সরকার গঠন নিয়ে আলোচনায় নওয়াজ

পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচনের সর্বশেষ বেসরকারি ফলে বিজয়ী হয়ে দলের নেতাদের সঙ্গে নতুন সরকার গঠন নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন পাকিস্তান মুসলিম লিগ(পিএমএল-এন) প্রধান নওয়াজ শরীফ।

আন্তর্জাতিক ডেস্ক.বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 May 2013, 05:24 AM
Updated : 12 May 2013, 12:30 PM

দেশের নাজুক অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে প্রয়োজনীয় সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নে সক্ষম একটি স্থিতিশীল সরকার গড়ার পথেই এগুচ্ছেন নওয়াজ।

বেসরকারি ফলে বড় ধরনের জয় পেয়েছে শরীফের দল।দলটি ২৭২ আসনের জাতীয় পার্লামেন্টে ১০০টির কিছু বেশি আসনে জয়লাভ করেছে।

তারপরও সরকার গঠনে দলটির অন্য দলের সমর্থন প্রয়োজন পড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজন ১৩৭টি আসন।

তবে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো সমর্থন শরীফের প্রয়োজন পড়বে না বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।কারণ, দলটি শেষ পর্যন্ত ১৩০ আসন পেতে পারে এবং স্বতন্ত্র ও ছোট দলগুলোর সমর্থনে প্রয়োজনীয় ১৩৭ আসনের সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে যেতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে।

শরীফের দলের পর ইমরান খানের পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফ (পিটিআই) এবং পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) কাছাকাছি অবস্থানে রয়েছে। দু’দলই ৪০ টি আসনের চেয়ে কিছু কম আসন (৩০-৩৩)পাচ্ছে এমনটিই দেখা যাচ্ছে সর্বশেষ ফলে।

ইমরানের দলটি হতে পারে প্রধান বিরোধী দল।ইমরান খান নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতিতে সন্তষ্টি প্রকাশ করলেও ভোটে কারচুপির খবরে হতাশা প্রকাশ করেছেন।

তালেবান হুমকির মধ্যেও এবারের নির্বাচনে ভোট পড়েছে ৬০ শতাংশ যা ১৯৯৭ সালের পর সর্বোচ্চ।

পার্লামেন্টে ১২৪টি আসন নিয়ে গত পাঁচ বছর পাকিস্তানের ক্ষমতায় ছিল পিপিপি সরকার।

এবারের ভোটের পর লাহোরের নিজ বাসবভন থেকে দলের ‘বিজয়’ ঘোষণা করে উপস্থিত সমর্থকদের উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে তার ওপর আস্থা রাখার জন্য পাকিস্তানের নাগরিকদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন নওয়াজ।

তিনি নিজে লাহোর ও সারগোদার দুটি আসনে জয়ী হয়েছেন।নওয়াজ শরীফ এবং তার ছোট ভাই শাহবাজ শরীফ লাহোরের মডেল টাউন বাসভবন থেকে দলের পক্ষে জয় দাবি করেছেন।

নওয়াজ এর আগে দুইবার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, প্রথমবার ১৯৯০ সালে এবং দ্বিতীয়বার ১৯৯৭ সালে। কিন্তু কোনোবারই তিনি পুরো মেয়াদ পার করতে পারেননি।

প্রথমবার মেয়াদ ফুরানোর আগেই তৎকালীন প্রেসিডেন্ট গোলাম ইসহাক খান সরকার ভেঙে দেন। আর দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় যাওযার পর ১৯৯৯ সালে তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল পারভেজ মুশাররফ সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নওয়াজকে ক্ষমতাচ্যুত করেন।

পাকিস্তান শাসনের জন্য ধৈর্য নিয়ে অপেক্ষায় ছিলেন শরীফ।প্রধান বিরোধীদলীয় নেতা হিসাবেও তিনি পিপিপি সরকারের দুঃসময়ে দলটিকে বিপাকে ফেলার চেষ্টা করেননি।আর তাছাড়া ১৯৯০ এর দশকের চেয়ে এবার শরীফ অনেক বেশি সতর্ক থাকাতেই তিনি জয় পেয়েছেন বলে অভিমত বিশ্লেষকদের।

ইমরান খান এরই মধ্যে জানিয়েছেন, তার দল মুসলিম লীগের সঙ্গে জোটবদ্ধ হবে না। সে ক্ষেত্রে নওয়াজ শরীফের দল মুসলিম লীগ প্রতিদ্বন্দ্বী পিপিপি’র সঙ্গে জোট বেঁধে সরকার গঠন করতে পারে।
শাহবাজ শরীফ ইতোমধ্যেই জানিয়েছেন, মুসলিম লীগ সরকার গঠন করবে এবং বড় ভাই নওয়াজ শরীফই হবেন প্রধানমন্ত্রী।