অনিবার্যভাবেই রকেটের লক্ষ্যস্থল হবে যুক্তরাষ্ট্র: উত্তর কোরিয়া

যুক্তরাষ্ট্রের ‘মন্দ প্রেসিডেন্ট’ ডোনাল্ড ট্রাম্প পিয়ংইয়ংয়ের নেতাকে ‘রকেট মানব’ বলার পর অনির্বার্যভাবেই যুক্তরাষ্ট্রের মূলভূখণ্ড তাদের রকেটের লক্ষ্যস্থলে পরিণত হবে বলে জানিয়েছে উত্তর কোরিয়া।

>>রয়টার্স
Published : 24 Sept 2017, 05:47 AM
Updated : 24 Sept 2017, 05:47 AM

শনিবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে একথা বলেন উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রি ইয়ং হো।

এতে উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচী নিয়ে পক্ষ দুটির মধ্যে চলমান উত্তপ্ত বাদানুবাদ আরো বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সাধারণ পরিষদে রি-র ভাষণের কয়েক ঘন্টা আগে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনীর বি-১বি ল্যান্সার বোমারু বিমান ও যুদ্ধবিমান উত্তর কোরিয়ার পূর্ব উপকূলের আন্তর্জাতিক আকাশসীমা দিয়ে উড়ে যায়।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের হাতে যে অনেক সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ আছে, তা দেখানোর জন্যই এই শক্তি প্রদর্শন বলে জানিয়েছে পেন্টাগন।

এক সপ্তাহ ধরে ওয়াশিংটন ও পিয়ংইয়ংয়ের মধ্যে বাড়তে থাকা উত্তেজনাকে কেন্দ্র করেই রি তার বক্তব্য পেশ করেন। ওই সপ্তাহজুড়ে ট্রাম্প ও উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং উন পরস্পরকে অপমান করে কথাবার্তা বলেন। শুক্রবার ট্রাম্প কিমকে ‘পাগল’ বলেন, পরদিন শনিবার কিম ট্রাম্পকে ‘যুক্তরাষ্ট্রের বিকারগ্রস্ত বৃদ্ধ’ বলে অভিহিত করেন।

রিয়ের ভাষণেও এই কাঁদা ছোড়াছুড়ি অব্যাহত থাকে। ভাষণে রি ট্রাম্পকে ‘ক্ষমতাগর্বের আত্মপ্রাসাদে ভোগা বিকারগ্রস্ত ব্যক্তি’ যিনি জাতিসংঘকে ‘অপরাধীদের আশ্রয়স্থলে’ পরিণত করতে চাচ্ছেন বলে অভিযুক্ত করেন।

রি বলেন, ট্রাম্প নিজেই ‘আত্মঘাতী মিশনে’ আছেন। এর আগে কিম ‘আত্মঘাতী মিশনে’ আছেন বলে মন্তব্য করেছিলেন ট্রাম্প।

আরো বলেন, “প্রেসিডেন্ট অমঙ্গল যুক্তরাষ্ট্রের আসনে বসে আছেন।”

বিশ্ব নেতাদের বার্ষিক ওই অধিবেশেনে রি হুঁশিয়ার করে বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র আমাদের সদরদপ্তর বা আমাদের দেশের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের সামরিক হামলার ইঙ্গিত প্রদর্শন করলে পিয়ংইয়ং নিজেকে রক্ষার জন্য প্রস্তুত আছে।

“চূড়ান্তভাবে পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র হওয়া থেকে আমরা এখন মাত্র কয়েক পদক্ষেপ দূরে আছি।”

উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র উন্নয়নের পথে নিষেধাজ্ঞা কোনো প্রভাব ফেলতে পারবে না বলে দাবি করেন তিনি। উত্তর কোরিয়া ‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শক্তির ভারসাম্যের’ লক্ষ্যে পৌঁছাবেই বলে প্রত্যয় জানান রি। 

এক বিবৃতিতে জাতিসংঘ জানিয়েছে, বক্তৃতা শেষে রি জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় গুতেরেস বাড়তে থাকা উত্তেজনার বিষয়ে রিয়ের কাছে উদ্বেগ প্রকাশ করে উত্তেজনা প্রশমনের অনুরোধ জানান।

বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে নতুন নিষেধাজ্ঞা জারির কথা ঘোষণা করে ট্রাম্প জানিয়েছেন, উত্তর কোরিয়াকে বাণিজ্য করতে অর্থ ও অন্যান্য সুবিধা দিয়ে যাচ্ছে যেসব কোম্পানি সেগুলোর বিরুদ্ধে এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। 

এর আগে চলতি মাসের প্রথম দিকে উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচীর লাগাম টেনে ধরতে দেশটির বিরুদ্ধে নবমবারের মতো সর্বসম্মত নিষেধাজ্ঞা জারি করে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ।