হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সেজায়া এলাকায় ইসরায়েলি বাহিনীর ট্যাঙ্কবহর থেকে দিনভর গোলা নিক্ষেপে নিহত হয়েছেন অন্তত ৭২ ফিলিস্তিনি, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক।
এ নিয়ে দুই সপ্তাহের ইসরায়েলি হামলায় ফিলিস্তিনি নিহতের সংখ্যা কমপক্ষে ৪৪৭ জনে দাঁড়িয়েছে বলে ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে জানিয়েছে রয়টার্স।
তবে গাজায় ইসলামপন্থি দল হামাসও পাল্টা জবাব দিয়েছে এদিন। হামাস সেনাদের হামলায় অন্তত ১৩ ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছেন।এ নিয়ে চলতি অভিযানে মোট ১৮ সেনা হারালো ইসরায়েল। এদের প্রায় সবাই গাজায় স্থল অভিযান শুরুর পর নিহত হয়েছেন।
সর্বশেষ ২০০৮-০৯ সালে গাজায় চালানো তিন সপ্তাহের ইসরায়েলি স্থল অভিযানে দেশটির পক্ষের যত সেনা নিহত হয়েছিল এবার একদিনেই তার চেয়ে বেশি সেনা নিহত হলেন।
একদিনে এত সেনা নিহত হওয়ায় ইসরায়েলিরা হতবাক হয়ে গেছে বলে দক্ষিণ ইসরায়েল থেকে জানিয়েছেন বিবিসি প্রতিনিধি।
নিজেদের সেনা নিহতের সংখ্যা দুই অঙ্কে পৌঁছালেও ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেননিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজায় অভিযান চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। সেনা হারানোর ঘটনায় ইসরায়েল সরকার ‘গভীর বেদনা’ অনুভব করছে জানিয়ে তিনি গাজার লড়াই আরো দীর্ঘ করার জন্য হামাসকে দায়ী করেন।
বিবিসি জানিয়েছেন, শেজাইয়ার আতঙ্কিত বাসিন্দারা ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছেন, চারদিকে আতঙ্কের পরিবেশ বিরাজ করছে।
জাতিসংঘের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ইসরায়েলি অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে গাজার ৮৩ হাজার ৬৯৫ জন বাসিন্দা বাস্তুচ্যুত হয়ে ৬১টি আশ্রয় কেন্দ্রে শরণার্থী হয়েছেন। ভূখণ্ডটিতে বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে বলে জানিয়েছে এই বিশ্ব সংস্থা।
গাজার স্বাস্থ্যকর্মীরা জানিয়েছেন, শেজায়ার পূর্বাংশে উদ্ধারকর্মীরা প্রবেশ করতে পারেননি। এলাকাটি ইসরায়েল সীমান্তের খুব কাছে এবং গাজা সিটি থেকে তিন কিলোমিটার দূরে। এলাকাটিতে রোববার ব্যাপক গোলাবর্ষণ করে ইসরায়েল।
এদিকে বিবিসি’র আরবি বিভাগকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু শেজায়াকে ‘সন্ত্রাসীদের আস্তানা’ বলে অভিহিত করে এলাকাটিকে ইসরায়েলে রকেট নিক্ষেপের কেন্দ্র বলে উল্লেখ করেছেন।
ওদিকে রোববার সন্ধ্যায় এক ইসরায়েলি সেনাকে আটক করার হামাসের দাবি অস্বীকার করেছে ইসরায়েল। তবে ইসরায়েলি সেনা আটকের ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে গাজা জুড়ে উল্লসিত স্লোগান ও গুলিবর্ষণে বিষয়টি উদযাপন করা হয়।
নিজেদের সেনা ‘আটকের’ বিষয়ে জাতিসংঘে নিযুক্ত ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত রন প্রসোর বলেন, “ইসরায়েলি কোনো সেনা অপহৃত হয়নি, যেসব গুজব ছড়ানো হচ্ছে তা অসত্য।”