মিয়ানমারের পাশে থাকবে জাপান

রোহিঙ্গাদের দমন-পীড়নের ঘটনায় বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মহলে সমালোচনার মুখে থাকা মিয়ানমারের প্রতি সব ধরনের সমর্থন অব্যাহত রাখার কথা জানিয়েছে জাপান।

এস এম নাদিম মাহমুদ, জাপান প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Sept 2017, 08:06 AM
Updated : 26 Sept 2017, 09:08 AM

সম্প্রতি রাখাইন সফরে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে দেশটির পররাষ্ট্র উপমন্ত্রী ইআও হরি সমর্থন অব্যাহত রাখায় মিয়ানমার সরকারকে এ প্রতিশ্রুতি দেন বলে সোমবার জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

এতে বলা হয়, রোহিঙ্গা সঙ্কটের পর সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে গত ২১ সেপ্টেম্বর থেকে ২৩ সেপ্টেম্বর মিয়ানমার সফর করেন পররাষ্ট্র উপমন্ত্রী ইআও হরি।

রাখাইনে চলমান সহিংসতা নিয়ে সফরের প্রথম দিন মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর প্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইং, প্রধান সেনা কমাণ্ডার অং পাও সু, স্টেট কনসুলার ইন মাৎ আইসহ বেশ কয়েকজনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তিনি।

সাক্ষাতে জাপানের অবস্থান ব্যাখ্যা করে মিয়ানমার বিষয়ে তাদের চলমান নীতিতে কোনো পরিবর্তন আসবে না বলে জানিয়েছেন ইয়াও হরি। মিয়ানমার পুনর্গঠনে সব ধরনের সহায়তা চালিয়ে যাবে বলেও জানান তিনি।

রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প (ফাইল ছবি)

গত ২৪ অগাস্ট রাখাইনের পুলিশ পোস্ট ও সেনা ক্যাম্পে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলার পর পাল্টা সেনা অভিযানে বহু বেসামরিক মানুষ হতাহত হওয়ার পাশাপাশি প্রায় সাড়ে চার লাখ রোহিঙ্গা বাস্তুচ্যুত হয়; পালিয়ে আশ্রয় নেয় বাংলাদেশে।

জাপানের পররাষ্ট্র উপমন্ত্রী রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলার নিন্দা জ্ঞাপন করেছেন জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই প্রেক্ষাপটে সৃষ্ট মানবাধিকার লঙ্ঘন, বেসামরিক মানুষকে হত্যার অভিযোগ ও চার লাখ মানুষের উদ্বাস্তু হওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে জাপান।

একইসঙ্গে আইনের শাসন ও মানবাধিকারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মিয়ানমার সরকার কর্তৃক নিরাপত্তা ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার প্রয়োজনীয়তার ওপরও জোর দেন ইআও হরি।

রাখাইনের সব সম্প্রদায়ের মানুষের প্রতি মানবিক আচরণ করার তাগিদ দিয়ে দেশটির প্রচলিত আইন ও নিয়মের অধীনে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের তাগিদ দেন তিনি।

এছাড়া ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য জাপান ১০ লাখ ডলার সহায়তা দেবে বলেও বার্তা দেন জাপানের পররাষ্ট্র উপমন্ত্রী।

পরে সফরের দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিন রাখাইনের রাজধানী শিডডয়ে সফর করে রাজ্যের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি।

রোহিঙ্গাদের ওপর দমন-পীড়নে বিশ্বব্যাপী সমালোচনা হলেও এর আগে মিয়ানমারকে সমর্থন জানিয়েছিল চীন। গত সপ্তাহে নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে বৈঠকে রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে মিয়ানমার সরকারকে সমর্থনের কথা জানান দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই।

সোমবার চীনের ৬৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকায় দূতাবাসে এক অনুষ্ঠানে চীনা রাষ্ট্রদূত মা মিং চিয়াং বলেন, এই সঙ্কটের অবসানে পদক্ষেপ নিতে ইচ্ছুক তার দেশ।

আর একইদিনে জাপানের পক্ষ থেকে এ বিবৃতি এল।

এর আগে গত ২৯ অগাস্ট পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে মিয়ানমার সৈন্যদের উপর হামলার নিন্দা জ্ঞাপন করেছিল জাপান। সেই সময় কফি আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে জোর দেয় দেশটি।