ট্রাম্পের ‘ইনার সার্কল’: একজন বাদে সবাই এখন সাবেক

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার পর যেসব ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের নিয়ে নিজের ‘ইনার সার্কল’ গড়ে তুলেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প, সাত মাসের মধ্যে তাদের একজন বাদে বাকীরা সাবেক হয়ে গেছেন। 

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 August 2017, 09:10 AM
Updated : 19 August 2017, 09:45 PM

সর্বশেষ শুক্রবার হোয়াইট হাউজের চিফ স্ট্র্যাটেজিস্ট পদ থেকে স্টিভ ব্যাননকে বরখাস্তের পর শুরুর সময়কার ‘ইনার সার্কলের’ একজন, ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সই এখন শুধু ট্রাম্পের সঙ্গে আছেন; তবে তিনিও তেমন স্বস্তিতে নেই। 

ব্যাননের আগে দায়িত্ব ছাড়তে হয় রাইনস প্রিবাস, মাইকেল ফ্লিন, শন স্পাইসারের মতো এক সময়ের ‘ট্রাম্পঘনিষ্ঠ’ হিসেবে পরিচিতদের।

হোয়াইট হাউজের অন্দরমহলে চলা চাপান-উতোরে প্রথম ‘ইনার সার্কলের’ সদস্যদের বর্তমান অবস্থা বিবিসির প্রতিবেদনের বরাতে তুলে ধরা হল:

১. ডোনাল্ড ট্রাম্প, প্রেসিডেন্ট

২০ জানুয়ারি দায়িত্ব নেওয়ার সাত মাস পেরিয়ে গেছে।

নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ নিয়ে চলমান তদন্ত প্রেসিডেন্সিতে ছায়া ফেলেছে; ওবামাকেয়ার বাতিল কিংবা ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার মতো প্রতিশ্রুত নীতি বাস্তবায়নে হয়েছেন ব্যর্থ।

শার্লটসভিলে সংঘর্ষে শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদীদের কড়া সমালোচনা না করায় ডেমোক্রেট ও রিপাবলিকানদের একের পর এক বাক্যবাণে বিদ্ধ হয়েছেন।

এরকম অনেক বিষয়ে তীব্র চাপে থাকার পরও এখনও স্বপদে বহাল আছেন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

২. রাইনস প্রিবাস, (সাবেক) চিফ অব স্টাফ

নতুন প্রশাসনের বয়স যখন মাত্র ছয়মাস, তখনই জুলাইয়ের শেষদিকে কয়েক সপ্তাহের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির পর পদ ছাড়তে হয় প্রিবাসকে।

এর কয়েকদিন আগে তখনকার (এখন সাবেক) কমিউনিকেশন ডিরেক্টর অ্যান্থনি স্কারামুচি হোয়াইট হাউজের অভ্যন্তরীণ বিষয় ফাঁসের অভিযোগে প্রিবাসকে ‘মস্তিষ্কবিকৃত’ অ্যাখ্যা দেন।

অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল জন কেলি পরে রিপাবলিকান ন্যাশনাল কংগ্রেসের সাবেক প্রধান প্রিবাসের স্থলাভিষিক্ত হন।

৩. মাইক পেন্স, ভাইস প্রেসিডেন্ট

ট্রাম্প ছাড়া তার ইনার সার্কলের আর যে ব্যক্তি সাত মাস পরও দায়িত্বে বহাল আছেন তিনি মাইক পেন্স, যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট।

যদিও স্বস্তিতে আছেন এমনটা বলা যাবে না।

২০২০ সালের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থিতার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে চলতি মাসের শুরুতে নিউ ইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন নাকচে তাকে জোর করা হয়েছে এমন খবর মার্কিন গণমাধ্যমে ভেসে বেড়াচ্ছে।

৪. স্টিভ ব্যানন, (সাবেক) চিফ স্ট্র্যাটেজিস্ট

চিফ অব স্টাফ জেনারেল কেলি হোয়াইট হাউজের চিফ স্ট্র্যাটেজিস্ট পদ বিষয়ে ‍পুনর্বিবেচনা করছেন এমন গুঞ্জনের মধ্যেই পদ হারানোর তালিকায় সর্বশেষ যুক্ত হন স্টিভ ব্যানন।

কট্টর ডানপন্থি এবং ব্রেইটবার্ট নিউজের সাবেক প্রধান ব্যানন ট্রাম্পকে ২০১৬ সালের নির্বাচনী বৈতরণী পারে সাহায্য করেছিলেন। সাম্প্রতিক সময়ে হোয়াইট হাউজের মধ্যপন্থিদের সঙ্গে তার বিবাদ চলছিল বলে ধারণা বিশ্লেষকদের।

হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি সারাহ হাকেবি স্যান্ডার্স এক বিবৃতিতে ব্যাননকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত ‘সব পক্ষের সম্মতিতে’ হয়েছে জানালেও এর আগেই এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প নিজেই চিফ স্ট্র্যাটেজিস্ট পদে পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন।

৫. শন স্পাইসার, (সাবেক) প্রেস সেক্রেটারি

কমিউনিকেশন ডিরেক্টর অ্যান্থনি স্কারামুচি যোগ দেওয়ার পর শুরু হওয়া অস্থিরতায় জুলাইয়ের শেষে হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারির পদ ছাড়েন শন স্পাইসার, যিনি গণমাধ্যমের সঙ্গে শীতল আচরণের জন্য পরিচিত ছিলেন।

পরে ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে স্পাইসার বলেন, ‘অধিক সন্ন্যাসীতে গাজন নষ্ট’ হওয়ার ঝুঁকিতেই পদ ছেড়ে দেন তিনি।

স্কারামুচি নিজেও অবশ্য বেশি দিন পদে থাকতে পারেননি, ১০ দিনেরও কম সময়ের মধ্যে তাকে হোয়াইট হাউজ ছাড়তে হয়।

৬. মাইকেল ফ্লিন, (সাবেক) জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা

ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারের সময় রাশিয়ার সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগে দায়িত্ব নেওয়ার মাত্র ২৩ দিনের মাথায় জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার পদ ছাড়তে হয় ফ্লিনকে।

যুক্তরাষ্ট্রে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত সের্গেই কিসলিয়াকের সঙ্গে যোগাযোগ বিষয়ে হোয়াইট হাউজের শীর্ষ কর্মকর্তা এমনকি ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সকে ভুল তথ্য দিয়েছিলেন, এমনটা উন্মোচিত হওয়ার পর ফ্লিনের চলে যাওয়া সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়।

মাইকেল ফ্লিন পদত্যাগ করলেও তাকে ট্রাম্পই সরে যেতে বলেছিলেন।