মিশরে তিন শতাধিক নিহত, জরুরি অবস্থা জারি

মিশরের রাজধানী কায়রোসহ অন্যান্য শহরে ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসি সমর্থকদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষে তিন শতাধিক বিক্ষোভকারী নিহত এবং দুই হাজারেরও বেশি লোক আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 August 2013, 07:01 AM
Updated : 15 August 2013, 04:25 AM

তবে মুরসির দল মুসলিম ব্রাদারহুড নিহতের সংখ্যা ২ হাজার বলে দাবি করেছে।

ব্যাপক এ সহিংসতার পর একমাসের জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে সরকার। দমনাভিযানের প্রতিবাদে অন্তর্বর্তী সরকারের ভাইস প্রেসিডেন্টের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন মোহাম্মদ এল বারাদি।

কায়রোর উত্তরপূর্বে বুধবার রাবা আল-আদাওয়িয়া মসজিদে মুরসিপন্থীদের প্রধান বিক্ষোভ শিবির ঘিরে অভিযান চালায় নিরাপত্তা বাহিনী।

প্রাথমিক খবরে রয়টার্সের এক সাংবাদিক মসজিদের কাছে হাসপাতালের একটি মর্গে ২৯ টি মৃতদেহ দেখার কথা জানান। এর মধ্যে ১২ বছর বয়সের এক শিশুও ছিল। বেশিরভাগই মারা যায় মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে। একই হাসপাতালের এক নার্স নিহতের সংখ্যা ৬০ উল্লেখ করেন।

নাহদা স্কয়ারে মুরসিপন্থিদের আরেকটি বিক্ষোভ শিবিরও এদিন অভিযান চালিয়ে খালি করে নিরাপত্তা বাহিনী। অভিযান শুরুর পর সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে রাজধানীর বাইরের কয়েকটি শহরে।

উত্তরাঞ্চলীয় উপকূলের মিনা, আসিয়ুত, অ্যালেক্সান্দ্রিয়া সুয়েজ, কায়রোর দক্ষিণে ফায়ুম, বুহাইরা এবং বেনি সুয়েফ প্রদেশে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে মুরসি সমর্থকদের সংঘর্ষে সব মিলিয়ে পুলিশ ও বেসামরিক নাগরিকসহ তিন শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়।

অন্য কয়েকটি সূত্র ফায়ুম প্রদেশে অন্তত ১৭ জন এবং সুয়েজ এ ৫ জন নিহত হওয়ার কথা জানায়। সংঘর্ষে কয়েকজন সাংবাদিক হতাহত হওয়া ছাড়াও নিহত হয় ব্রাদারহুডের নেতা মোহাম্মদ এল-বেলতাগির ১৭ বছর বয়সী মেয়ে।

সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়তে থাকায় বুধবার বিকাল থেকে একমাসের জরুরি অবস্থা জারি করে অন্তর্বর্তী সরকার।

নিরাপত্তা বাহিনীর প্রাথমিক অভিযানের বেশ কয়েকঘণ্টা পরও বিক্ষোভকারীরা জায়গায় জায়গায় রাস্তা অবরোধ করেছে, স্লোগান দিয়ে পতাকা উড়িয়েছে। তাদেরকে নতুন করে জমায়েত হতে বাধা দেয় নিরাপত্তা বাহিনী।

জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন মিশরে সহিংসতার নিন্দা জানিয়েছেন। ইউরোপীয় ইউনিয়নও মিশর কর্তৃপক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে।

তবে মিশরের অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হাজেম বেবলাওয়ি দমনাভিযানের সাফাই গেয়ে বলেছেন, নিরাপত্তা ফিরিয়ে আনার স্বার্থেই মিশরের নিরাপত্তা বাহিনীকে বিক্ষোভ শিবির ভেঙে ফেলতে হয়েছে।

পুলিশ সোমবার ভোর থেকেই উচ্ছেদ অভিযান শুরুর ঘোষণা দেয়। কিন্তু এর বিরুদ্ধে দেশব্যাপী বিক্ষোভের ডাক দেয় আন্দোলনকারীরা। এতে সাময়িক পিছু হটে অভিযান বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তারপরই বুধবার দিনের প্রথমভাগে অভিযান শুরু করে নিরাপত্তা বাহিনী।

মুরসির ক্ষমতাচ্যুতির পর থেকে এ পর্যন্ত বিভিন্ন সহিংসতা ও নিরাপত্তাবাহিনীর অভিযানে মিশরজুড়ে পাঁচশ’রও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।