অস্ট্রেলিয়ায় পাগড়ির কারণে বৈষম্যের শিকার শিখ শিশু

পাগড়ি পরার কারণে পাঁচ বছর বয়সী এক শিখ ছাত্রের ভর্তিতে আপত্তি জানানোয় স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বৈষম্যের অভিযোগ এনেছে অস্ট্রেলিয়ার একটি ট্রাইব্যুনাল।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Sept 2017, 08:47 AM
Updated : 20 Sept 2017, 08:47 AM

ছাত্রদের মাথা কাপড় দিয়ে ঢাকার ক্ষেত্রে খ্রিস্টরীতির বাইরে অন্য কিছুতে মেলবোর্নের মেল্টন ক্রিশ্চিয়ান স্কুলের নিষেধাজ্ঞা ছিল বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

ওই কারণ দেখিয়ে গত বছরের শেষ দিকে পাগড়ি পরিহিত সিধাককে ভর্তি না করার সিদ্ধান্ত জানায় স্কুল কর্তৃপক্ষ।

একে ‘পরোক্ষ বৈষম্য’অভিহিত করে স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন সিধাকের বাবা সাগরদীপ সিং অরোরা।

মঙ্গলবার অরোরার পক্ষে রায় দেয় ভিক্টোরিয়ান সিভিল অ্যান্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেটেভ ট্রাইব্যুনাল।

চুল না কেটে পাগড়ি দিয়ে তা ঢেকে রাখা শিখ বিশ্বাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ, সেজন্যই সিধাক ছোট পাগড়ি ‘পাটকা’ পরত বলে তার বাবা অরোরা জানান।

স্কুল কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে বিস্মিত হওয়ার কথাও জানান তিনি। 

“অস্ট্রেলিয়ার মত উন্নত দেশে এই ধরনের ঘটনা খুবই দুঃখজনক। এখানে পুলিশে, সেনাবাহিনীতে শিখরা পাগড়ি পরতে পারছে, তাহলে আমার ছেলে স্কুলে যেতে পারবে না কেন?”

কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের কারণে সিধাক বাড়ির কাছের স্কুলে ভর্তি না হয়ে অসুবিধায় পড়েছে বলে ভিক্টোরিয়ান সিভিল অ্যান্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেটেভ ট্রাইব্যুনালের রায়ে বলা হয়েছে। 

মেলবোর্নের আইন অনুযায়ী, স্কুল কর্তৃপক্ষ স্থানীয়দের সঙ্গে আলোচনা করে স্কুল শিক্ষার্থীদের পোশাক নির্ধারণ করতে পারবে। এবং এক্ষেত্রে ‘বৈষম্য আইন’ প্রযোজ্য হবে না।

মেল্টন ক্রিশ্চিয়ান স্কুল কর্তৃপক্ষও সিধাককে ভর্তি না করার সিদ্ধান্তের পেছনে রাজ্যে প্রচলিত আইনের যুক্তি দিলেও ট্রাইব্যুনাল তা খারিজ করে দেয়।

ট্রাইব্যুনালের ভাষ্য, ২০১৪ সালের পরিবর্তিত ‘ইউনিফর্ম নীতি’ অনুযায়ী মেল্টন স্কুলের এই সিদ্ধান্ত সংশ্লিষ্ট সম্প্রদায়ের ভাবনার প্রতিফলন নয়।

স্কুল কর্তৃপক্ষ সিধাককে যে জটিলতার মধ্যে ফেলেছে তা পোশাক নীতি ঠিক রাখার চেয়েও অনেক বড়, মন্তব্য ট্রাইব্যুনালের।

ক্রিশ্চিয়ান স্কুল হলেও মেল্টনে ভর্তির ক্ষেত্রে উদারনীতি অনুসরণ করা হয়; স্কুল সংশ্লিষ্টদের অর্ধেকেরও বেশি অন্য ধর্মে ও রীতিতে বিশ্বাসী।

ট্রাইব্যুনাল ‘পাটকা’সহই সিধাককে ভর্তি করতে স্কুল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে। এ সিদ্ধান্তে খুশির কথা জানান সাগরদীপ।

“অস্ট্রেলিয়ার শিখ সম্প্রদায়ের জন্য এটি একটি চমৎকার সিদ্ধান্ত,” বলেন তিনি।

ছেলের ভর্তি নিয়ে খুব শিগগির স্ত্রীসহ স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বসবেন বলেও জানান অরোরা।  আগামী বছর থেকেই সিধাক স্কুলটিতে পাঠ নেওয়া শুরু করতে পারবে বলেও আশাবাদী তিনি।