‘বিদেশিদের আগ্রাসনের’ বিরুদ্ধে লড়বে জার্মানির এএফডি

জার্মানির পার্লামেন্টে প্রথমবারের মত আসন পাওয়ার পরই চরম ডানপন্থি দল অলটারনেটিভ ফর ডয়েচল্যান্ড (এএফডি) ‘জার্মানিতে বিদেশিদের আগ্রাসনের’ বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অঙ্গীকার করেছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Sept 2017, 03:56 PM
Updated : 25 Sept 2017, 04:41 PM

এবার জার্মানির নির্বাচনে তৃতীয় ‍বৃহত্তম দল হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে মুসলিম ও শরণার্থীদের চরম বিরোধী দল  এএফডি।

মাত্র চার বছর আগে প্রতিষ্ঠিত নব্য নাৎসি সমর্থকদের এই দলটির ডেপুটি চেয়ারম্যান আলেক্সান্ডার গাউল্যান্ড বলেছেন, “আমরা একটি ভিন্ন নীতি চাই।”

যদিও এরই মধ্যে দলের দিক নির্দেশনা নিয়ে এএফডি নেতাদের মধ্যে মতবিরোধের খবর এসেছে। বিবিসি জানায়, সোমবার সকালের সংবাদ সম্মেলনে এএফডি’র চেয়ারপার্সন ফ্রাউকে পেট্রি বুন্ডেসটাগে এএফডি ব্লকে থাকতে চান না বলে ঘোষণা দিলে বিস্ময়কর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

এ ওয়াক আউটের মধ্য দিয়ে পেট্রি বৃহত্তর পরিসরে বিভক্তি উস্কে দিতে চাইছেন বলে মনে করা হচ্ছে। হলোকাস্ট মেমোরিয়ালের নিন্দা করা এক আঞ্চলিক এএফডি নেতাকে সরানোর অভ্যন্তরীণ লড়াইয়ে এরই মধ্যে হেরেছেন পেট্রি। এখন ভোটারদের কাছে এএফডি’র প্রকৃত প্রতিনিধিত্বশীল নেতা কে সে প্রশ্ন ছুড়ে দেয়ার মানসে তার এ নাটকীয় পদক্ষেপ বলে মনে করছেন অনেকে।

এএফডি এবার শরণার্থী বিরোধিতাকে পুঁজি করে নির্বাচনে ভালো ফল করেছে। প্রায় সব রাজ্য বিধানসভায় আসন নেওয়াসহ এএফডি জার্মান সংসদেও আসন পেয়েছে৷  জার্মানির ৫৯৮ আসনের পার্লামেন্ট বুন্ডেসটাগে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই প্রথম কোনও নাৎসি সমর্থক দল আসন নিচ্ছে।

নেতা গাউল্যান্ড নির্বাচনী ফলের দিনই সকালে তার বক্তব্যে স্পষ্ট বলে দিয়েছেন, তার দল আপোসহীনভাবে শরণার্থী ইস্যুতে কথা বলবে। যেভাবে দল শরণার্থী সংকটের একেবারে শুরু থেকে প্রচার চালিয়ে এসেছে।

সোমবারের সংবাদ সম্মেলনে গাউল্যান্ড বলেছেন, “দশ লাখ মানুষ- বিদেশি- তাদের এদেশে আনা হয়েছে; যারা এ দেশের একটি ‍অংশ নিয়ে নিচ্ছে। আমরা এএফডি এটি চাই না।”

“আমি বলতে চাই, ভিন্ন সংস্কৃতি থেকে আসা বিদেশিদের করাল গ্রাসে আমরা জার্মানিকে হারিয়ে ফেলতে চাই না। বিষয়টি খুবই সহজ।”

জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল এবারের নির্বাচনে টানা চতুর্থবারের মত বিজয়ী হলেও পার্লামেন্টে কট্টর ডানপন্থী দল এএফডি প্রতিনিধিত্ব ভাবিয়ে তুলেছে দেশটির রাজনীতিবিদসহ অন্যান্য মহলকেও।

শরণার্থীদের নিয়ে এএফডি’র নেতারা অনেক সময়ই নানা আপত্তিকর মন্তব্য করে এসেছেন। তাদের নানা কথা নাৎসিদেরই স্মরণ করিয়ে দেয়।

‘অবৈধভাবে জার্মানিতে প্রবেশকারী শরণার্থীদের দিকে গুলি ছোড়া উচিত জার্মানির বর্ডার পুলিশের’, বলেছিলেন ফ্রাউকে পেট্রি।

দলটির আরেক নেতা বিট্রিক্স ফন স্টর্চ বলেছিলেন,‘‘যারা সীমান্তে আমাদের থামার নির্দেশ মানে না, তারা আক্রমণকারী৷ আর সেসব আক্রমণকারীকে প্রতিহত করতে হবে৷"

অভিভাবকহীন অপ্রাপ্তবয়স্ক শরণার্থীর পেছনে রাষ্ট্র কতটা খরচ বহন করবে সে প্রশ্নও তুলেছিলেন দলটির আরেক নেতা।

নির্বাচনে সেই কট্টর দলটিরই উত্থান দেখে এরই মধ্যে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে জার্মানিতে। বার্লিনে দলটির সদর দপ্তরের সামনে বিক্ষুব্ধদের হাতে প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল- ‘শরণার্থীদের স্বাগতম’। ডানবিরোধী বিক্ষোভ হয়েছে ফ্রাঙ্কফুর্ট ও কোলনেও।