সুষমা স্বরাজের ভাষণ ‘উদ্ধত’, তবে পাকিস্তানে সন্ত্রাসবাদ আছে: চীনা গণমাধ্যম

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের দেওয়া ভাষণকে ‘উদ্ধত’ অ্যাখ্যা দিলেও পাকিস্তানে সন্ত্রাসবাদ আছে বলে স্বীকৃতি দিয়েছে চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Sept 2017, 08:21 AM
Updated : 26 Sept 2017, 08:21 AM

সোমবার চীনা দৈনিক গ্লোবাল টাইমসের সম্পাদকীয়তে এই স্বীকৃতি আসে বলে জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি।

সাধারণ পরিষদের ভাষণে পাকিস্তানকে ‘সন্ত্রাসের প্রধান কারখানা’ বলে অভিহিত করেছিলেন সুষমা স্বরাজ।

গ্লোবাল টাইমসের সম্পাদকীয়তে বলা হয়, “পাকিস্তানে বাস্তবিক অর্থেই সন্ত্রাসবাদ আছে। কিন্তু সন্ত্রাসবাদে সমর্থন দেওয়া কি দেশটির জাতীয় নীতি? সন্ত্রাসবাদ রপ্তানি করে পাকিস্তানের কি লাভ হবে? টাকা না সম্মান?”

‘ভারতের গোঁড়ামি উচ্চাকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়’ শীর্ষক এই সম্পাদকীয়তে আরও বলা হয়, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক ক্ষেত্রে অগ্রগতির পর ভারত এখন পাকিস্তানের দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছে এবং চীনের সঙ্গে উত্তপ্ত বাদানুবাদের পথ বেছে নিয়েছে।

এর আগে জাতিসংঘে দেওয়া ভাষণে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রী সুষমা স্বরাজ বলেন, ভারত ও পাকিস্তান চাইলে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে একে অপরের কাছ থেকে মুক্ত হতে পারে।

“কেন আজকে ভারত তথ্যপ্রযুক্তির সুপারপাওয়ার হিসেবে বিশ্বে পরিচিত, অন্যদিকে পাকিস্তানকে চিহ্নিত করা হয় সন্ত্রাসের প্রধান কারখানা হিসেবে?

লস্কর-ই-তৈয়বা ও জইশ-ই-মোহাম্মদের মত সন্ত্রাসী সংগঠনের নাম উল্লেখ করে সুষমা বলেন, ভারত বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেছে; পক্ষান্তরে পাকিস্তান নিজের দেশের জনগণ ও বিশ্বকে সন্ত্রাসবাদ উপহার দিয়েছে। 

“আমরা গবেষক, ডাক্তার ও প্রকৌশলী তৈরি করি; আপনারা কি তৈরি করেন? আপনারা তৈরি করেন সন্ত্রাসী।”

ভারতকে প্রতিবেশীদের ভয়ে ‘ভীত’ এবং যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয়দের সাহায্যপ্রার্থী অ্যাখ্যা দিয়ে গ্লোবাল টাইমসের সম্পাদকীয়তে বলা হয়, বিবাদের বিস্তার ঠেকাতে দিল্লির উচিত চীনের সঙ্গে বন্ধুত্ব এবং পাকিস্তানকে শ্রদ্ধা করা।  

জইশ-ই-মোহাম্মদের প্রধান মাসুদ আজহারকে জাতিসংঘের কাছে সন্ত্রাসী হিসেবে উপস্থাপনে চীনের আপত্তির বিষয়ে ইঙ্গিত দিয়ে সুষমা ভারতীয় গণমাধ্যমের মতই বিভ্রান্তি ছড়িয়েছেন বলেও মন্তব্য করে চীনের রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত এ গণমাধ্যম।

সম্পাদকীয়তে সিকিমের কাছে ভুটানের দোকলাম সীমান্তে ভারত ও চীনা বাহিনীর ৭৩ দিনের মুখোমুখি অবস্থানের কথাও উল্লেখ করা হয়; ২৮ অগাস্ট যে উত্তেজনার পরিসমাপ্তি ঘটে।

“চীনের কৌশলগত অবস্থানকেও ভারত তার যুক্তি দিয়ে বিবেচনা করে। সে মনে করে, চীনের সঙ্গে পাকিস্তানের ভালো সম্পর্কের লক্ষ্য হচ্ছে ভারতকে প্রতিরোধ করা। দোকলামে সড়ক নির্মাণকে সে তার শিলিগুড়ি করিডরের জন্য হুমকি মনে করে। ভারত মনে করে তাকে ঘিরে ফেলতেই চীন পাকিস্তান এবং দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশকে সঙ্গে নিয়ে বেল্ট ও সড়ক নির্মাণের বিভিন্ন উদ্যোগ নিচ্ছে; যে কোনো ক্ষেত্রে ভারতের স্বার্থ এইসব যুক্তিকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হয়,” গ্লোবাল টাইমসের সম্পাদকীয়তে বলা হয়।