বর্তমানে চীনের ১৩০টির বেশি প্রতিষ্ঠান এ ব্যবসায় জড়িত। যেখানে ১০ বছর আগে মাত্র ২৮টি কোম্পানি এই ব্যবসা করত।
সম্প্রতি অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, “কোন সন্দেহ নেই যে এসব যন্ত্রের কয়েকটি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তাদের বিভিন্ন বৈধ অভিযানে ব্যবহার করে। তবে চীন এমন কিছু যন্ত্রও রপ্তানী করে যেগুলো খুবই অমানবিক। বিভিন্ন দেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সেগুলো ব্যবহারের মাধ্যমে মানবাধিকার লঙ্ঘনের পথে সহজেই এগিয়ে যেতে পারে।”
গত বছর চীনের উচ্চ আদালত বন্দি নির্যাতন নিষিদ্ধ করেছে। তারপরও দেশটিতে ব্যাপকহারে বন্দি নির্যাতন হয় বলে জানিয়েছেন মানবাধিকার রক্ষা কর্মীরা।
অ্যামনেস্টি তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, চীন একমাত্র দেশ যেখানে ‘স্পাইকড ব্যাটন’ প্রস্তুত করা হয়। এই যন্ত্রটি ‘নির্যাতনে ব্যবহারের জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা’ বলে জানায় সংস্থাটি।
চীনের সাতটি কোম্পানি এসব যন্ত্রের বিজ্ঞাপন দেয় এবং প্রায় ২৯টি কোম্পানি ‘ইলেক্ট্রিক শক ব্যাটনস’ বিক্রি করে। “ইলেক্ট্রিক শক ব্যাটনস ব্যবহার করে নিরাপত্তা কর্মকর্তারা শরীরে দীর্ঘসময় স্থায়ী দাগ তৈরি না করে সহজে শরীরের বিভিন্ন সংবেদনশীল অঙ্গে তীব্র বেদনাপূর্ণ শক দিতে পারে।”
নির্যাতনে ব্যবহার করা যন্ত্রগুলো মূলত এশিয়া ও আফ্রিকা মহাদেশের বিভিন্ন দেশে রপ্তানী করা হয়। যেসব দেশে এই যন্ত্রগুলো বেশি ব্যবহৃত হয় তার মধ্যে সেনেগাল, মিশর, ঘানা, কম্বোডিয়া ও নেপালের নাম রয়েছে।
অ্যামনেস্টির নিরাপত্তা বানিজ্য ও মানবাধিকার বিষয়ক গবেষক প্যাট্রিক উইলকেন বলেন, “চীনের দুর্বল রাপ্তানী নীতির কারণেই নির্যাতন ও দমনপীড়ন যন্ত্র রপ্তানীর এ বাণিজ্য উন্নতি লাভ করেছে।”
ইউরোপীয় ইউনিয়ন নির্যাতনে ব্যবহার হয় এমন যন্ত্রের বাণিজ্য নিষিদ্ধ করেছে। ২০০৬ সাল থেকে এ আইন কার্যকর হওয়াও শুরু হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রও এই বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণে আইন করেছে। তারপরও আইনের ফাঁক গলে এই ব্যবসা চলছেই। এই ফাঁকগুলো বন্ধ করা প্রয়োজন বলে মনে করে অ্যামনেস্টি।