সংঘাতপূর্ণ আফগানিস্তানে মাঠ পর্যায়ে কর্মরত কমান্ডারদের অনুরোধ বিবেচনায় নিয়ে সেখানে নেটো নেতৃত্বাধীন জোটের অংশ হিসাবে পরবর্তী ধাপে প্রায় ৪ হাজার মার্কিন সেনা বাড়িয়ে আঞ্চলিক একটি কৌশল চূড়ান্ত করা নিয়ে কাজ করছে ট্রাম্প প্রশাসন।
এমন একটি সময়েই আফগান তালেবান গোষ্ঠী ট্রাম্পকে এ চিঠি দিল।
ট্রাম্প বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলতে পছন্দ করলেও যুক্তরাষ্ট্রের আফগান নীতির ব্যাপারে তিনি বরাবরই নিশ্চুপ থেকেছেন। তার সামরিক উপদেষ্টারা দীর্ঘদিনের আফগান যুদ্ধ অচলাবস্থায় পৌঁছেছে জানিয়ে সেখানে সেনা বাড়ানোর অনুরোধ করেছেন।
কিন্তু ট্রাম্প অতীতে মার্কিন সেনা হতাহতের ঘটনা কমিয়ে আনতে আফগানিস্তান থেকে সেনা কমানোর ইচ্ছারই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। কিন্তু এরপর থেকে তিনি চুপ রয়েছেন। গত সপ্তাহে ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি খুব শিগগিরই একটি কৌশল নির্ধারণের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন।
তবে ট্রাম্পের কয়েকজন শীর্ষ সহযোগী আফগানিস্তানে সেনা বাড়ানোর নতুন কৌশলের সমালোচনা করছেন। আর এখন ট্রাম্পকেও সেনা সরানোর আহ্বান জানিয়ে চিঠি দিল তালেবান।
তালেবানের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে প্রকাশ করা ইংরেজি ভাষার এ চিঠিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে আফগানিস্তান যুদ্ধের কৌশল নিয়ে ফের ভেবে দেখার আহ্বান জানানো হয়েছে।
চিঠিতে শান্তি ফিরিয়ে আনতে দেশটির ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ রাজনীতিবিদদের সঙ্গে আলোচনা না করে সরাসরি জনগণের সঙ্গে আলোচনার কথাও বলেছে জঙ্গি দলটি।
চিঠিতে বলা হয়েছে, “অতীত অভিজ্ঞতার আলোকে দেখা গেছে আফগানিস্তানে সেনা বাড়িয়ে আমেরিকার সামরিক ও অর্থনৈতিক শক্তির ধ্বংস ডেকে আনা ছাড়া আর কোনও লাভ হয়নি।”
“আমরা দেখেছি যে, আপনি আপনার পূর্বসূরিদের ভুলগুলো বুঝতে পেরেছেন এবং আপনার নতুন আফগান কৌশল আরেকবার ভেবে দেখার বিষয়টিও মনস্থির করেছেন।”
চিঠিতে যুদ্ধবাজ জেনারেল এবং কংগ্রেস সদস্যদের কথায় কান না দিতে ট্রাম্পকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়েছে, “আমেরিকার তরুণরা নিশ্চয়ই চোর ও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের ক্ষমতায় প্রতিষ্ঠিত করতে আফগানিস্তানের মরুভূমি বা পাহাড়ে মারা যাওয়ার জন্য জন্ম নেয়নি। নতুবা তাদের বাবা-মায়েরা নিশ্চয়ই আফগানিস্তানের সাধারণ মানুষকে হত্যার অনুমতি তাদের দেবে না।”
২০০১ সালে আফগানিস্তানে সেনা অভিযান শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র। ভিয়েতনামের পর এটিই কোনও দেশে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদী সেনা অভিযান।