বৃহস্পতিবার রাতে নিজ বাড়িতে ৯৪ বছর বয়সী এই নারী মারা যান বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে তার পরিবার।
বিবিসি জানায়, ২০১৭ সালের এক হিসাব অনুযায়ী, লিলিয়ান ছিলেন বিশ্বের সবচেয়ে সম্পদশালী নারী, যার মোট সম্পদের পরিমাণ ছিল আনুমানিক ৪ হাজার কোটি ডলার।
পাঁচ বছর আগে ল' রিয়েলের পরিচালনা পর্ষদ ছেড়ে দেন বেতেঙ্কুর; এরপর তাকে কমই জনসমক্ষে দেখা গেছে। যদিও তার স্মৃতিভ্রংশ রোগের চিকিৎসা এবং তাকে তার সহযোগীদের স্বীয় স্বার্থে ব্যবহার করার এক মামলার কারণে নিয়মিতই খবরের শিরোনামে ছিলেন এই নারী।
তার মৃত্যুর পর দেওয়া এক বিবৃতিতে ল' রিয়েলের বর্তমান চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বলেছেন, প্রতিষ্ঠানের সফলতার পেছনে তার অবদান অপরিসীম।
“অসাধারণ সুন্দরী এ নারী আমাদের ছেড়ে চলে গেলেও আমরা কখনও তাকে ভুলব না,” বিবৃতিতে বলেন সিইও।
১৯০৯ সালে লিলিয়ানের বাবা ইউগেন শুয়েলার প্রথম একটি হেয়ার ডাই কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। পরে লিলিয়ানের হাত ধরে এটি পরিণত হয় লো’হিয়েল গ্রুপে, যা এই মুহূর্তে বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রসাধন কোম্পানি।
২০০৭ সালে লিলিয়ানের মেয়ে ফ্রাঁসোয়া বেতেঙ্কুর-মেইয়ার্স অভিযোগ করেন, অসুস্থতার সুযোগ নিয়ে ঘনিষ্ঠ সহযোগীরা তার মা’কে স্বীয় স্বার্থে ব্যবহার করছে।
২০০৮ সালে লিলিয়ানের বন্ধু হিসেবে পরিচিত আলোকচিত্রী ফ্রাঁসোয়া-মাহি-বেনিয়ের ‘উপহার হিসেবে পাওয়া’ কয়েক কোটি ডলারের সম্পদের অস্তিত্ব পাওয়া যায়, যার মধ্যে ছিল পিকাসোর একটি চিত্রকর্ম এবং ইতালির সিসিলিতে ৬৭০ একর ভূমি।
বেনিয়েকে ‘পালক’ নিচ্ছেন লিলিয়ান এমনটি জানতে পেরে ওই মামলা করেন তখন পরিবার বিচ্ছিন্ন থাকা ফ্রাঁসোয়া বেতেঙ্কুর।
২০১০ সালে মা-মেয়ের সম্পর্ক ভালো হওয়ার পরের বছর এক ফরাসি বিচারক ফ্রাঁসোয়াকে লিলিয়ানের অভিভাবক ঘোষণা করেন।
২০১৫ সালে লিলিয়ানকে ঠকানোর অভিযোগে বেনিয়েসহ ৮ জন দোষী সাব্যস্ত হন।
বর্তমানে লিলিয়ানের সব সম্পদ ট্রাস্টের মাধ্যমে পরিচালিত হয়, যার নিয়ন্ত্রণ ফ্রাঁসোয়া মাইয়ার্সের হাতে।
দুই নাতির একজন পরে লো’হিয়েল পরিচালনা পর্ষদের ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন; তিনিই লিলিয়ানের ব্যক্তিগত সবকিছু দেখাশোনা করতেন।