সোমবার আলাস্কার ‘কোডিয়াক লঞ্চ কমপ্লেক্স’ থেকে পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণের চার সেকেন্ডের মাথায় যুক্তরাষ্ট্র সেনাবাহিনীর এই মারণাস্ত্র বিধ্বস্ত হয় বলে খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
মাক ৫, বা ঘণ্টায় সাড়ে তিন হাজার মাইল গতির এই ক্ষেপণাস্ত্রকে বলা হচ্ছে ‘হাইপারসনিক উইপন’, যা যুক্তরাষ্ট্রের ‘অতি গোপনীয়’ একটি প্রকল্প।
পেন্টাগনের বরাত দিয়ে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, উৎক্ষেপণের সময় ত্রুটি ধরা পড়ায় কর্তৃপক্ষ ‘জননিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে’ মিশন স্থগিত করে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাওরিন শ্যুমান বলেন, উৎক্ষেপণের পরপরই ত্রুটি ধরা পড়লে সেটিতে বিস্ফোরণ ঘটানো হয় এবং ক্ষেপণাস্ত্রটি লঞ্চ কমপ্লেক্স এলাকায় বিধ্বস্ত হয়।
এ ঘটনায় কেউ হতাহত হননি বলে তিনি দাবি করলেও কোডিয়াক শহর থেকে ২৫ মাইল দূরে ওই কমপ্লেক্সের কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে- সে বিষয়ে কিছু বলেননি।
উৎক্ষেপণের সময় পরীক্ষামূলক ওই ক্ষেপণান্ত্রে কোনো ‘ওয়ারহেড’ ছিল না বলেও দাবি করেছেন শ্যুমান।
ডেইলি মেইলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, কোডিয়াকের স্থানীয় সাংবাদিক স্কট ভিট মাইল দশেক দূরের কেপ গ্রেভিলে এলাকা থেকে ওই বিস্ফোরণ দেখতে পান।
সামরিক বিশ্লেষকদের ধারণা, ইরান ও উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপনাস্ত্র ব্যবস্থার উন্নয়নের জবাব হিসাবে যুক্তরাষ্ট্র এই ‘হাইপারসনিক উইপন’ তৈরির চেষ্টা করছে।
অবশ্য গত জানুয়ারিতে চীনও ‘হাইপারসনিক’ ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে। এ বিষয়টিকেও গুরুত্ব দিতে হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রকে।
অবশ্য চীনের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রকল্পটি অনেক বেশি ‘শক্তিশালী’ বলে দাবি করেছেন কার্নেগি এন্ডোমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিসের প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ জেমস অ্যাক্টন।
যুক্তরাষ্ট্রের স্যান্ডিয়া ন্যাশনাল ল্যাবরোটরি ও মার্কিন সেনাবাহিনী ‘অ্যাডভান্সড হাইপারসনিক উইপন’ নামের এই মারণাস্ত্র তৈরিতে কাজ করেছে।
এই প্রযুক্তিতে মারণাস্ত্রটি ছোড়া হয় রকেটের সাহায্যে মহাশূন্যের দিকে তাক করে। নির্দিষ্ট সময় পর রকেটটি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং নিজস্ব গ্লাইডার ব্যবহার করে মারণাস্ত্রটি লক্ষ্যবস্তুর ওপর নেমে আসে।
এই প্রকল্পের প্রথম পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণটি হয় ২০১১ সালের নভেম্বরে। হাইওয়াই থেকে ছোড়া সেই ক্ষেপণাস্ত্রটি দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের কোয়াজালেইন অ্যাটল পর্যন্ত পৌঁছায়।
এর পাল্লা আরো নিখুঁত করে এগিয়ে নেয়াই ছিল সোমবারের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণের উদ্দেশ্য।