বৃহস্পতিবার মাজারে উপস্থিত লোকজনদের বেরিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেয় ‘ দ্য ইসলামিক স্টেট ইন ইরাক অ্যন্ড দ্য লেভান্ত’বা (আইএসআইএল)। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই বিস্ফোরণ ঘটিয়ে সমাধিটি মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেয়া হয় বলে জানিয়েছে যুক্তরাজ্যের দৈনিক ‘দ্য গার্ডিয়ান’।
সিএনএন ও বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনেও একই ঘটনার কথা বলা হচ্ছে। ইউনূস নবীর সমাধি ধ্বংসের একটি ভিডিও ইউটিউবে প্রচার হলেও এর সত্যতা গণমাধ্যমগুলো নিশ্চিত করতে পারেনি।
ইসলাম ধর্মে সুপরিচিত ইউনূস নবীকে ইহুদি ও খ্রিস্টান ধর্মে ‘জনাহ’ নামে ডাকা হয়। ধর্ম প্রচারে গিয়ে বড় মাছের আক্রমণের শিকার হয়েছিলেন তিনি। মাছের পেটে কয়েকদিন অবস্থানের পর তিনি আবার জীবিতই ফিরে এসেছিলেন বলে ইহুদি, খ্রিস্টান ও ইসলাম ধর্ম্বাবলম্বীদের বিশ্বাস।
খ্রিস্টপূর্ব অষ্টম শতাব্দির কিছু প্রত্নতাত্ত্বিক অঞ্চলে ইউনূস নবীর সমাধি। সেখানে একটি প্রাচীন মসজিদও ছিল, যা জঙ্গিদের ওই হামলায় ধ্বংস হয়ে যায় বলে গণমাধ্যমের খবরে জানানো হয়।
ইরাকে প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের শাসনকালে ১৯৯০ সালে মসজিদটি পুনঃনির্মাণ করা হয়। সারা বিশ্ব থেকে পুণ্যার্থীরা সেখানে যেতেন।
আলোচিত নিনেবাহ অঞ্চলটিও ইরাকের মসুল রাজ্যে অবস্থিত।
স্থানীয় অধিবাসীরা পরিচয় গোপন রাখার শর্তে জানান, বিস্ফোরণে সাধারণ মানুষের কিছু ঘরবাড়িও বিধ্বস্ত হয়েছে। তবে জীবনের ঝুঁকির কারণে কেউ এনিয়ে কথা বলছে না।
একই দিন ইমাম আওন বিন আল হাসান মসজিদ নামের আরেকটি স্থাপনা ধ্বংস করে জঙ্গিরা। মসুল অঞ্চলে বেশকিছু শিয়া তীর্থস্থানও একইভাবে ধ্বংস করেছে তারা।
উচ্ছেদের হুমকিতে খ্রিস্টানরা
২০ লাখ মানুষের বসতি ইরাকের মসুল শহরে ধর্মীয় বহুত্বের চর্চা হয়ে আসছিল কয়েক শতাব্দি ধরে। তবে আইএসআইএল জঙ্গিরা ওই অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর সেখান থেকে খ্রিস্টান অধিবাসীদের উচ্ছেদের হুমকি দিচ্ছে।
মসুল অঞ্চলের দখল নেয়ার পর সেখানকার খ্রিস্টানদেরকে তাদের বাসস্থান ছেড়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আইএসআইএল। অন্যথায় খ্রিস্টানদেরকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণের নির্দেশ দেয় তারা। ধর্মান্তরিত না হলে তাদেরকে জরিমানা কিংবা মৃত্যুদণ্ড ভোগ করতে হবে বলে শাসিয়েছে আইএসআইএল।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানায়, শুক্রবারও জঙ্গিরা অন্য দু’জন নবীর সমাধি ধ্বংস করেছে। একইদিন আরেকজন শিয়া ইমামের সমাধি মিশিয়ে দিয়েছে তারা।
এছাড়া, নারীদেরকে আপাদমস্তক আবৃত করে চলাচলের নির্দেশনাও দিয়েছে জঙ্গিরা। ধর্মীয় ইমামদেরকে জুমা’র নামাযের বক্তব্যে এসব নির্দেশনা প্রচারে বাধ্য করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।