কিন্তু স্বাধীনতার পক্ষে-বিপক্ষে হাড্ডাহাড্ডি জনসমর্থনের কারণে চূড়ান্ত রায় প্রকাশের আগে এ নিয়ে আস্থাশীল মন্তব্য করতে পারছেন না কেউই।
বুধবার বিবিসি’র প্রতিবেদনে বলা হয়, স্কটিশদের স্বাধীনতার প্রশ্নে গণভোটের একদিন আগে এ নিয়ে চালানো তিনটি জরিপ সংযুক্ত শাসনের পক্ষে এসেছে।
পোলস্টের্স আইসিএম, ওপিনিয়াম এবং সার্ভেশন এর চলানো জরিপে দেখা যায়, ৪৮ শতাংশ ভোটার স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতার চান। আর ৫২ শতাংশ সমর্থক চান যুক্তরাজ্যভুক্ত থাকতে।
তবে যারা এখনো সিদ্ধান্তহীন বলে জানিয়েছেন তাদেরকে এ জরিপে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। মোট ভোটারের ৮ থেকে ১৪ শতাংশ এখনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেননি বলে জানিয়েছেন। তদের মত চূড়ান্ত রায়ে বড় ভূমিকা রাখবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার ভোট গ্রহণ হবে। চার কোটি তিন লাখ স্কটিশ ভোটার এতে অংশ নিয়ে দেশের ভবিষ্যতের বিষয়ে মত দিতে পারবেন।
জরিপের ফল নিয়ে স্ট্রাথক্লাইড বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক জন কুরটিক দ্য স্কটসম্যান পত্রিকায় বলেন, “ফলাফল কোন দিকে যাবে এটা বলা খুবই কঠিন। এই মুহূর্তে মনে হচ্ছে ‘হ্যাঁ’ সমর্থকরা ব্যর্থ হতে যাচ্ছে। যদিও আমি সব সময়ই বলে এসেছি ‘না’ সমর্থকরাই হারবে।”
‘না’ সমর্কদের উজ্জীবিত করতে প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন, ফুটবল তারকা ডেভিড বেকহ্যাম কাজ করে যাচ্ছেন।
স্কটল্যান্ডের জনপ্রিয় নেতা অ্যালেক্স সালমন্ডের স্বাধীনতা অর্জনের যুক্তিকে টেক্কা দিতে ব্রিটিশ সরকার ওই অঞ্চলে বড় অঙ্কের তহবিল বরাদ্দের ঘোষণা দিয়েছে। নিজেদের অর্থের ওপর স্কটল্যান্ডের নাগরিকদের সর্বময় নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতিও দেয় সরকার।
এছাড়া, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও লেবার পার্টির নেতা গর্ডন ব্রাউনের উদ্যোগে ব্রিটেনের তিনটি প্রধান রাজনৈতিক দলের নেতারা তহবিলের সমীকরণ ধরে রাখার প্রতিশ্রুতি দেন। ফলে রাষ্ট্রীয় তহবিলের বড় অংশ স্কটল্যান্ডের উন্নয়নে ব্যয় হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
স্কটিশরা যদি ৩০৭ বছরের পুরনো ঐক্য ভেঙে বেরিয়ে না যায়, তবে দ্রুত যুক্তরাজ্যের কাঠামো পরিবর্তন করে স্কটল্যান্ডের হাতে অনেক বেশি ক্ষমতা দেয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন ব্রিটেনের নেতারা।
গণভোটে স্কটল্যান্ড স্বাধীন হয়ে গেলে বেশ চাপে পড়ে যাবেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। যুক্তরাজ্য থেকে স্কটল্যান্ডের পৃথক হওয়া ঠেকাতে শেষ চেষ্টা হিসেবে ওই অঞ্চলে সফর করেন তিনি।
সেখানে আবেগঘন কন্ঠে ব্রাউন বলেন, ফিরে যাওয়ার কিছু নেই; যে কোনো দূরত্বই বেদনাদায়ক। স্কটল্যান্ডবাসী তাকে পছন্দ না করলে; প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রীর পদও ছেড়ে দেবেন বলে ঘোষণা দেন ব্রিটেনের এই সরকার প্রধান।
তবে ক্যামরনের সব প্রস্তবাই ফিরিয়ে দিয়েছেন স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা স্কটিশ নেতা সালমন্ড।