মৃত্যুকে ফাঁকি!

চলতি বছর দুর্ঘটনার শিকার মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের দুটি বিমানে ভ্রমণ করার কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে মৃত্যুকেই যেন ফাঁকি দিয়েছেন নেদারল্যান্ডসের এক সাইকেল দৌড়বিদ।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 July 2014, 01:22 PM
Updated : 22 July 2014, 01:22 PM

মার্টিন ডি জং সম্প্রতি তার বেঁচে যাওয়ার ঘটনা বর্ণনা করেছেন ডাচ টেলিভিশন আরটিভি ওস্টকে। টিভি সাক্ষাৎকারের বরাত দিয়ে ব্রিটেনের ‘দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট’ পত্রিকা খেলোয়াড় মার্টিনের বিষয়টি নিয়ে খবর ছাপে।

পত্রিকাটির খবরে বলা হয়, মালয়েশিয়ার তেরেঙ্গানু সাইকেলিং টিমের হয়ে সাইকেলে বিশ্ব ভ্রমণ করে যাচ্ছেন মার্টিন। গত বৃহস্পতিবার ভূপাতিত মালয়েশিয়ার এমএইচ-১৭ ফ্লাইটে করে কুয়ালালামপুর যাওয়ার কথা ছিল তার। তবে ফ্রাঙ্কফুর্ট হয়ে গন্তব্যে যাওয়াটাই বেশি সাশ্রয়ী হবে ভেবে যাত্রা শুরুর কয়েক মিনিট আগে এমএইচ-১৭ ফ্লাইটে আর ওঠেননি মার্টিন।

আর এভাবেই ঘটনাচক্রে নিশ্চিত দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যান তিনি। এর আগে গত ৮ মার্চ মাঝ আকাশে নিখোঁজ মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের অপর বিমানটিতেও যাওয়ার চিন্তা করে পরে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন মার্টিন। ফলে সেবারও নিশ্চিত মৃত্যু থেকে রক্ষা পেয়েছিলেন তিনি।

এমএইচ-১৭ ফ্লাইটটি আমস্টারডাম থেকে কুয়ালালামপুরে যাওয়ার পথে পূর্ব ইউক্রেইনে ভূপাতিত করা হয়। বিমানের প্রায় তিনশ’ আরোহীর সবাই এতে নিহত হন। ঘটনার জন্য পরস্পরকে দায়ী করছে ইউক্রেইন সরকার ও বিদ্রোহীরা।

আরটিভি ওস্টকে মার্টিন বলেন, গত ৮ মার্চ মাঝ আকাশে নিখোঁজ মালয়েশিয়ার আরেক বিমান এমএইচ-৩৭০ বিমানেও তার ভ্রমণ করার কথা ছিল। তখন তাইওয়ানে একটি সাইকেলিং প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে তিনি ওই বিমানে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বিমানটি ওড়ার একঘণ্টা আগে বেইজিংয়ে যাত্রাবিরতি করে না এমন একটি বিমানে উঠার সিদ্ধান্ত নেন মার্টিন।

নিখোঁজ বিমানে না উঠার সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে বিমানবন্দরে কয়েকজন যাত্রীর সঙ্গে কথা হয় মার্টিনের। বিমানটি নিখোঁজ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ওই যাত্রীরাও নিরুদ্দেশ হয়ে যান।

“নিখোঁজ ও ভূপাতিত বিমানের যাত্রী ও তাদের স্বজনদের প্রতি আমি খুবই দুঃখ প্রকাশ করছি। ওই দুটি ফ্লাইট থেকে বেঁচে গিয়ে আমি খুবই আনন্দিত।”

মালয়েশিয়ার দুইটি বিমানের দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যাওয়ার খবর প্রকাশের পর থেকেই গণমাধ্যমগুলো ভিড় করছে মার্টিনের কাছে। তবে বিমান দু’টির নিহত যাত্রীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এনিয়ে তিনি আর মাতামাতি করতে চাননা বলেও নিজের ওয়েবসাইটে লেখেন মার্টিন।

“যা ঘটে গেছে তা অত্যন্ত ভয়ানক। দুটি ঘটনায় অনেক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমার জীবনের গল্প আমার কাছেই ধরে রাখতে চাই।…… নিহত বিমান যাত্রীদের চেয়ে আমার বেঁচে যাওয়ার গল্প কোনোভাবেই বড় কিছু নয়,” বলেন মার্টিন।

গত ৮ মার্চ হারিয়ে যাওয়া এমএইচ-৩৭০ ফ্লাইটটি ভারত মহাসাগরের কোথাও বিধ্বস্ত হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। বিমানে থাকা ২৩৯ জন আরোহীর সবাই নিখোঁজ হন যাদের মৃত্যু হয়েছে বলেই ধরে নেয়া হচ্ছে। এরপর গত ১৭ জুলাইয়ে নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডাম থেকে কুয়ালালামপুরে যাওয়ার সময় পূর্ব ইউক্রেইনে ভূপাতিত হয় মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের আরেক বিমান এমএইচ-১৭।