মোদি ক্ষমতায় ভেবে আতঙ্কিত প্রবাসী শিক্ষাবিদরা

কেমব্রিজ, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকস’র মতো যুক্তরাজ্যের নামকরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ভারতীয় বংশোদ্ভূত ৭৫ জন অধ্যাপক ও শিক্ষাবিদ ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী নরেন্দ্র মোদিকে তীব্র আক্রমণ করে একটি খোলা চিঠি প্রকাশ করেছেন।

নিউজ ডেস্ক>>বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 April 2014, 07:55 AM
Updated : 23 April 2014, 07:55 AM

চিঠিটির শিরোনাম, “মোদি ক্ষমতায় এটি ভাবলেই আমরা আতঙ্কে ডুবে যাচ্ছি।”

চিঠিটি যুক্তরাজ্যের ‘ইন্ডিপেন্ডেন্ট’ সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে বলে মঙ্গলবার জানিয়েছে এনডিটিভি।

লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসের অধ্যাপক চেতন ভাট ও গৌতম আপ্পা’র উদ্যোগে খোলা চিঠিটি প্রকাশ করা হয়।

এতে বলা হয়, “পরবর্তী সরকার গঠন করার জন্য ভারতের জনগণ যখন ভোট দিচ্ছে, নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে বিজেপি সরকার গঠনের সম্ভাবনায় ভারতের গণতন্ত্র, বহুমত-পথ-জাতি এবং মানবাধিকার নিয়ে আমরা গভীর উদ্বেগের মধ্যে আছি।”

“নরেন্দ্র মোদি আরএসএস ও সংঘ পরিবারের মতো হিন্দু জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠীগুলো এবং সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে তাদের সহিংসতা উস্কে দেয়ার ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত। সম্প্রতি এই গোষ্ঠীগুলোর কয়েকটির বিরুদ্ধে বেসামরিক মানুষদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী হামলার অভিযোগ উঠেছে।”

“গুজরাটে মোদির শাসনের একনায়কসুলভ ধরনের বিষয়ে অনেকেই একমত, বিজেপি’র ভিতরে অন্যান্য জ্যেষ্ঠ নেতাদের কোনঠাসা অবস্থা এর সাম্প্রতিক প্রমাণ। এই ধরনের সরকার ভারতের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে শুধু দুর্বলই করবে।”

তারা বলেন, “২০০২ সালে গুজরাটে হিন্দু অধিকারবাদীদের চরম সহিংসতার বিষয়টিও আমরা উল্লেখ করতে চাই। ওই সহিংসতায় অন্ততপক্ষে এক হাজার মানুষ নিহত হন, যাদের অধিকাংশই মুসলিম। মোদির শাসনকালেই এই সহিংসতার ঘটনাটি ঘটে। এই ঘটনা ঘটায় মোদির অনুমোদন ও উস্কানিমূলক ভূমিকার বিষয়ে জ্যেষ্ঠ সরকারি ও পুলিশ কর্মকর্তারা সাক্ষ্য দিয়েছেন।”

“এছাড়া, মোদি-বিজেপি’র অর্থনৈতিক উন্নয়নের মডেল সরকারকে বড় ব্যবসায়ীদের ঘনিষ্ঠ করে তুলবে, এতে জনগণের সম্পদ সম্পদশালী ও ক্ষমতাবানদের হাতে চলে যাবে, এতে গরীবদের অবস্থা শোচনীয় হয়ে পড়বে।”

“মোদির জয়ে নৈতিক বাধ্যবাধকতার তোড়জোড় শুরু হতে পারে, নারীরা যার শিকার হতে পারেন, বিধিনিষেধ আরোপ ও সরকারি নজরদারির দৌরাত্ম্য শুরু হতে পারে এবং ভারতের প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিতে পারে,” বলা হয় চিঠিতে।

শিক্ষাবিদদের এই দলের মধ্যে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নন্দিনী গুপ্ত ও কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের জয়তী চক্রবর্তীর মতো যুক্তরাজ্যের শিক্ষাক্ষেত্রের প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বরাও আছেন।

এর আগে ভারতীয় বংশোদ্ভূত লেখক সালমান রুশদি ও চিত্রশিল্পী অনিশ কাপুরের নেতৃত্বে প্রবাসী ভারতীয় শিল্পী-বুদ্ধিজীবীদের একটি দল চলতি মাসের প্রথম দিকে ‘গার্ডিয়ান’ সংবাদপত্রে মোদির বিরোধিতা করে একই ধরনের একটি খোলা চিঠি প্রকাশ করেছিল।