শনিবার জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে দেয়া ভাষণে রুশ প্রতিনিধি দলের নেতা পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ এসব কথা বলেন।
ইউক্রেইনের গৃহযুদ্ধ নিয়ে সৃষ্ট বিরোধের জেরে রাশিয়ার ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। গত শতাব্দির ঠাণ্ড লড়াইয়ের পর পশ্চিমা শক্তিগুলো ও রাশিয়ার সম্পর্ক সবচেয়ে নাজুক অবস্থায় এসে ঠেকেছে।
এই পরিস্থিতিতেই সাম্প্রতিক বৈশ্বিক বিভিন্ন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্রদেশগুলোর ভূমিকার সমালোচনা করেন ল্যাভরভ।
“যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা জোটের রাষ্ট্রগুলো নিজেদের গণতান্ত্রিক, আইনের শাসন ও মানবাধিকারে উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরে, কিন্তু জাতিসংঘের ঘোষণানুযায়ী রাষ্ট্রগুলোর সার্বভৌম সাম্যতার গণতান্ত্রিক নীতি তারা প্রত্যাখান করে এবং কী ভালো আর কী মন্দ, সবার জন্য তা নির্ধারণের চেষ্টা করে,” বলেন তিনি।
“নিজের স্বার্থ ধরে রাখার জন্য একতরফাভাবে শক্তি ব্যবহার করার অধিকারের প্রকাশ্য ঘোষণা দিয়েছে ওয়াশিংটন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে সব শক্তির মিলিত অভিযানের অস্বস্তিকর ফলাফল সত্বেও সামরিক হস্তক্ষেপ এখন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
যুক্তরাষ্ট্রের ব্যর্থতার উদাহরণ হিসেবে তিনি ১৯৯৯ সালে কসভো যুদ্ধের সময় যুগোশ্লাভিয়ায় নেটোর বোমাবর্ষণ, ২০০৩ সালের ইরাক দখল, আফগানিস্তানের যুদ্ধ এবং ২০১১ সালে লিবিয়ায় নেটোর হস্তক্ষেপের বিষয়গুলো উল্লেখ করেন।
ইউক্রেইনের বিষয়ে মস্কোর দৃষ্টিভঙ্গীর পুনারাবৃত্তি করে “ইউক্রেইনের ক্যু”কে সমর্থন করার জন্য তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নকে অভিযুক্ত করে ইউক্রেইনের পরবর্তী বিপর্যয়ের জন্য এসব পক্ষকে দায়ী করেন।
ভাষণে লিবিয়ার রাসায়নিক অস্ত্রভাণ্ডারের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে তথ্য দাবী করে ল্যাভরভ বলেন, “আমরা বুঝতে পারছি, (নিরাপত্তা পরিষদের) সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আমাদের নেটো সহকর্মীরা দেশটিতে বোমাবর্ষণ করার পর নিজেদের সৃষ্ট গুরুতর বিশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে অপরাগ।”
“এ বিষয়ে অন্ধ হয়ে থাকলে লিবিয়ার নিয়ন্ত্রণহীন রাসায়নিক অস্ত্রভাণ্ডারে সমস্যা গুরুতর হয়ে উঠতে পারে,” বলেন তিনি।
জাতিসংঘের ২০১১’র সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করার রুশ অভিযোগ অস্বীকার করেছে পশ্চিমা দেশগুলো।