চাইলে উত্তর কোরিয়াকে ‘ধ্বংস’ করে দিতে পারি: ট্রাম্প

পারমাণবিক অস্ত্রের হুমকি দেওয়া বন্ধ না করলে বাধ্য হয়ে উত্তর কোরিয়াকে ‘পুরোপুরি ধ্বংস’ করে দিতে যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তুত বলে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ভাষণে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

>>রয়টার্স
Published : 19 Sept 2017, 04:46 PM
Updated : 19 Sept 2017, 05:56 PM

মঙ্গলবারের এ ভাষণে ট্রাম্প উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উনকেও ব্যঙ্গ করে আত্মঘাতী মিশনে নামা ‘রকেট মানব’ আখ্যা দেন।

উত্তর কোরিয়া জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে একের পর এক পারমাণবিক বোমা এবং ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়ে আসছে।

ট্রাম্প বলেন,  “এ থেকে সরে না আসলে উত্তর কোরিয়াকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দেওয়া ছাড়া আমাদের আর কোনও উপায় থাকবে না। রকেট মানব নিজেকে ও তার রাজ্যকে শেষ করার আত্মঘাতী মিশনে নেমেছেন।”

তিনি আরও বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের কিংবা তার মিত্রদেশগুলোর প্রতিরক্ষায় বাধ্য হলে উত্তর কোরিয়াকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করা ছাড়া উপায় থাকবে না।”

উত্তর কোরিয়া ‘উস্কানিমূলক কর্মকান্ড’ বন্ধ না করা পর্যন্ত কিম সরকারকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলতে একযোগে কাজ করে যাওয়ার জন্য জাতিসংঘের সদস্যদেশগুলোকে আহ্বানও জানান ট্রাম্প।

ট্রাম্পের এ ভাষণের পর উত্তর কোরিয়ার পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনও প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।

ট্রাম্পের ভাষণের সময় উত্তর কোরিয়ার একজন জুনিয়র কূটনীতিক সেখানে উপস্থিত ছিলেন বলে জানায় রয়টার্স।

৪১ মিনিটের ওই ভাষণে ট্রাম্প ইরানের পরমাণু প্রকল্প ও আঞ্চলিক প্রভাব বিস্তারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার, ভেনেজুয়েলার গণতন্ত্রের পতন এবং ইসলামপন্থি জঙ্গিদের হুমকি নিয়ে কথা বলেন।

তিনি কিউবা সরকারের সমালোচনাও করেন। তবে ভাষণে উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে সবচেয়ে কড়া ভাষা ব্যবহার করেছেন ট্রাম্প।

তিনি বলেন, “পরমাণু অস্ত্র ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে উত্তর কোরিয়ার উন্মাদনা পুরো বিশ্বের জন্য হুমকি এবং মানবজাতির জন্য অকল্পনীয় ক্ষতি।”

উত্তর কোরিয়ার সবচেয়ে বড় বাণিজ্য অংশীদার চীনকে খোঁচা দিয়েই হয়ত ট্রাম্প আরও বলেন, “প্রচণ্ড রাগ লাগে যখন দেখি কয়েকটি দেশ শুধু এ ধরনের একটি সম্রাজ্যের সঙ্গে বাণিজ্যই করে না বরং তাদের অস্ত্র, রসদ, অর্থনৈতিক সমর্থন দেয়।”

পরমাণু অস্ত্র প্রকল্প নিয়ে উত্তর কোরিয়ার ওপর চাপ বাড়াতে জাতিসংঘের সদস্যভূক্ত দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান ট্রাম্প।

২০১৫ সালে বিশ্বের ছয় শক্তিধর দেশের সঙ্গে ইরানের পরমাণু চুক্তির বিষয়ে ট্রাম্প বলেন, এটি একটি ‘অস্বস্তিকর চুক্তি’।

অক্টোবরের মাঝামাঝিতে চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর এটি নবায়ন না করার ইঙ্গিতও দিয়েছেন ট্রাম্প।

ইরানকে ‘অর্থনৈতিকভাবে দুর্নীতিবাজ দেশ’ বলে বর্ণনা করে তিনি বলেন, তারা সন্ত্রাস রপ্তানি করে।

আট মাস আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়া ট্রাম্প আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘের অন্যান্য সদস্যভূক্ত দেশের উপর নিজেদের ইচ্ছা চাপিয়ে দিতে চায় না এবং অন্যান্য দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।

“আমি আমেরিকাকে সব কিছুর উপরে রাখব। কিন্তু অন্যান্য দেশের প্রতি আমাদের দায়িত্ব পূরণ করতে গিয়ে আমরা এও বুঝতে পেরেছি যে, সবাই নিজেদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করতে চায়। যেখানে সব দেশ নিজেদের সার্বভৌমত্ব রক্ষা, সমৃদ্ধি এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে।”

ভেনেজুয়েলা সম্পর্কে তিনি বলেন, ভেনেজুয়েলায় গণতন্ত্রের পতন ‘কোনো ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না’।

“আমরা শুধু দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখব না। বরং যুক্তরাষ্ট্র পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে চিন্তা ভাবনা করছে।”