জাতিসংঘ অধিবেশনে যাচ্ছেন না সু চি

রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সমালোচনার মধ্যে থাকা মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি চলতি মাসে অনুষ্ঠেয় জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিচ্ছেন না। 

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Sept 2017, 06:21 AM
Updated : 13 Sept 2017, 06:22 AM

মিয়ানমার সরকারের মুখপাত্র জ তাইয়ের বরাত দিয়ে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, “আমাদের স্টেট কাউন্সিলর গতবছর জাতিসংঘ অধিবেশনে বক্তৃতা করেছিলেন। এবার তিনি যাচ্ছেন না।”

সুচির না যাওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তার আরেক মুখপাত্র অং শিন রয়টার্সকে বলেছেন, ‘সম্ভবত’ মিয়ানমারের নেত্রীর হাতে আরও জরুরি কাজ রয়েছে। সমালোচনার মুখোমুখি হতে বা পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে তিনি কখনও ‘ভয় পান না’।  

আগামী ১৯ থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সদরদপ্তরে বার্ষিক এই সাধারণ অধিবেশন বসছে।

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের ওপর চাপ দেওয়ার জন্য এই সঙ্কটের কথা জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে তুলবেন বলে ইতোমধ্যে জানিয়ে রেখেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মিয়ানমারে জাতিগত নিপীড়নের শিকার হয়ে দশকের পর দশক ধরে চার লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে রয়েছে।

এর মধ্যেই গত ২৪ অগাস্ট রাতে রাখাইনে পুলিশ পোস্ট ও সেনা ক্যাম্পে হামলার ঘটনার পর দমন-পীড়নের মুখে বাংলাদেশ সীমান্তে নতুন করে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ঢল চলছে।  

জাতিসংঘ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এরই মধ্যে তিন লাখ ৭০ হাজারের বেশি রাহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছে এবং এই সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে।

সেনাবাহিনী কীভাবে গ্রামে ঢুকে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে মানুষ মারছে, ঘরের ভেতরে আটকে রেখে কীভাবে পুড়িয়ে মারা হচ্ছে, লুটপাট চালিয়ে কীভাবে গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে, সেই বিবরণ পাওয়া যাচ্ছে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের কথায়।

মিয়ানমার তাদের সেনাবাহিনীর এই অভিযানকে বর্ণনা করেছে ‘সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে লড়াই’ হিসেবে। রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যমে বিভিন্ন গ্রামে হামলা ও হত্যার জন্য রোহিঙ্গাদেরই দায়ী করা হচ্ছে।

কিন্তু রোহিঙ্গাদের নাগরিকের মর্যাদা না দেওয়ায় এবং তাদের ওপর নির্যাতন বন্ধের পদক্ষেপ না নেওয়ায় মিয়ানমারের নেত্রী সু চি বিশ্বব্যাপী সমালোচনায় পড়েছেন। শান্তির জন্য পাওয়া তার নোবেল পুরস্কার কেড়ে নেওয়ারও দাবি তুলেছেন কেউ কেউ।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার রাখাইনের ঘটনাপ্রবাহকে চিহ্নিত করেছেন জাতিগত নির্মূল অভিযানের একটি ‘ধ্রুপদী উদাহরণ’ হিসেবে। যুক্তরাষ্ট্র মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর প্রতি সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে এবং সুইডেন ও যুক্তরাজ্য এ নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক ডাকার আহ্বান জানিয়েছে।