স্কুলে হামলার নিন্দায় জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র

গাজায় বাস্তুচ্যুত বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের আশ্রয়ে নেয়া জাতিসংঘের একটি স্কুলে ইসরায়েলি হামলার নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্র।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 July 2014, 05:39 AM
Updated : 31 July 2014, 05:39 AM

বুধবার চালানো ওই হামলায় ১৬ জন বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।

এ দিন গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ১০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন ফিলিস্তিনি এক কর্মকর্তা।

স্কুলে হামলাকে “অগ্রহযোগ্য” ও “নীতিবিরুদ্ধ” বলে নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন।

আত্মপক্ষ সমর্থন করে ইসরায়েল দাবী করেছে, স্কুলের পাশ থেকে নিক্ষেপ করা মর্টার গোলার জবাব দিতেই সেখানে হামলা চালানো হয়েছে।

ওই স্কুলে হামলার পরপরই নিকটবর্তী একটি বাজারে আরেকটি ইসরায়েলি হামলায় ১৭ জন নিহত হয়েছেন।

ওই দিনই গাজায় পেতে রাখা বোমার বিস্ফোরণে তিন ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছেন।

এছাড়া গাজার খান ইউনিস এলাকায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় আরো সাতজন গাজাবাসী নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন ফিলিস্তিনি চিকিৎসকরা।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, বুধবার গাজাজুড়ে মোট ১০৬ জন নিহত হয়েছেন।

এদের নিয়ে গাজায় ২৩ দিনের ইসরায়েলি হামলায় মোট ১,৩৪৬ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। নিহতদের অধিকাংশই বেসামরিক মানুষ বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো।

ইসরায়েলি পক্ষে নিহত হয়েছেন মোট ৫৮ জন। এদের মধ্যে ৫৬ জন সেনা ও তিনজন বেসামরিক। নিহত বেসামরিকদের মধ্যে একজন ইসরায়েলে কর্মরত এক থাই রয়েছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।

তিন সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও লড়াই বন্ধ হওয়ার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। বরং ফিলিস্তিনের মূল অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন এ ভূখণ্ডটিতে হামলা চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসরায়েলের মন্ত্রীসভার নিরাপত্তা বিভাগ।

জাতিসংঘের ত্রাণ ও কর্ম সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ জানিয়েছে, বুধবার ভোরে জাবালিয়া শরণার্থি শিবিরে জাতিসংঘের স্কুলটিতে ইসরায়েলি হামলার সময় সেখানে নারী ও শিশুসহ ৩,৩০০ জন ফিলিস্তিনি আশ্রয় নিয়ে ছিল।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় স্কুলটিতে ১৫ জন নিহত ও ১০০ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে। কিন্তু জাতিসংঘ নিহতের সংখ্যা ১৬ জন বলে জানিয়েছে।

কোস্টরিকা সফররত জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন গাজার জাতিসংঘ স্কুলে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন।

“এটা নীতিবিরুদ্ধ। এটা অগ্রহণযোগ্য। এর জবাবদিহিতা ও বিচার হওয়া দরকার,” বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট দপ্তর হোয়াইট হাউস থেকে দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র বার্নাডেট মিয়ান বলেছেন, “হাজার হাজার বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী যাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল, তারা গাজায় জাতিসংঘের নির্দেশিত আশ্রয়কেন্দ্রেও নিরাপদ না হওয়ায় আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।”

পাশাপাশি গাজার জাতিসংঘের আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে অস্ত্র লুকিয়ে রাখার জন্য দায়ীদেরও নিন্দা জানান তিনি।

জাতিসংঘের আক্রান্ত স্কুলটি পরিদর্শন শেষে ইউএনআরডব্লিউএ’র প্রধান পিয়েরে ক্রেইয়েনবল বলেছেন, “আমাদের প্রাথমিক পর্যালোচনা হচ্ছে ইসরায়েলি গোলা আমাদের স্কুলে আঘাত হেনেছে।”

এরপর গাজার ধারাবাহিক হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আন্তরিক রাজনৈতিক উদ্যেগ নেয়ার আহ্বান জানান তিনি।