বিধ্বস্ত গাজায় ঈদ

ইসরায়েলি গোলায় বিধ্বস্ত ঘরবাড়িতে স্বজন হারানোর বেদনা নিয়েই ঈদ উল ফিতর উদযাপন করছে গাজাবাসী।

>>রয়টার্স
Published : 28 July 2014, 05:54 AM
Updated : 28 July 2014, 05:54 AM

এদিকে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের এক জরুরি অধিবেশনে ঈদের দিন এবং পরে কার্যকর ও নিঃশর্ত অস্ত্রবিরতি বজায় রাখার জন্য দুই পক্ষের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে বলে রয়টার্সের এক খবরে জানানো হয়েছে।

ঈদ সামনে রেখে রোববার জাতিসংঘ প্রস্তাবিত আরো ২৪ ঘন্টার যুদ্ধবিরতি মেনে নেয়ার ঘোষণা দেয় গাজা ভূখণ্ড নিয়ন্ত্রণকারী কট্টরপন্থী ফিলিস্তিনি সংগঠন হামাস।

এর আগে ইসরায়েলি মন্ত্রিসভা জাতিসংঘের প্রস্তাব অনুমোদনের ঘোষণা দিলেও তা প্রত্যাখ্যান করেছিল হামাস। তাদের অভিযোগ ছিল, যুদ্ধবিরতির সুযোগে ইসরায়েল নতুন হামলার প্রস্তুতি নেয়।

ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব মেনে নেয়ার ঘোষণা দিলেও গাজায় হামাসের খোড়া সুড়ুঙ্গ ধ্বংস করতে অভিযান অব্যাহত রাখার কথাও বলেছিল। এতে যুদ্ধবিরতি মানার ক্ষেত্রে ইসরায়েলের আন্তরিকতা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে।

জাতিসংঘের প্রস্তাব হামাস প্রত্যাখান করার পর তারা ফের রকেট হামলা চালিয়েছে অভিযোগ করে রোববারই গাজায় নতুন করে গোলাবর্ষণ শুরু করে ইসরায়েল। ওই হামলার মধ্যেই রোববার দুপুরে জাতিসংঘের আহ্বান মেনে নেয়ার কথা জানায় হামাস।

কিন্তু এর কিছুক্ষণের মধ্যে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেননিয়ামিন নেতানিয়াহু হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘণের অভিযোগ তোলেন। ইসরায়েলের জনগণকে রক্ষায় ‘প্রয়োজনীয় সব কিছু’ করারও ঘোষণা দেন তিনি।

অবশ্য তার ওই ঘোষণার পরও ঈদের আগের রাতে তীব্র কোনো লড়াই বা হামলার খবর পাওয়া যায়নি।

দক্ষিণ গাজার রাফাহ এলাকায় ইসরায়েলি হামলায় বিধ্বস্ত আল ফারুক মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করছেন ফিলিস্তিনিরা। ছবি: রয়টার্স।

ইসরায়েলি ঈদের দিনে গাজার বেইত লেহিয়ায় নিহত স্বজনদের কবরের কাছে গিয়ে একাকি বসে থাকতে দেখা যায় এই ফিলিস্তিনি শিশুকে। ছবি: রয়টার্স।

গাজায় অভিযানের ব্যাপকতা আরো বাড়ানো হবে কিনা- সে বিষয়ে রোববার মধ্যরাতে বৈঠকে বসে ইসরায়েলি মন্ত্রিসভা। তবে ওই বৈঠকের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে গণমাধ্যমকে কিছু জানানো হয়নি।
এই পরিস্থিতিতে দুপক্ষের মধ্যে কোনো সমঝোতা না হলেও ঈদের কারণে দুপক্ষই আপাতত লড়াই বন্ধ রাখাকে প্রাধান্য দিচ্ছে বলে অবস্থাদৃষ্টে মনে করা হচ্ছে।
৮ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলের আকাশ, সাগর ও স্থল হামলায় এ পর্যন্ত ১ হাজার ৩১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহত ফিলিস্তিনিদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক ও শিশু।
অন্যদিকে ইসরায়েল জানিয়েছে, লড়াইয়ে তাদের পক্ষের ৪৩ সেনা নিহত ও গাজা থেকে নিক্ষিপ্ত রকেট ও মর্টার হামলায় তিন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় বাস্তুচ্যুত এক লাখ ৬৭ হাজার ২৬৯ জন ফিলিস্তিনি তাদের পরিচালিত স্কুল ও দপ্তরগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে।