বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে বলে শনিবার বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়।
পশ্চিম আফ্রিকার তিন দেশ সিয়েরা লিওন, লাইবেরিয়া ও গিনিতে মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়েছে ইবোলা। এই তিনটি দেশের বাইরেও অন্যান্য দেশে ২৭ জন ইবোলায় আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে নাইজেরিয়ায় আটজন, মালিতে একজন ও যুক্তরাষ্ট্রে একজন মারা গেছেন।
ইবোলার প্রাদুর্ভাব ঘটা সর্বশেষ দেশ মালি। সেখানে এই রোগে আক্রান্ত হয়ে দুই বছর বয়সী একটি মেয়ে শিশু মারা গেছে। এছাড়া ৪০ জনের বেশি মানুষ ওই শিশুটির সংস্পর্শে এসেছিলো বলে খবর পাওয়া গেছে।
ডব্লিউএইচও’র প্রতিবেদন অনুযায়ী ইবোলায় আক্রান্ত হয়ে লাইবেরিয়ায় ২,৭০৫ জন, সিয়েরা লিওনে ১,২৮১ জন এবং গিনিতে ৯২৬ জন নিহত হয়েছে।
ডব্লিউএইচও’র হিসাবে, শনিবার পর্যন্ত ইবোলায় আক্রান্ত হয়েছে ১০ হাজার ১৪১ জন। এই সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছে তারা।
সংস্থাটি জানায়, ইবোলা আক্রান্ত অনেককেই আত্মীয়-স্বজনরা চিকিৎসা কেন্দ্রে না পাঠিয়ে বাড়িতে রেখে দিচ্ছে। অনেক চিকিৎসাকেন্দ্রে নতুন রোগীদের জায়গাও হচ্ছে না।
এখন পর্যন্ত আটটি দেশে ইবোলা ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির সন্ধান পাওয়া গেছে। এর মধ্যে সেনেগাল ও নাইজেরিয়াকে ইবোলা মুক্ত দেশ ঘোষণা করেছে ডব্লিউএইচও।
নিউ ইয়র্ক এবং নিউ জার্সির গভর্নররা পশ্চিম আফ্রিকা থেকে আসা চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী যারা ইবোলা রোগীদের সংস্পর্শে গিয়েছেলেন তাদেরকে ২১ দিন নির্জনে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
আর যারা নিশ্চিতভাবে ইবোলা আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসেনি কিন্তু পশ্চিম আফ্রিকা থেকে এসেছে তাদের উপরেও স্বাস্থ্যকর্মীরা নজর রাখছেন।
এই নিয়মের অধীনে প্রথমবারের মতো একজন নারী স্বাস্থ্যকর্মীকে জনবিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়। শুক্রবার তিনি লিবার্টি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। ওই সময় তার শরীরে অসুস্থতার কোন লক্ষণ পাওয়া না গেলেও পরে শরীরের তাপমাত্র বাড়তে থাকে।
প্রাথমিক পরীক্ষায় ওই নারীর শরীরে ইবোলা ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি বলে নিউ জার্সির স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে। তাকে এখনো জনবিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছে।
সম্প্রতি নিউ ইয়র্কের চিকিৎসক ক্রেইগ স্পেন্সারের শরীরে ইবোলা ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। তিনি গিনিতে ইবোলা আক্রান্তদের নিয়ে কাজ করেছিলেন।
এদিকে মালিতে মারা যাওয়া শিশুটি গিনি থেকে সেখানে গিয়েছিল বলে জানা গেছে।
গিনিতে শিশুটির মা ইবোলায় মারা গেলে স্বজনরা তাকে মালিতে নিয়ে যায়। এজন্য শিশুটিকে বাসে করে ছয়শ মাইলের বেশি পথ পাড়ি দিতে হয়।
ডব্লিউএইচও জানায়, শিশুটির এই বাস ভ্রমণই উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাসে ভ্রমণের সময় বহু মানুষ তার সংস্পের্শে এসেছিলো বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।