এমএইচ১৭: লড়াইয়ে দুরূহ হচ্ছে তদন্তকাজ

দোনেস্কে ইউক্রেইনের বিচ্ছিন্নতাবাদ বিরোধী অভিযানের কারণে মালয়েশীয় বিমান ভূপাতিত হওয়ার ঘটনা তদন্তে সেখানে যেতে পারছে না পর্যবেক্ষকরা।

>>রয়টার্স
Published : 27 July 2014, 06:07 PM
Updated : 27 July 2014, 06:07 PM

সরকারি সেনা ও বিদ্রোহীদের লড়াইয়ের কারণে তদন্তকাজ চালানো দুরূহ হয়ে পড়ছে বলে অভিযোগ করছেন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা।

গত ১৭ জুলাই পূর্ব ইউক্রেইনের দোনেস্ক এলাকায় ভূপাতিত করা হয় মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের যাত্রীবাহী বিমান। ঘটনার জন্য একে অপরকে দায়ী করেছে ইউক্রেইনের সরকার ও বিদ্রোহীরা।

রাশিয়ার দেয়া ক্ষেপণাস্ত্র (বিইউকে) দিয়ে বিদ্রোহীরা ভুল করে বিমানটি ভূপাতিত করেছে বলে গোয়েন্দা তথ্যের বরাত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র অভিযোগ করেছে। তবে রাশিয়া বিদ্রোহীদেরকে এধরনের ক্ষেপণাস্ত্র দেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। বিদ্রোহীরাও বিমান ভূপাতিত করার অভিযোগ নাকচ করেছে।

লড়াই চলছে

দোনেস্কের যে গ্রামটিতে (রাবোভো) মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের এমএইচ১৭ ফ্লাইটটি ভূপাতিত হয়েছিলে সেখানে বিদ্রোহীদের সঙ্গে সরকারি সেনাদের লড়াই তীব্রতর হয়েছে। রোববার আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের একটি দল সেখানে যাওয়ার কথা থাকলেও লড়াইয়ের কারণে তা সম্ভব হয়নি।

ইউক্রেইন সরকার বলছে, তাদের সেনাবাহিনী বিমান দুর্ঘটনাস্থল থেকে বিদ্রোহীদেরকে হটিয়ে দেয়ার অভিযান চালাচ্ছে। বিদ্রোহীরা বিমান ভূপাতিত হওয়ার ঘটনার আলামত নষ্ট করছে বলেও সরকারের অভিযোগ।

ওদিকে, আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, উভয়পক্ষের লড়াইয়ের কারণে ঘটনা তদন্তে জটিলতা বাড়ছে, নষ্ট হচ্ছে আলামতও।

দোনেস্কে ‘অর্গানাইজেশন ফর সিকিউরিটি অ্যান্ড কো-অপারেশন’ ইন ইউরোপ বা ওএসসিই এর ডেপুটি হেড আলেক্সার হেগ বলেন, রোববার তাদের পর্যবেক্ষকরা দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যেতে পারেননি। উভয়পক্ষের সংঘর্ষের কারণে ঘটনাস্থল (ক্রাস সাইট) ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

দোনেস্কের যে অঞ্চলে মালয়েশিয়ার বিমানটি ভূপাতিত করা হয়েছিল তা এখনো বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে দোনেস্ক ও লুহানস্কের অন্যান্য এলাকায় তুমুল যুদ্ধ চলছে বলে সংবাদ কর্মীরা জানাচ্ছেন।

গত ১৭ জুলাই আমস্টারডাম থেকে কুয়ালালামপুর যাওয়ার পথে পূর্ব ইউক্রেইনের দোনেস্কে ভূপাতিত করা হয় মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের বিমান এমএইচ-১৭। বিমানে থাকা ২৯৮ আরোহীর সবাই ওই দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন।

রাশিয়ায় নিষেধাজ্ঞার প্রস্তুতি


শুক্রবার ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে অভিযোগ তোলা হয়েছে যে, বিদ্রোহীদেরকে আকাশে নিক্ষেপণযোগ্য অস্ত্রের আরেকটি চালান পাঠিয়েছে রাশিয়া।

ইউক্রেইনের বিদ্রোহীদের ইন্ধন দেয়ার কারণে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউরোপীয় ইউনিয়ন নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপের পরিকল্পনা এগিয়ে নিচ্ছে।

মঙ্গলবার এর চূড়ান্ত ঘোষণা দেয়া হবে। ইইউ’র নিষেধাজ্ঞার পর যুক্তরাষ্ট্রও নতুন অবরোধের ঘোষণা দেবে বলে হুমকি দিয়েছে।

ইউক্রেইনের বিরোধকে কেন্দ্র করে এর আগেও মস্কোর বিরুদ্ধে একাধিক অবরোধ আরোপ করেছিল ওয়াশিংটন।

বৃহস্পতিবার থেকে শুরু করে শুক্রবার পর্যন্ত আলোচনার মধ্য দিয়ে প্রাথমিকভাবে রাশিয়ায় অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের ব্যাপারে একমত হন ইইউ রাষ্ট্রদূতরা।

কমিশনের সুপারিশমতে, প্রধান কয়েকটি নিষেধাজ্ঞার মধ্যে আছে রাশিয়ার রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত ব্যাংকগুলোর জন্য ইইউ’র পুঁজি বাজার বন্ধ করে দেয়া। মস্কোয় অস্ত্র বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা এবং জ্বালানি সরবরাহে বাধা-নিষেধ আরোপসহ প্রযুক্তি খাতও এর আওতায় পড়বে।

নিষেধাজ্ঞার এ পদক্ষেপ নেয়া ছাড়াও রাশিয়ায় ক্রিমিয়ার অন্তর্ভুক্তির ঘটনায় জড়িত থাকার কারণে সম্পদ জব্দ করা মস্কোর ১৫ কর্মকর্তা ও বিভিন্ন কোম্পানিসহ ১৮ টি প্রতিষ্ঠানের একটি তালিকাও আলাদা করে প্রকাশ করার কথা রয়েছে ইইউ’র।

শুক্রবারই নতুন নিষেধাজ্ঞার জন্য প্রস্তুত তালিকায় আরো কয়েকজন বিদ্রোহীর নাম অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। সোমবারের মধ্যে তালিকা আরো বড় হতে পারে।

ওয়াশিংটন এর আগেও রাশিয়ায় একাধিক ধরনের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। ইইউর নিষেধাজ্ঞার পর আরো কিছু নতুন নিষেধাজ্ঞা দেয়ার হুমকি দিয়েছে ওয়াশিংটন।