বিবিসি জানায়, শনিবার সন্ধ্যায় কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে অনুষ্ঠিত ওই কনসার্ট দেখতে যায় কয়েকশ’ তরুণ-তরুণী।
কাবুলে এ ধরনের সংগীতানুষ্ঠান খুব একটা দেখা যায় না।
যদিও মূল অনুষ্ঠানটি আফগানিস্তানের স্বাধীনতা দিবসে কাবুলের গাজি স্টেডিয়ামে হওয়ার কথা ছিল; তিন হাজারের বেশি টিকিটও বিক্রি হয়ে গিয়েছিল।
কিন্তু রক্ষণশীলদের হামলার হুমকির পর কর্তৃপক্ষ অনুষ্ঠান স্থলের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিতে পারবে না বলে জানিয়ে দেয়। হামলার হুমকি এবং কর্তৃপক্ষের পিছিয়ে যাওয়ার পরও মনোবল হারাননি আফগান ‘পপ তারকা’ আরিয়ানা।
তিনি ভিন্ন ভেন্যুতে অনুষ্ঠান আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেন। ভক্তরা তার এ সিদ্ধান্তে দারুণ খুশী হয়।
কনসার্টে অংশ নেওয়া বাহার সোহাইলি বলেন, “হুমকি সত্ত্বেও, আমি ভাবতেই পারিনি এত মেয়ে কনসার্ট দেখতে আসবে। সৌভাগ্যক্রমে, কনসার্টে পুরুষদের তুলনায় নারীদের সংখ্যাই বেশি ছিল।”
“আমি কয়েকজন মেয়েকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম: ‘কেন আপনারা এখানে এসেছেন’ উত্তরে তারা আমাকে বলেন, তারা এই কনসার্ট বিরোধীদের মোকাবেলা করতে এখানে এসেছে।”
আফগানিস্তানের প্রধান দুই ভাষা দারি ও পাশতু উভয়েই গান করেন আরিয়ানা।
নিজের পোশাক ও গানের কারণে বেশ কয়েকবার মৃত্যুর হুমকি পেয়েছেন এই গায়িকা।
কনসার্টের আগের দিন বিবিসি’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আফগানিস্তানে এমন কিছু মানুষ আছে যারা সংগীত বিরোধী, উদযাপন বিরোধী এমনকি তারা নতুন বছর, ঈদ এবং সব আনন্দ অনুষ্ঠানের বিরোধী।”
“আমার আজ মনে হচ্ছে, এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য আমাদের একজোট হওয়া প্রয়োজন।”
“দিন শেষে আমরা মানুষও বটে এবং একজন মানুষের মৌলিক চাহিদার তালিকায় সংগীত, উদযাপন, স্বাধীনতা দিবস, নতুন বছর এগুলো আছে।”
কনসার্ট থেকে পাওয়া অর্থ মির্জা ওলং গ্রামে জঙ্গি হামলায় নিহতদের পরিবারকে দান করার ঘোষণা দিয়েছেন আরিয়ানা।
দুই সপ্তাহ আগে আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলের প্রদেশ সার-ই পুলের মির্জা ওলাং গ্রামে জঙ্গি হামলায় অন্তত ৬২ জন নিহত হয়।
সেখানে একটি গণকবরে ২৮টি এবং আরেকটিতে আটটি মৃতদেহ পাওয়া গেছে বলে জানান প্রাদেশিক সরকারের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ আমানি।
গত কয়েকমাসে কাবুলে কয়েকটি আত্মঘাতী হামলা হয়।