এবোলা সংক্রমণ: লাইবেরিয়ায় জরুরি অবস্থা

প্রাণঘাতী এবোলা ভাইরাসের সংক্রমণ মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া আশঙ্কায় লাইবেরিয়ার প্রেসিডেন্ট এলেন জনসন সার্লিফ দেশটিতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন।

নিউজ ডেস্ক>>বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 August 2014, 09:08 AM
Updated : 8 August 2014, 02:56 PM

বিবিসি বলছে, রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত টেলিভিশনে দেয়া ভাষণে তিনি জানিয়েছেন, কিছু নাগরিক অধিকার অবশ্যই স্থগিত করা হবে।

লাইবেরিয়াসহ গিনি, সিয়েরা লিওন ও নাইজেরিয়াতেও এবোলা ভাইরাসের সংক্রমণে ৯৩০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

এই ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে করণীয় নির্ধারণে বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থার (ডব্লিউএইচও)বিশেষজ্ঞরা সুইজ্যারল্যান্ডের জেনেভায় বৈঠক করছেন।

দুইদিনের এই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে, এ ব্যাপারে বৈশ্বিক স্বাস্থ্য সতর্কতা জারি করা হবে কিনা।

বুধবার এক বিবৃতিতে ডব্লিওএইচও জানিয়েছে, পশ্চিম আফ্রিকায় এই ভাইরাসে আক্রান্ত প্রায় ৯৩২ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে বেশিরভাগের মৃত্যু হয়েছে লাইবেরিয়ায়।

৯০দিনের রাষ্ট্রীয় জরুরি অবস্থা জারি করে এক বিবৃতিতে প্রেসিডেন্ট সার্লিফ বলেন, “লাইবেরিয়ার সরকার ও জনগণকে রাষ্ট্র ও জীবন রক্ষায় কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন।”

তিনি আরো বলেন, “অজ্ঞতা ও দারিদ্র বরাবরের মতোই ধর্মীয় এবং সাংস্কৃতিকচর্চার মধ্যে ঢুকে গেছে যা এই রোগের বিস্তার ঘটাচ্ছে।”

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, লাইবেরিয়ায় এবোলা ভাইরাসের মারাত্মক পরিস্থিতির কারণ হচ্ছে- অনেকেই অসুস্থ আত্মীয়দের নিরাময়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার পরিবর্তে বাড়িতেই রাখছেন।

এ ব্যাপারে বৈশ্বিক উদ্বেগের জবাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেছেন, এই অসুস্থতা নিয়ন্ত্রণযোগ্য এবং তা খুবই সাফল্যের সঙ্গে অব্যাহত রাখা সম্ভব যদি আমরা সঠিক প্রটোকল অনুসরন করি।

এদিকে সৌদি আরব কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সম্ভাব্য এবোলা ভাইরাসে আক্রান্ত একজন সৌদিব্যক্তি জেদ্দায় মারা গেছেন। ওই ব্যক্তি সিয়েরা লিওন সফর করেছিলেন।

সৌদি ওই ব্যক্তির যদি সত্যিই এবোলা ভাইরাসের সংক্রমণে মৃত্যু হয়ে থাকে তবে তা হবে আফ্রিকার বাইরে কোন অঞ্চলে প্রথমবারের মতো এই ভাইরাসের সংক্রমণে মৃত্যুর ঘটনা।

নাইজেরিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী ওনেবুচি চুকাও এবোলার এই বিস্তারকে জাতীয় দুর্যোগ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি আরো যোগ করে বলেছেন, “বিশ্বের সবাই ঝুঁকিতে রয়েছেন”, কারণ বাতাসের কোন সীমানা নেই।

এবোলা ভাইরাসের কোনো প্রতিষেধক এখনো আবিষ্কার হয়নি। প্রাথমিক পর্যায়ে আক্রান্ত রোগীদের ৯০ শতাংশই মারা যাচ্ছিলেন। তবে বর্তমানে তা কমে ৬০ শতাংশে নেমে এসেছে।

আক্রান্ত ব্যক্তির উচ্চ তাপমাত্রার জ্বর, রক্তক্ষরণ, স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতি, ডায়রিয়া, বমি হয়ে থাকে। রোগের লক্ষণ প্রকাশের সময় ২ থেকে ২১ দিন। মানবদেহের তরল বর্জ্য যেমন- থুথু, ঘাম ইত্যাদির মাধ্যমে ভাইরাসটি সংক্রমিত হয়ে থাকে বলে জানা গেছে।