদ্ধার অভিযানের গতি বাড়ানোর জন্য ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীর ভারী উদ্ধারকারী যন্ত্রপাতি পাঠানো হয়েছে বলে এক ট্যুইটে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপক্ষে।

পাহাড়ি ওই চা-বাগান এলাকায় বসবাসরত বেশিরভাগ মানুষ তামিল বলে জানিয়েছে রয়টার্স। ব্রিটিশ আমলে সস্তা শ্রমের কারণে এদের ভারতের দক্ষিণাঞ্চল থেকে শ্রীলঙ্কায় নিয়ে আসা হয়েছিল।