‘ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়ার উস্কানি দিয়েছিল ইউক্রেইন’

মালয়েশীয় বিমান ফ্লাইট এমএইচ১৭ কে যে ধরনের ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ভূপাতিত করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে, সেই ক্ষেপণাস্ত্র ইউক্রেইনের বিদ্রোহীদের কাছে আছে বলে জানিয়েছেন প্রভাবশালী এক বিদ্রোহী কমান্ডার।

>>রয়টার্স
Published : 24 July 2014, 09:07 AM
Updated : 24 July 2014, 09:07 AM

বিমানটিকে রাশিয়ার তৈরি ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য বিউকে ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়েছিল বলে বিশেষজ্ঞদের অনুমান।

মঙ্গলবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে পূর্ব ইউক্রেইনের রুশপন্থী বিদ্রোহী গোষ্ঠী ভোস্তক ব্যাটালিয়নের কমান্ডার আলেকজান্দার খোদকোভস্কি ওই ক্ষেপণাস্ত্র থাকার কথা নিশ্চিত করেছেন।

১৭ জুলাই মালয়েশীয় বিমানটি বিধ্বস্ত হয়ে আরোহী ২৯৮ যাত্রী নিহত হওয়ার পর থেকে এই প্রথম বিদ্রোহীদের পক্ষ থেকে ক্ষেপণাস্ত্রটি থাকার কথা স্বীকার করা হল।

এর আগে ৩৩ হাজার ফুট ওপরে থাকা বিমান নামানোর মতো কোনো প্রযুক্তি তাদের কাছে নেই বলে দাবি করে আসছিল ইউক্রেইনের পূর্বাঞ্চলীয় বিদ্রোহীদের প্রধান গোষ্ঠী পিপলস রিপাবলিক অব দোনেস্ক।

খোদকভস্কি বলেছেন, যোদ্ধাদের কাছে বিউকে ক্ষেপণাস্ত্র ছিল, মালয়েশীয় বিমান ধ্বংসের পর প্রমাণ মুছে ফেলার উদ্দেশ্যে তারা সম্ভবত সেগুলো ফেরত পাঠিয়েছে।

তবে ঘটনা যাই হোক না কেন মালয়েশীয় বিমান ধ্বংসের দায় তিনি ইউক্রেইন সরকারের ওপরই চাপিয়েছেন।

ইউক্রেইনের সরকারি বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহীদের লড়াই চলছে পূর্ব ইউক্রেইনের এমন একটি এলাকায় এমএইচ১৭ বিধ্বস্ত হয়। কারা এটিতে ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়েছে তা নিয়ে ইউক্রেইনের সরকার ও বিদ্রোহীরা একে অপরকে দায়ী করে আসছে।

খোদকোভস্কি ইউক্রেইনের সরকারকে অভিযুক্ত করে বলেন, বিউকে ক্ষেপণাস্ত্র বিদ্রোহীদের কাছে আছে এটি জানা ছিল কিয়েভের (ইউক্রেইনের রাজধানী)। এটি জানা থাকার পরও তারা ওই এলাকায় উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিমান হামলা পরিচালনা করছিল।

“তারা জানতো বিউকে আছে; স্নিঝেনোয়ির দিকে সেটি নেয়া হচ্ছে,” বিমান বিধ্বস্তের স্থান থেকে ১০ কিমি পশ্চিমের একটি গ্রামের উল্লেখ করে এ কথা বলেন তিনি।

“সেখানে এটি মোতায়েন করা হতে পারে সেটি তারা জানতো, আর ক্ষেপণাস্ত্রটির ব্যবহার উস্কে দেয়ার জন্য তারা অপ্রয়োজনীয় লক্ষ্যে বিমান হামলা চালাতে শুরু করে। এর আগের সপ্তাহে এই লক্ষ্যস্থলগুলো তাদের বিমানগুলো ছুঁয়েও দেখেনি,” বলেন তিনি।

তিনি বলেন, “আর ওইদিনও, তাদের বিমানগুলো যথেচ্ছ ঘোরাঘুরি করছিল, এমনকি যখন বেসামরিক ওই যাত্রীবাহী বিমানটি ওখানে মাথার ওপর দিয়ে যাচ্ছিল তখনও বিমান হামলা চালাচ্ছিল তারা। যদি সেখানে একটি বিউকে ক্ষেপণাস্ত্র থেকেই থাকে, আর সেটি যদি ব্যবহার করাও হয়, বেসামরিক বিমানটিকে তা দিয়ে আঘাত করানোর জন্য সবকিছু করেছিল ইউক্রেইন।”

“আমি জানতাম একটি বিউকে লুহানস্ক থেকে আসছে। ওই সময় আমি বলেও ছিলাম, লুহানস্ক থেকে এলএনআর’র (লুহানস্ক পিপলস রিপাবলিক) পতাকাবাহী একটি বিউকে আসছে,” বলেন তিনি।

লুহানস্ক পূর্ব ইউক্রেইনে বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত একটি প্রদেশ।

খোদকোভস্কি বলেন, “ওই বিউকে সম্পর্কে আমি জানতাম। আমি এটির বিষয়ে শুনেছিলাম। আমরা ধারণা তারা এটি ফেরত দিয়েছে। কারণ এটি সম্পর্কে ঠিক তখনই জেনেছি যখন শোচনীয় ঘটনাটি ঘটে গেছে। তারা এর উপস্থিতির প্রমাণ মুছে দিতে সম্ভবত এটি ফেরত পাঠিয়েছে।”

“কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, স্বেচ্ছাসেবকদের (বিদ্রোহী) এই প্রযুক্তি আছে, রাশিয়ার ভুলে সময় মতোই তার প্রমাণ পেয়েছিল ইউক্রেইন। কিন্তু ইউক্রেইন এগুলো জানার পরও নিরাপত্তা রক্ষার জন্য কিছুই করেনি, বরং শান্তিপূর্ণ বেসামরিকদের বহনকারী একটি বিমানে এ রকম একটি অস্ত্র ছোঁড়ার জন্য সব রকম উস্কানি দিয়েছিল,” বলেন তিনি।