বিকিনি পরতে বলে বিতর্কে সাবেক ফরাসি মন্ত্রী

ফ্রান্সের এক সমুদ্র সৈকতে হিজাব পরা এক নারীকে দেখে এ নিয়ে আপত্তি তুলেছেন দেশটির সাবেক পরিবারমন্ত্রী (মিনিস্টার ফর ফ্যামিলি) নাদিনে মরানো। সৈকতে বিকিনি পরা ফ্রান্সের মেয়েদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 August 2014, 03:27 PM
Updated : 20 August 2014, 03:39 PM

যুক্তরাজ্যের ‘দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট’ পত্রিকার খবরে বলা হয়, সাবেক মন্ত্রীর ওই বক্তব্য ফ্রান্সের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, রাজনীতিক ও অধিকারকর্মীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।

খবরে আরো বলা হয়, সম্প্রতি মরানো তার ফেইসবুকে একটি ছবি পোস্ট করেছেন। এতে দেখা যায়, সৈকতে এক মুসলিম নারী হিজাব পরে বসে আছে। ঢিলেঢালা পোশাকে আবৃত ছিলেন তিনি। তার স্বামী নগ্ন হয়ে সমুদ্রস্নান করছিল, বসে বসে তা দেখছিলেন ওই নারী।

ওই ছবি ফেইসবুকে দিয়ে মরানো লিখেন, “আপনি যখন ফ্রান্সের মতো একটি ধর্মনিরপেক্ষ দেশে আসবেন, সেক্ষেত্রে আমাদের সংস্কৃতি ও নারীর স্বাধীনতার মতো বিষয়গুলোর মানার বাধ্যবাধকতা রয়েছে আপনার। অন্যথায় আপনি অন্য কোথাও যেতে পারেন।”

ফেইসবুক পাতায় হিজাব পরা ওই নারীর ছবি ও পাশাপাশি বিকিনি পরা একজন নারীর ছবি পোস্ট করেন তিনি।

মরানো একজন মধ্য ডানপন্থি রাজনীতিক। সাবেক প্রেসিডেন্ট নিকোলা সারকোজির সঙ্গে সখ্য রয়েছে তার (সারকোজির ভক্ত)। ফ্রান্সের অপেক্ষাকৃত দলনিরপেক্ষ রাজনীতিকরা ওই ছবির সমালোচনা করেন। এছাড়া, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও আলোচনার ঝড় ওঠে।

মধ্য ডানপন্থি নেতা ভেলিরি ‘স্বাধীনতার’ সংজ্ঞা দিয়ে করা তার এই পোস্টের সমালোচনা করেছেন। ভেলিরি বলেন, “আইনের ভেতরে থেকে মানুষ যা করে, তাদেরকে তাই করতে দেয়া উচিত।”
ফ্রান্সের সমাজতান্ত্রিক রাজনীতিক ইন বোসাত বলেন, জেনোফোবিয়া বা অভিবাসী ভীতি এখন আর ছুটির দিনে সীমাবদ্ধ নেই, এটা এখন সমুদ্র সৈকতেও ছড়িয়ে গেছে।
নিজের ফেইসবুকে সৈকতের ছবি দেয়ার পর নিচে এর সমালোচনাও করেন মরানো।
“ছেলেটি সৈকতে কাপড় খুলে সাঁতার কাটবে, আর মেয়েটি পারবে না। যে দেশ মানবাধিকারের সূচনা করল সেখানে এমন চিত্র সত্যিই বিরক্তিকর”, বলেন মরানো।
ফৌজিয়া রাকজা বৌজাবি নামের এক ব্লগার লেখেন, ফ্রান্সে প্রতিবছর যৌন হয়রানির শিকার ২০ হাজার নারী নিয়ে মরানোর উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত।
এতো কেবল গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর। এর বাইরেও অনেক মেয়ে হয়রানির শিকার হচ্ছে। সৈকতে বসা হিজাব পরা এসব নারী নিয়ে কথা না বলে তার উচিত মেয়েদের যৌন হয়রানির বিষয়ে কথা বলা। তাছাড়া, হিজাব পরা ওই নারী নিজের ইচ্ছাতেও কাজটি করে থাকতে পারেন।
কার অনুমতি নিয়ে মরানো অন্যের ছবি নিজের ফেইসবুকে দিলেন, তা নিয়েও প্রশ্ন করেন অনেকে।