বিশ্বব্যাপী প্রতিবাদের মধ্যে ইরানে নারীবন্দির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর

বিশ্বব্যাপী প্রবল প্রতিবাদ ও সমালোচনার মধ্যে শেষ পর্যন্ত ইরানের মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এক নারীর দণ্ড কার্যকর করেছে দেশটির সরকার।

নিউজ ডেস্ক>>বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Oct 2014, 10:59 AM
Updated : 25 Oct 2014, 12:52 PM

রেহানে জাবারি নামে ২৬ বছর বয়সী ওই নারীকে তেহরানের কারাগারে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় বলে বিবিসি জানিয়েছে।

বিবিসির সঙ্গে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে জাবারির মা সোলেহ পাকরাভান মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের কথা নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, তিনি কবরস্থানে তার মেয়ের মৃতদেহ দেখার জন্য যাচ্ছেন।

এরআগে চলতি মাসের প্রথমদিকে বিবিসি জানিয়েছিল, জাবারির দণ্ড কার্যকর ১০ দিনের জন্য স্থগিত করা হয়েছে।

বিবিসি এও জানিয়েছিল, এই দণ্ডের বিরুদ্ধে মানবাধিকার কর্মীরা ব্যাপক প্রতিবাদ জানানোর পর আপাতত ওই নারীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হচ্ছে না।

মানবাধিকার আন্দোলনকারীরাও তখন তাদের অনলাইন প্রচারণায় দাবি করেছেন, রাষ্ট্র তার দণ্ড কার্যকর ১০ দিন পিছিয়ে দিয়েছে।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি বলছে, তদন্তে ব্যাপকমাত্রায় গাফিলতি ছিল ও নিঃসংশয় না হওয়ার পরও তাকে দণ্ডিত করা হয়েছে।

২০০৭ সালে মোর্তেজা আব্দুলালি সারবান্দিকে খুন করার অভিযোগে জাবারিকে গ্রেপ্তার করা হয়। জাবারি দাবি করেন, সারবান্দি তাকে যৌনপীড়ন করতে চেয়েছিলেন। পাশাপাশি তিনি এও দাবি করেন, তিনি ছুরিকাঘাত করলেও খুনটি করেছেন অন্যকেউ।

সারবান্দি ছিলেন ইরানের গোয়েন্দা মন্ত্রণালয়ের কর্মী।

গ্রেপ্তারের পর জাবারিকে দুইমাস নির্জন কারাগারে বন্দি রাখা হয়। ওই সময় তাকে তার পরিবার কিংবা আইনজীবীর সঙ্গে দেখা করতে দেয়া হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে।

২০০৯ সালে তাকে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড দেয় তেহরানের অপরাধ আদালত।

অ্যামনেস্টি বলছে, যদিও জাবারি স্বীকার করেছেন তিনি আব্দুলালিকে পেছন থেকে একবার ছুরিকাঘাত করেছেন। কিন্তু জাবারি অভিযোগ করেছেন সেসময় ওইবাড়িতে আরো একজন ছিলেন যে কিনা প্রকৃতপক্ষে এই খুনটি করেছেন।

ধারণা করা হয়, জাবারির এই অভিযোগ কখনোই গুরুত্বসহকারে তদন্ত করা হয়নি।

জাবারির মৃত্যুদণ্ড ১০ দিন স্থগিতের পরপরই ফেইসবুক, ট্যুইটারসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই দণ্ড স্থগিতের আহ্বান জানিয়ে প্রচারণা চালানো হয়। প্রচারণাকারীরা হ্যাসট্যাগ #সেভরেহানেহজাবারি ব্যবহার করেন। কারাগারের বাইরে প্রতিবাদের একটি ছবিও অনলাইনে পোস্ট করা হয়।

এই সময়ের মধ্যে, জাবারির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর স্থগিত করতে আব্দুলালি সারবান্দির পরিবারের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতা হতে পারে বলে অনলাইন আন্দোলকারী ও ব্লগাররা আশা করেছিলেন।

কিন্তু সেই কাঙ্ক্ষিত সমঝোতা সম্ভবত হয়নি।