ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা বাড়ানোর ঘোষণা ইরানের

ইরান কোনো দেশের অনুমতি ছাড়াই ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা আরও জোরদার করবে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Sept 2017, 05:29 AM
Updated : 23 Sept 2017, 05:29 AM

শুক্রবার এক সামরিক মহড়ায় দেওয়া বক্তব্যে রুহানি এই মন্তব্য করেন বলে খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।

এই ঘোষণার মাধ্যমে ইরান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চাপ উপেক্ষা করল বলে ধারণা করা হচ্ছে।

“বাধার মুখেও আমরা আমাদের সামরিক শক্তি বাড়াতে থাকবো। আমরা ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা জোরদার করবো। নিজেদের দেশকে রক্ষা করতে কারো কাছ থেকে আমাদের অনুমতি চাইতে হবে না,” রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচার করা ভাষণে এমনটাই বলেন রুহানি।

মহড়ায় যেসব অস্ত্র প্রদর্শিত হয়েছে তার মধ্যে নতুন একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছিল বলে জানিয়েছে ইরানের সংবাদমাধ্যমগুলো; বেশ কয়েকটি ওয়ারহেড পরিবহনে সক্ষম এই ক্ষেপণাস্ত্রটির পরিসীমা দুই হাজার কিলোমিটার।

রেভ্যুলেশনারি গার্ডের অ্যারোস্পেস বিভাগের প্রধান আমিরআলি হাজিজাদেহ সংবাদ মাধ্যম তাসনিমকে ক্ষেপণাস্ত্রের খুঁটিনাটি নিয়ে আরও তথ্য দিয়েছেন। 

ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে ‘খোরামশার মিসাইল’ ছোড়ার ফুটেজও দেখানো হয়েছে। যদিও এই পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ শুক্রবারই হয়েছে না তার আগে, তা জানায়নি তারা।

গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ট্রাম্প ইরানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা বাড়িয়ে তারা ইয়েমেন, সিরিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য অংশে সহিংসতা রপ্তানি করছে।

পরমাণু কর্মসূচি সীমিত করার বিনিময়ে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার শর্তে ২০১৫ সালে তেহরান ও ছয় বিশ্বশক্তির মধ্যে স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তিরও সমালোচনা করেন তিনি।

ট্রাম্প শুরু থেকেই একে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ‘বিব্রতকর ও একপাক্ষিক’ অ্যাখ্যা দিয়ে চুক্তি থেকে সরে আসার হুঁশিয়ারি দিয়ে আসছেন।

মধ্যপ্রাচ্যে ‘জঘন্য কর্মকাণ্ড’ এবং ফেব্রুয়ারিতে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার কারণ দেখিয়ে জুলাইতে ইরানের ওপর নতুন অর্থনৈতিক অবরোধও আরোপ করেছিলেন তিনি।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন সম্প্রতি বলেছেন, ইরানের সঙ্গে স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তিতে পরিবর্তন না আনলে যুক্তরাষ্ট্র তাতে থাকবে না।

ইরান অবশ্য চুক্তি নিয়ে যে কোনো নতুন আলোচনার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েল ছাড়া বিশ্বের সব দেশ ইরানের পরমাণু চুক্তির প্রতি সমর্থন জানিয়েছে বলেও টেলিভিশনে প্রচারিত ভাষণে মন্তব্য করেন রুহানি।

রয়টার্স বলছে, বিশ্ব যখন উত্তর কোরিয়ার একের পর এক পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার কবলে তখন ইরান পরমাণু চুক্তি নিয়ে ওয়াশিংটনের অবস্থান যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশগুলোকেও দুশ্চিন্তার মধ্যে ফেলেছে।

বৃহস্পতিবার রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সার্গেই ল্যাভরভ বলেছেন, ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের অবরোধ আরোপ হবে ‘অবৈধ’ এবং তা সম্মিলিত আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টাকে খাটো করবে।

চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঝাং ঝি বলেছেন, কোরীয় উপদ্বীপে চলমান উত্তেজনা ইরানের চুক্তির গুরুত্ব তুলে ধরেছে, চীন এ চুক্তিকে সমর্থন দিয়ে যাবে।