পূর্ব ইউক্রেইনে রুশপন্থি অস্ত্রধারীদের ওপর হামলা

খ্রিস্টান ধর্মীয় উৎসব ‘ইস্টার সানডে’ উপলক্ষে সাময়িক অস্ত্রবিরতি মধ্যেই পূর্ব ইউক্রেইনে রুশপন্থিদের নিয়ন্ত্রণাধীন একটি শহরের কাছে বন্দুকযুদ্ধে অন্তত দুইজন নিহত হয়েছে।

>>রয়টার্স
Published : 20 April 2014, 01:55 PM
Updated : 20 April 2014, 06:18 PM

স্লাভিয়ানস্ক শহরের কাছে বিচ্ছিন্নতাবাদী অস্ত্রধারীরা রয়টার্সকে জানায়, শনিবার রাত দুইটার দিকে টহলে থাকা চারটি যানের বহর তাদের তল্লাশিকেন্দ্রের দিকে এগিয়ে এসে গুলি ছুড়ে। এতে তিনজন নিহত ও চারজন আহত হয়। ঘটনাস্থলে কয়েকটি জিপও ভষ্মীভূত হয়।

হামলাকারীরা কিয়েভের ডানপন্থি গোষ্ঠী বলে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়। পাল্টা গুলিতে ‘হামলাকারীদের’ দুইজন নিহত হয়েছে বলেও দাবি তাদের।

এর আগে ইউক্রেইনে পশ্চিমাপন্থি সরকার খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র ইস্টার সানডে উপলক্ষে পূর্বাঞ্চলে চলা সেনা অভিযানে সাময়িক বিরতির ঘোষণা দিয়েছিলেন। এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতাকারীদেরকে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিরস্ত্রিকরণসহ সঙ্কট সমাধানের প্রচেষ্টা চালানোর সুযোগ করে দেয় সরকার।

বৃহস্পতিবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় রাশিয়া, ইউক্রেইন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় কূটনীতিকরা ইউক্রেইনের চলমান সঙ্কট নিরসনে একটি চুক্তিতে পৌঁছান।

চুক্তির আওতায় ইউক্রেইনে অবৈধভাবে সরকারি ভবন দখল করে রাখা অস্ত্রধারীদেরকে নিরস্ত্র হওয়া এবং সব ভবন বৈধ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করতে বলা হয়েছে। তাছাড়া, সব পক্ষকে কোনোরকম সহিংসতা, ভয়ভীতি প্রদর্শন কিংবা উস্কানিমূলক কর্মকান্ড থেকে বিরতও থাকতে বলা হয়। কিন্তু বিচ্ছিন্নতাবাদীরা তাৎক্ষণিকভাবে এ চুক্তি প্রত্যাখ্যান করে।

বহুপক্ষীয় চুক্তি, যুদ্ধবিরতির ঘোষণা আর শান্তিপ্রচেষ্টার মধ্যেই পবিত্র ধর্মীয় দিনে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটল। এতে করে আরো নাজুক পরিস্থিতিতে পড়ল আন্তর্জাতিক ওই চুক্তি।

রয়টার্সের প্রতিনিধি ঘটনাস্থলে দুটি মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেছেন। নিহতদের একজনের মাথা ও মুখে গুলি লাগে। নিহত আরেকজন ছিলেন ছদ্মবেশী পোশাক পরিহিত।

কিয়েভের সরকারি কর্মকর্তারা বন্দুকযুদ্ধে একজন নিহত হওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। রাতে কী ঘটেছিল তা পুলিশ তদন্ত করে দেখছে বলেও জানান তারা। বৃহস্পতিবারের জেনেভাচুক্তির পর রোববার ভোররাতেই প্রথম হতাহতের ঘটনা ঘটে।

চুক্তি অনুযায়ী, রুশপন্থি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিরস্ত্র করতে পূর্বাঞ্চলে ‘অর্গানাইজেশন অব সিকিউরিটি এন্ড কো-অপারেশন ইন ইউরোপ’ (ওএসসিই) এর একজন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তবে নতুন করে প্রাণহানি তার কাজের ক্ষেত্রে বড় ধরনের বাধা হয়ে দাঁড়াবে বলে আশঙ্কা বিশ্লেষকদের।

বিচ্ছিন্নতাবাদীরা চুক্তি অনুযায়ী অস্ত্র না ছাড়লে রাশিয়ার ওপর আরো অবরোধ আরোপ করা হবে বলে হুঁশিয়ার করেছে যুক্তরাষ্ট্র।