আইএস-সিরিয়া সরকার যুদ্ধাপরাধ করছে: জাতিসংঘ

সিরিয়া সরকার এবং ইসলামিক স্টেট (আইএস) উভয়ই একে অপরের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ করছে। জাতিসংঘ তদন্তকারীরা বুধবার একথা বলেছেন।

>>রয়টার্স
Published : 27 August 2014, 01:44 PM
Updated : 27 August 2014, 01:44 PM

সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে ইসলামিক স্টেট বাহিনী খুন, নির্যাতন, মৃত্যুদণ্ড কার্যকরসহ নানা ভয়াবহ সহিংস তৎপরতা চালাচ্ছে।

ওদিকে, সরকারি বাহিনী আবাসিক এলাকাগুলোতে ব্যারেল বোমা হামলা চালাচ্ছে। এর মধ্যে গত এপ্রিলে ৮ টি হামলার ঘটনায় সরকারি বাহিনীর রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের ঘটনাও আছে। অনেকেরই ধারণা ওই সমস্ত হামলায় ক্লোরাইন ব্যবহার করা হয়েছিল।

জেনেভায় প্রকাশিত ৪৫ পাতার প্রতিবেদনে তদন্তকারীরা এসব হামলা ছাড়াও সরকারি পক্ষের অন্যান্য আরো যুদ্ধাপরাধ সংঘটনের কথা বলেছেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সিরিয়া সীমান্ত জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে সহিংসতা। সেইসঙ্গে চরমপন্থার কারণে লড়াইয়ে নৃশংসতা বাড়ছে।

সিরিয়ার জেলে মৃত্যু বাড়ছে। তাছাড়া, ২০১১-১৩ সালে সরকারি আটককেন্দ্র থেকে নেয়া ২৬,৯৪৮ ছবি বিশ্লেষণ করে ধারাবাহিক নির্যাতন এবং বন্দি হত্যার আলামত আরো সুস্পষ্ট হয়েছে।

সরকার পক্ষ নির্বিচারে বয়সে তরুণদের ধরপাকড় করেছে এবং এদের অনেকেই নিখোঁজ হয়েছে বলে জানানো হয়েছে প্রতিবেদনে।

৪৮০ জনের সাক্ষাৎকার এবং দলিলের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে জাতিসংঘের এ তদন্ত প্রতিবেদন।

প্রতিবেদনে সরকারি বাহিনীর মানবতাবিরোধী অপরাধের বর্ণনার পাশাপাশি আইএস জঙ্গিদেরও নৃশংসতার বর্ণনা দেয়া হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, আলেপ্পোয় আইএস নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতে প্রতিনিয়ত প্রকাশ্যেই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হচ্ছে। শিশুদের সামনেই শিরশ্ছেদ করে, কাছ থেকে গুলি করে কিংবা ক্রুশবিদ্ধ করে মারা হচ্ছে বন্দিদের। দেহগুলো ফেলে রাখা হচ্ছে প্রকাশ্যে। সেইসঙ্গে চলছে নির্যাতন, খুন, গুম এমনকি উচ্ছেদ অভিযানও। যা মানবতা বিরোধী অপরাধের সামিল।

গত সপ্তাহান্তে আইএস জঙ্গিরা সিরিয়ায় একটি বিমানঘাঁটি দখলের পর সিরিয়ার সেনাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করছে এবং অনেককে জিম্মি করছে।

আইএস জঙ্গিরা তাদের নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতে বেসামরিক নাগরিকদের বিশেষ করে সংখ্যালঘুদের জন্য স্পষ্টতই বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে বলে এক বিবৃতিতে উল্লেখ করেছেন জাতিসংঘ তদন্ত প্যানেলের চেয়ারম্যান পাউলো পিনহেরিও।

তদন্তকারীরা মানবতা বিরোধী অপরাধের সন্দেহে কয়েকজনের একটি গোপন তালিকা তৈরি করেছে। আন্তর্জাতিক আদালতে তাদের বিচার হওয়া উচিত বলে মনে করেন তারা।