বেনগাজিতে প্রচণ্ড লড়াই, নিহত ১৩০

লিবিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর বেনগাজিতে ১০ দিন ধরে সেনাবাহিনীর সঙ্গে ইসলামপন্থি বেসামরিক বাহিনী আনসার আল শরিয়ার লড়াইয়ে অন্তত ১শ’ ৩০ জন নিহত হয়েছেন।

>>রয়টার্স
Published : 27 Oct 2014, 04:49 AM
Updated : 27 Oct 2014, 04:49 AM

রোববার ইসলামপন্থিরা দখল হারানো বড় একটি শিবির পুনুরুদ্ধারের লক্ষ্যে হামলা শুরু করলে শহরজুড়ে তীব্র লড়াই ছড়িয়ে পড়ে।

সাবেক একনায়ক মুয়াম্মাম গাদ্দাফির পতন ও নিহত হওয়ার পর তিন বছর পেরিয়ে গেলেও লিবিয়ার স্থিতিশীলতা ফিরে আসেনি। খনিজ তেল উত্তোলনে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় এই দেশটিতে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা বিরাজ করছে। বেনগাজির পরিস্থিতি তারই একটি খণ্ড চিত্র।

চলতি মাসের প্রথম দিকে এক সাবেক জেনারেল ও সশস্ত্র তরুণদের সমর্থন নিয়ে নাসেন্ট আর্মি বেনগাজির ইসলামপন্থিদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে। এক পর্যায়ে বিমানবন্দর এলাকা ও ১৭ ফেব্রুয়ারি শিবিরের শক্তিশালী ঘাঁটি থেকে তারা ইসলামপন্থিদের হটিয়ে দেয়।

কিন্তু বেনগাজির বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় সেনাবাহিনীর সঙ্গে আল শরিয়ার নতুন লড়াই শুরু হয়। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি প্রধান ভবন আগুনে পুড়ে যায়।

শহরের অন্যান্য অংশেও সেনা ইউনিটগুলো আল শরিয়ার যোদ্ধাদের সঙ্গে লড়াই করছে বলে জানিয়েছেন শহরটির বাসিন্দারা। অব্যাহত লড়াইয়ের কারণে শহরটির বাসিন্দারা বাক্সপ্যাটরা গুছিয়ে শহরটি ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে। লড়াইয়ের পাশাপাশি এটি এখন বেনগাজির নিয়মিত দৃশ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।

মে’তে সাবেক জেনারেল খলিফা হাফতার আল শরিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে সেনাবাহিনীর পক্ষ নেয়। এর পর থেকে বেনগাজিতে দুপক্ষের মধ্যে লড়াই চলছে।

২০১২ সালে বেনগাজির যুক্তরাষ্ট্র কন্স্যুলেটে হামলা চালিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে হত্যার জন্য এই আনসার আল শরিয়াকেই দায়ী করেছে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো।

গাদ্দাফির বিরুদ্ধে অস্ত্র নিয়ে লড়াই করা সাবেক বিদ্রোহীরা, দেশের ক্ষমতা ও তেল রপ্তানির আয়ে ভাগ বসানোর জন্য, নিজেরাই ব্যাপক লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়েছেন।

সশস্ত্র প্রতিদ্বন্দ্বী নৃগোষ্ঠি ও বিভিন্ন রাজনৈতিক উপদলে বিভক্ত হয়ে পড়েছে লিবিয়া। অগাস্টে পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর মিসরাতা’র একটি সশস্ত্র গোষ্ঠি রাজধানী ত্রিপোলি দখল করে নেয়। তারা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের স্বীকৃত প্রধানমন্ত্রী আব্দুল্লাহ আল থিন্নিকে দেশের পূর্বাংশে সরে যেতে বাধ্য করেন।

এরপর থেকে এক দেশে দুটি সরকার নিজেদের বৈধ বলে দাবী করে আসছে। এতে তেলসমৃদ্ধ এই দেশটি গৃহযুদ্ধের দিকে চলে যাচ্ছে বলে আশঙ্কা করছে প্রতিবেশী দেশগুলো।

বেনগাজি ও দেশের অন্যান্য জায়গায় পরিস্থিতি আরো নাজুক হয়েছে সশস্ত্র গোষ্ঠিগুলোকে সেনাবাহিনী দমন করতে না পারায়। এসব গোষ্ঠির কাছে সেনবাহিনীর তুলনায় আরো অত্যাধুনিক ও উন্নত অস্ত্র থাকায় এদের সঙ্গে পেরে উঠছে না রাষ্ট্রিয় বাহিনী।

লিবিয়ার সাবেক বিমান বাহিনীর কয়েকটি বিমান হাফতারের বাহিনীর দখলে আছে। তবে লিবিয়ায় জঙ্গি উত্থানে উদ্বিগ্ন প্রতিবেশী মিশর হাফতারকে সমর্থন দিচ্ছে বলে অভিযোগ বিরোধীদের। হাফতার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

মিসরাতার বাহিনী ত্রিপোলি দখল করে নেয়ার পর বেশিরভাগ বিদেশী দূতাবাস লিবিয়ার রাজধানী থেকে তাদের কর্মীদের প্রত্যাহার করে নেয়।